নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই : প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় ০৬:৪১:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ মে ২০২৩
- / ৮১ বার পড়া হয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে দেশ আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবে, আমরা তাদের কাছ থেকে কিছুই কিনব না। আমরা কারও ওপর নির্ভরশীল না। তাই আমাদের নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। সোমবার (১৫ মে) বিকেল ৪টায় গণভবনে ত্রিদেশীয় (জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য) সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্যাংশন দেওয়ার একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যাদের দিয়ে আমরা সন্ত্রাস দমন করি তাদের ওপর স্যাংশন দেওয়া হচ্ছে। তবে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমাদের ভয়ের কিছু নেই। আমরা আমাদের সব জমি আবাদ করব, আমরা অন্যের ওপর নির্ভর করব না। কারও কাছে হাত পেতে চলব না। কারও থেকে ভিক্ষা আনব না। নিজের উৎপাদন করে আমরা নিজেরাই চলব। আমাদের খাবারের অভাব হবে না।
তিনি বলেন, কথা নাই বার্তা নাই আমাদের নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখাবে। আর আমরা ভয় নিয়ে বসে থাকব, কেন? আমাদের দেশের মানুষই নিজের দেশের বিরুদ্ধে বদনাম করে।রিজার্ভ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, সাধারণত কোনো দেশের তিন মাসের বৈদেশিক মুদ্রার দায় মেটানোর মতো মজুত থাকতে হয়। আমাদের এরচেয়ে আরও বেশি রিজার্ভ আছে।
তিনি বলেন, আমরা রিজার্ভ নিয়ে বলতে বলতে সবার মাথায় এটা ঢুকে গেছে। আমাদের রিজার্ভ এখনো যা আছে তাতে অন্তত এটুকু বলতে পারি, আমাদের কোনো সংকট নাই। তবে আমরা সবসময় রিজার্ভ ধরে রাখারই চেষ্টা করি। ডলার সঙ্কট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এটা শুধু বাংলাদেশে না, ডলার সঙ্কট এখন পুরো বিশ্বব্যাপী। প্রথম গেল করোনা অতিমারী, এরপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, আর সেই যুদ্ধের সাথে স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন। যার ফলে সারা বিশ্বে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। পরিবহন পরিচালন ব্যয় বেড়ে গেছে। যে কারণে ডলার সংকট এখন সমগ্র বিশ্বেই রয়ে গেছে। এ ছাড়া আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিচ্ছি। আমাদের বিনিয়োগ বাড়ছে, উৎপাদন বাড়ছে। কাজেই ডলারের ওপর চাপ তো বাড়বেই।
ঘূর্ণিঝড় মোখা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত থেকে জানমাল রক্ষার জন্য সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল। আমি নিজে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছি, বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছি। এসময় রসিকতা করে সরকারপ্রধান বলেন, যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের সর্বাত্মক প্রস্তুতি থাকে। এবার আমরা এমনই প্রস্তুতি নিলাম যে ঘূর্ণিঝড় চলেই গেল, আঘাত হানতেই সাহস পেল না। তবে আবার আসবে। একটা নিয়ম আছে, একটার পর পরই আরেকটা আসে, সেজন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
এসময় ঘূর্ণিঝড় মোখায় দেশের যেসব এলাকায় বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, দ্রুতই সেগুলো মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, যারা করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে পরীক্ষা দিতে পারেনি বা নির্বাচনী পরীক্ষায় আসতে পারেনি, তাদের ক্ষেত্রবিশেষে শিথিল করা হয়েছে। এটা হয়েও গেছে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আগামী নির্বাচনে আমাদের ইশতেহার হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ।
বাংলাদেশকে আমরা স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলব। দেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না, দেশের সব মানুষ উন্নত জীবন পাবে। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ সদস্য, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য, গত ২৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরে যান। সফর শেষে গত ৯ মে তিনি দেশে ফেরেন।