আইফোন ১৭-এর দাম শুরু হয়েছে প্রায় আটশ ডলার থেকে, যেখানে আইফোন ১৭ প্রো মডেলের দাম এক হাজার একশ ডলার এবং প্রো ম্যাক্স মডেলের দাম এক হাজার দুইশো ডলার।
আইফোন এয়ার, আইফোন ১৭সহ আরও যা যা আনল অ্যাপল

- আপডেট সময় ১১:২৫:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৩০ বার পড়া হয়েছে
সেপ্টেম্বর শুরুর এক সপ্তাহ পরেই নিয়ম মতো নতুন আইফোন নিয়ে হাজির হয় অ্যাপল। সেই ধারাবাহিকতায় উন্মোচিত হয়েছে অ্যাপলের আইফোন ১৭ সিরিজ। নিজেদের জনপ্রিয় পণ্যের চারটি নতুন মডেল উন্মোচন করেছে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টটি।
কিন্তু, অ্যাপলের বর্ণনার বাইরে কোন বিষয়গুলো জানার আছে এইসব গ্যাজেট নিয়ে?
‘এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে আইফোন এয়ারের সূচনা, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে পাতলা আইফোন। আগের বছরের মতো এবারও নতুন বিভিন্ন ফোনে আরও উন্নত ক্যামেরা, বেশি সময় ধরে চলা ব্যাটারি ও বিভিন্ন দিক থেকে বেশ কিছু আপগ্রেড এনেছে অ্যাপল।
মঙ্গলবার উন্মোচিত নতুন এসব ডিভাইসে রয়েছে একেবারে নতুন ‘এ ১৯’ নামের চিপ, যা বিশেষভাবে অ্যাপলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইকেন্দ্রিক বিভিন্ন ফিচার চালাতে সাহায্য করবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তনের পর এটাই ছিল অ্যাপলের প্রথম আইফোন উন্মোচন। বর্তমানে ব্যবসায়িক পণ্য ও প্রতিদিনের ভোক্তা সামগ্রীর ওপর একের পর এক শুল্ক আরোপ করে চলেছেন ট্রাম্প।
কিছু বিশ্লেষক ধারণা করেছিলেন, এ কারণে নিজেদের আইফোনের দাম বাড়াতে পারে কুপারটিনোভিত্তিক কোম্পানিটি। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাপল যে দামে নতুন আইফোন বিক্রি করেছে এবারও সেই একই দামে নতুন বিভিন্ন মডেল এনেছে তারা। এর কয়েক সপ্তাহ আগে উন্মোচিত গুগলের নতুন পিক্সেল স্মার্টফোনের দামও অপরিবর্তিত রেখেছে মার্কিন সার্চ জায়ান্টটি।
আইফোন ১৭ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় জেনে নেওয়া যাক যেগুলো বাজারে আসছে ১৯ সেপ্টেম্বর, সঙ্গে রইল আরও কিছু নতুন গ্যাজেটের আপডেট–

আইফোন ১৭ সিরিজের দাম
আইফোন ১৭-এর দাম শুরু হয়েছে প্রায় আটশ ডলার থেকে, যেখানে আইফোন ১৭ প্রো মডেলের দাম এক হাজার একশ ডলার এবং প্রো ম্যাক্স মডেলের দাম এক হাজার দুইশো ডলার। নতুন আইফোন এয়ারের দাম শুরু হচ্ছে এক হাজার ডলার থেকে।
কেবল প্রো মডেলটি ছাড়া আইফোনের এ দামের বেশিরভাগই গত পাঁচ বছরে অ্যাপলের নতুন বিভিন্ন ফোনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রো মডেলটির দাম এবার একশ ডলার বেশি। তবে এ দামও আটশ থেকে এক হাজার দুইশো ডলারের মধ্যেই রয়েছে, যা ২০২০ সাল থেকে নিজেদের বিভিন্ন মডেলের জন্য নির্ধারণ করে রেখেছে অ্যাপল।
অ্যাপলের নতুন আইফোন সিরিজ এমন এক সময়ে এল যখন শিল্পখাতের বিভিন্ন কোম্পানি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা কঠোর শুল্কের কারণে বাড়তি খরচের মুখে পড়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন বারবার বলেছে, বিদেশে থাকা অ্যাপলের বর্তমান বিভিন্ন কারখানার পরিবর্তে আইফোন যেন যুক্তরাষ্ট্রেই তৈরি হয়।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, এ দাবি একেবারেই বাস্তবসম্মত নয়। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে কয়েক বছর লাগবে এবং এতে করে আইফোনের বর্তমান গড় দাম দ্বিগুণ বা তিন গুণ পর্যন্ত হতে পারে।
ক্যামেরায় পরিবর্তন ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি
আইফোন ১৭ সিরিজের সামনে ও পেছনের ক্যামেরার গুণগত মান উন্নত করার পাশাপাশি সামনের ক্যামেরাটি আপগ্রেড করেছে অ্যাপল। এখন ফোনের ক্যামেরার ফ্রেম আরও বড় এবং এতে নতুন সেন্সর যোগ করায় ব্যবহারকারী ফোন ঘোরানোর প্রয়োজন ছাড়াই ল্যান্ডস্কেপ মোডে ছবি ও বিভিন্ন ধরনের সেলফি তুলতে পারবেন।
আইফোনের নতুন এয়ার মডেলের আইফোন ব্যবহারকারীদের সামনে ও পিছনের ক্যামেরা একসঙ্গে ব্যবহার করে ভিডিও রেকর্ড করার সুবিধাও দিচ্ছে। একইসঙ্গে আইফোন ১৭ প্রো ও প্রো ম্যাক্স মডেলে আরও শক্তিশালী টেলিফটো লেন্সসহ অন্যান্য আপডেট এনেছে কোম্পানিটি।
আইফোন ১৭ সিরিজের ব্যাটারি লাইফও বেশি হওয়ার কথা জানিয়েছে অ্যাপল, বিশেষ করে নতুন আইফোন এয়ার হবে কোম্পানিটির এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তি সাশ্রয়ী আইফোন।

এআই সম্পর্কে যা জানা গেল
গত বছর উন্মোচিত অ্যাপলের বিভিন্ন আইফোন ছিল প্রথম মডেল, যা নতুন ধরনের নানা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ফিচার নিয়ে ডিজাইন করেছিল কোম্পানিটি। মঙ্গলবার ঘোষিত আইফোন ১৭ সিরিজে আগের মডেলের মতো বড় পরিবর্তন না হলেও প্রতিটি ফোনে থাকবে অ্যাপলের সর্বশেষ অপারেটিং সিস্টেম আইওএস ২৬।
জুনে অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির ডেভেলপার সম্মেলনে আইওএস ২৬-এর কথা বলেছিল অ্যাপল, যেটি আগামী সপ্তাহে বাজারে আসবে। এতে থাকবে এমন বিভিন্ন ফিচার, যা ব্যবহারকারীকে স্ক্রিনশট নেওয়ার পরে স্ক্রিনে কি আছে তার বিস্তারিত বিশ্লেষণ দেখাবে এবং আরও উন্নত লাইভ অনুবাদ সুবিধা দেবে।
আইফোন ১৭ সিরিজের জন্য বিশেষভাবে তৈরি কিছু এআইনির্ভর ফিচারের দিকেও ইঙ্গিত দিয়েছে অ্যাপল। যেমন সামনে থাকা ক্যামেরার জন্য নতুন ‘সেন্টার স্টেজ’ ফিচার, যা ভিডিও কলে ব্যবহারকারীর অবস্থান কেন্দ্রে রাখতে সাহায্য করবে।
তবে প্রকৃতপক্ষে এআই ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে অ্যাপল এবং সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ভুলও করেছে তারা। আইফোন ১৬ মডেলটি জনপ্রিয় হলেও বিশ্লেষকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী খুব ভালো বিক্রি হয়নি।
কারণ অ্যাপল যে সব এআইচালিত উন্নতি ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেগুলো পুরোপুরি দিতে পারেনি তারা। যার মধ্যে ছিল আরও স্মার্ট ও বহুমুখী ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট সিরি আনার বিষয়টি। সিরির সেই উন্নত ফিচার আনার বিষয়টি আগামী বছর পর্যন্ত পিছিয়ে দিয়েছে অ্যাপল।
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম