প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ
আতিথেয়তায় মুগ্ধ মার্টিনেজ
- আপডেট সময় ০৯:৪১:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুলাই ২০২৩
- / ২৯৬ বার পড়া হয়েছে
মাত্র ১১ ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সফরে বাংলাদেশে এসে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে গেলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। সোমবার ভোরে ঢাকায় পৌঁছে কিছু সময় হোটেলে বিশ্রাম নেওয়ার পর শুরু হয় তার কর্মব্যস্ততা। সকাল ৯টার দিকে মার্টিনেজকে প্রগতি সরণির ফান্ডেড নেক্সট অফিসে নেওয়া হয়। এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগেই ঢাকায় এসেছেন এই বিশ্বখ্যাত ফুটবলার। সেখানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক
ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। মার্টিনেজের সঙ্গে সাক্ষাতের পর মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে উপহার সামগ্রী প্রদানের কথা জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, মার্টিনেজকে বাজপাখি উপহার দিয়েছে স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ফান্ডেড নেক্সট। এই উপহার পেয়ে তিনি খুব খুশি হয়েছেন। এছাড়া পাটের তৈরি নৌকা ও বঙ্গবন্ধুর বই উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে মার্টিনেজকে। এই পর্ব সেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন আর্জেন্টিনার বিশ্বখ্যাত গোলরক্ষক। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ে এই তারকা ফুটবলারের বিশেষ অবদানের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনি আপনার দেশের জন্য গৌরব বয়ে এনেছেন। আগামীতেও আপনার সাফল্য কামনা করছি। বাংলাদেশের ফুটবল জনপ্রিয়তার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ফুটবল গোটা বিশ্বের জনপ্রিয় একটি খেলা। বাংলাদেশের মানুষ ফুটবলপ্রেমী। ফুটবলসহ খেলাধুলার সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাবা ও দাদা ফুটবল খেলেছেন। ফুটবল তাদের কাছে খুবই প্রিয় ছিল।
ফুটবলসহ অন্যান্য খেলাধুলার প্রসারে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণসহ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। এ সময় মার্টিনেজ বলেন, ফুটবলের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার বিষয়টা আমার জানা। বাংলাদেশে প্রচুর আর্জেন্টিনাভক্ত রয়েছে, বিষয়টা নিয়ে আমি আনন্দিত।
বাংলাদেশে আসতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। সাক্ষাৎকালে মার্টিনেজ প্রধানমন্ত্রীকে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের একটি জার্সি উপহার দেন। প্রধানমন্ত্রীও তাকে একটি নৌকার প্রতিকৃতি উপহার দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সংগঠক শতাদ্রু দত্ত, মার্টিনেজের আইনজীবী ও ব্যক্তিগত ম্যানেজার স্যান্ডিয়াগো লিওতা।
এবার আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মার্টিনেজ। যার স্বীকৃতি হিসেবে লাভ করেন মর্যাদার গোল্ডেন গ্লাভস। উল্লেখ্য, কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে এবং কোয়ার্টার ফাইনালে হল্যান্ডের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে দলকে জিতিয়েছিলেন কৃতী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
এদিকে সাক্ষাৎ পরবর্তী মাশরাফি তার ফেসবুকে লিখেছেন, এমিকে ভালো লাগার শুরু কোপা আমেরিকা থেকেই, যেখানে সে টাইব্রেকারে দুটি গোল আটকে দিয়ে দলকে জয় এনে দিয়েছিল। এতে লিওনেল মেসি পায় দেশের হয়ে প্রথম বড় ট্রফির স্বাদ। স্বাভাবিকভাবেই পাখির চোখে তাকিয়ে ছিলাম কাতার বিশ্বকাপের দিকে। কিন্তু সৌদি আরবের বিরুদ্ধে হারে মনে হয়েছিল, আরেকটি বিশ্বকাপও হয়তো শেষ হবে হতাশায়। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ানো এবং পরে বিশ্বকাপ জয় দেখতে পারা ছিল অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণের মতো। সেই জয়ের অন্যতম নায়ক এমির সঙ্গে দেখা হলো এই ঢাকায়। খুব অল্প সময়ের জন্য দেখা, কিন্তু দারুণ এক অনুভূতি। বিশ্বকাপ জয়ী দলের গোলকিপার চোখের সামনে। সে তো জানে না, আমার এবং আমার মতো আরও কোটি মানুষের কত বছরের অপেক্ষা শেষ হলো, যেদিন তার ওই হাত ধরেই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয় করল। আজ আসলে বেশি ভালো লাগছে আমার সন্তানদের জন্য। যখন বললাম, ‘এমি আসছে, তোমাদের কি দেখা করার ইচ্ছা আছে?’ ওরা লাফাচ্ছিল। সবশেষ দুটি দিন ওরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারছিল না এমিকে দেখবে বলে। আজকে এমির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বললাম, ‘বাচ্চারা তোমার অটোগ্রাফ নিতে চায়।’ সে এত আন্তরিকতা দেখাল, এক কথায় অসাধারণ। এমনকি সে ছবিও তুললো ওদের সঙ্গে। এখন তারা মহাখুশি, আর ওদের খুশিতে আমিও এখন দারুণ আনন্দিত। মাশরাফি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একটি জার্সি। ঢাকা পর্ব শেষে বিকেলে তিনি কলকাতা চলে যান।