১০:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫
একটি কোম্পানির ৪৮ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করতে চাপ দিচ্ছিল বোর্ড, তাতে রাজি ছিলেন না ব্যবস্থাপনা পরিচাল মোশারফ হোসেন।

সুদ মওকুফ নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে টানাপড়েনের জেরে: কমার্স ব্যাংকের পদত্যাগী এমডি

নিঝুম আহমেদ - জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ১২:৫৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন

 

সুদ মওকুফ নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে টানাপড়েনের জেরে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ ছাড়লেন মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন।

চাকরির মেয়াদ আরো দুই বছর বাকি থাকতেই বুধবার ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগের কপি বাংলাদেশ ব্যাংকেও পাঠিয়েছেন।

মোশারফ হোসেন বৃহস্পতিবার বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম ব্যাংকটিকে কীভাবে দাঁড় করানো যায়। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে হচ্ছিল না। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমার মনে হয়েছে আমার ছেড়ে দেওয়া উচিত।”

কী কারণে এই সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ব্যাংকে অনেক ঘটনা ঘটেছে। অনেক বিষয় ঠিক মত হচ্ছিল না। একজন ম্যানেজিং ডাইরেক্টরের কাজ করার জন্য যে পরিবেশ দরকার, তা ছিল না। নানা রকম প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছিল।”

মোশারফ হোসেন বলেন, তিনি যে ‘নিজের মত’ কাজ করতে পারছেন না, সে কথা বোর্ডকেও জানিয়েছিলেন।

“এটা একটা ভঙ্গুর প্রতিষ্ঠান। ধীরে ধীরে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়। বোর্ড থেকে চাপ ছিল যে রাতারাতি এগিয়ে নেওয়া লাগবে। আমি জানিয়েছি যে এটা রাতারাতি সম্ভব নয়, ঠিক করার জন্য সময় দেওয়া লাগবে। সঠিকভাবে কাজ করতে হবে। তবে এখানে স্বাভাবিক কাজই করা যাচ্ছিল না।”

ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, একটি কোম্পানির ৪৮ কোটি টাকার সুদ মওকুফের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বোর্ডের সঙ্গে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ‘ঝামেলা’ তৈরি হয়েছিল।

“সেই সুদ মওকুফ করতে বোর্ড বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনাপত্তি চেয়েছে। সে বিষয়ে এমডিকে বোর্ড থেকে চাপ দেওয়া হয়, কিন্তু তিনি রাজি হননি। মূলত সুদ মওকুফসহ আরো অনেক বিষয় নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। এমডি হিসাবে তিনি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছিলেন না।”

২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই ব্যাংকিং খাতে পরিবর্তন আসতে থাকে। সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের পর চেয়ারম্যান ঠিক করে দিয়ে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেওয়া হয়।

নতুন পর্ষদ দেওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ ছিল এস আলম গ্রুপের হাতে। নতুন পর্ষদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আতাউর রহমান।

চলতি বছর জানুয়ারিতে আড়াই বছরের জন্য এমডির দায়িত্ব দেওয়া হয় ৬৩ বছর বয়সী মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনকে। ৬৫ বছর হওয়া পর্যন্ত তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করতে পারতেন। তবে ছয় মাসের মাথায় তাকে চলে যেতে হল।

 

 

নিঝুম আহমেদ – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

একটি কোম্পানির ৪৮ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করতে চাপ দিচ্ছিল বোর্ড, তাতে রাজি ছিলেন না ব্যবস্থাপনা পরিচাল মোশারফ হোসেন।

সুদ মওকুফ নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে টানাপড়েনের জেরে: কমার্স ব্যাংকের পদত্যাগী এমডি

আপডেট সময় ১২:৫৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

 

সুদ মওকুফ নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে টানাপড়েনের জেরে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ ছাড়লেন মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন।

চাকরির মেয়াদ আরো দুই বছর বাকি থাকতেই বুধবার ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগের কপি বাংলাদেশ ব্যাংকেও পাঠিয়েছেন।

মোশারফ হোসেন বৃহস্পতিবার বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম ব্যাংকটিকে কীভাবে দাঁড় করানো যায়। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে হচ্ছিল না। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমার মনে হয়েছে আমার ছেড়ে দেওয়া উচিত।”

কী কারণে এই সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ব্যাংকে অনেক ঘটনা ঘটেছে। অনেক বিষয় ঠিক মত হচ্ছিল না। একজন ম্যানেজিং ডাইরেক্টরের কাজ করার জন্য যে পরিবেশ দরকার, তা ছিল না। নানা রকম প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছিল।”

মোশারফ হোসেন বলেন, তিনি যে ‘নিজের মত’ কাজ করতে পারছেন না, সে কথা বোর্ডকেও জানিয়েছিলেন।

“এটা একটা ভঙ্গুর প্রতিষ্ঠান। ধীরে ধীরে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়। বোর্ড থেকে চাপ ছিল যে রাতারাতি এগিয়ে নেওয়া লাগবে। আমি জানিয়েছি যে এটা রাতারাতি সম্ভব নয়, ঠিক করার জন্য সময় দেওয়া লাগবে। সঠিকভাবে কাজ করতে হবে। তবে এখানে স্বাভাবিক কাজই করা যাচ্ছিল না।”

ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, একটি কোম্পানির ৪৮ কোটি টাকার সুদ মওকুফের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বোর্ডের সঙ্গে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ‘ঝামেলা’ তৈরি হয়েছিল।

“সেই সুদ মওকুফ করতে বোর্ড বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনাপত্তি চেয়েছে। সে বিষয়ে এমডিকে বোর্ড থেকে চাপ দেওয়া হয়, কিন্তু তিনি রাজি হননি। মূলত সুদ মওকুফসহ আরো অনেক বিষয় নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। এমডি হিসাবে তিনি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছিলেন না।”

২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই ব্যাংকিং খাতে পরিবর্তন আসতে থাকে। সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের পর চেয়ারম্যান ঠিক করে দিয়ে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেওয়া হয়।

নতুন পর্ষদ দেওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ ছিল এস আলম গ্রুপের হাতে। নতুন পর্ষদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আতাউর রহমান।

চলতি বছর জানুয়ারিতে আড়াই বছরের জন্য এমডির দায়িত্ব দেওয়া হয় ৬৩ বছর বয়সী মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনকে। ৬৫ বছর হওয়া পর্যন্ত তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করতে পারতেন। তবে ছয় মাসের মাথায় তাকে চলে যেতে হল।

 

 

নিঝুম আহমেদ – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম