জরিপে অংশ নেওয়া কেবল এক চতুর্থাংশ মানুষ টেসলার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন, যেখানে কোম্পানিটির গাড়ি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা প্রকাশ করেছেন এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ।
আমেরিকায় ‘সবচেয়ে কম ভরসার’ বৈদ্যুতিক গাড়ি টেসলা

- আপডেট সময় ০৯:৫৫:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
- / ৩৪ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে টেসলা গাড়ি বিক্রি কমে যাওয়ার কারণ হচ্ছে কোম্পানিটির ব্র্যান্ড খ্যাতির পতন। ছবি: রয়টার্স
লেকট্রিক গাড়ির ব্র্যান্ড হিসেবে টেসলার ওপর এখন সবচেয়ে কম ভরসা করে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ– এমনই উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক জরিপে।
আগে ইভি নির্মাতা হিসেবে জনপ্রিয়তা পেলেও মাস্কের সময় টেসলা সবচেয়ে বড় পতনের মুখ দেখল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
‘ইলেকট্রিক ভেহিকল ইন্টেলিজেন্স’-এর জরিপে উঠে এসেছে, মানুষ তাদের ওপর আগের মতো বিশ্বাস করছে না। এখন যুক্তরাষ্ট্রে অন্যান্য ইলেকট্রিক গাড়ি কোম্পানির তুলনায় টেসলাকে আমেরিকার সবচেয়ে কম বিশ্বস্ত ইলেকট্রিক গাড়ি কোম্পানি মনে করেন তারা।
এ জরিপে অংশ নেওয়া লোকজনের প্রায় অর্ধেক বলেছেন, টেসলার ওপর ভরসা করেন না তারা। আর এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ বলেছেন, টেসলা নিয়ে তাদের নেতিবাচক ধারণা রয়েছে।
কয়েকটি বড় দুর্ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বড় ইলেকট্রিক গাড়ি কোম্পানির চেয়ে টেসলার বিভিন্ন গাড়িকে ‘সবচেয়ে কম নিরাপদ’ হিসেবে ধরা হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ নামের বিতর্কিত এক বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন মাস্ক, যেখানে ফেডারেল কর্মী ও খরচ কমিয়ে আনার কাজটি করেছেন তিনি, যা টেসলার ব্র্যান্ড খ্যাতির ওপর প্রভাব ফেলছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
মে মাসে টেসলা প্রধান মাস্ক ওই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকে তার সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। তবে মাস্ক এখনও ইউরোপের কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিবিদদের সমর্থন করে যাচ্ছেন এবং নতুন এক রাজনৈতিক দল গড়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে থাকতে চান বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
‘ইলেকট্রিক ভেহিকল ইন্টেলিজেন্স’-এর রিপোর্ট বলছে, “মনে করা হচ্ছিল, মাস্ক রাজনীতি থেকে বিদায় নিলে ট্রাম্প সরকারের সময় টেসলার সুনামে যে ক্ষতি হয়েছে তা ধীরে ধীরে কেটে যাবে।
“তবে মাস্কের নতুন দল ‘আমেরিকা পার্টি’ ঘোষণার পর টেসলার প্রতি মানুষের ভালো ধারণা এখনও ফেরেনি।”
জরিপে অংশ নেওয়া কেবল এক চতুর্থাংশ মানুষ টেসলার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন, যেখানে কোম্পানিটির গাড়ি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা প্রকাশ করেছেন এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ।
মে মাসে ‘অ্যাক্সিওস হ্যারিস’ নামের এক আলাদা জরিপে উঠে এসেছে, ২০২২ সালে আমেরিকার বড়দের মধ্যে টেসলার ব্র্যান্ড সুনাম ‘খুব ভালো’ থাকলেও ২০২৫ সালে তা ‘খারাপ’ হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে টেসলা গাড়ি বিক্রি কমে যাওয়ার কারণ হচ্ছে কোম্পানিটির ব্র্যান্ড খ্যাতির পতন। টেসলার সর্বশেষ আয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে টেসলার গাড়ির বিক্রি কমেছে ১৪ শতাংশ।
ইন্ডিপেনডেন্ট লিখেছে, টেসলার ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ পতন এটি। এ কারণে নিজেদের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী চীনা কোম্পানি বিওয়াইডি’র থেকেও পিছিয়েছে কোম্পানিটি।
কিছু বাজার বিশ্লেষক বলেছেন, টেসলার বিক্রি এবারও ভালো হবে না। ‘চেকপয়েন্ট রিচার্স’-এর পূর্বাভাস বলছে, ২০২৫ সালে টেসলার বিক্রি আগের বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ কমে যেতে পারে।
গোটা বিশ্বে যেখানে ইলেকট্রিক গাড়ির চাহিদা ও বিক্রি বেড়েই চলেছে, সেখানে টেসলার বিক্রি কমে যাচ্ছে, যা খুবই বিপরীত এক অবস্থা বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
‘ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি’র তথ্য অনুসারে, ইঞ্জিনে জ্বালানি না পোড়ানো এমন গাড়ির চাহিদা এখন রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে।
প্রযুক্তি ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম