১২:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫
মেয়র থাকাকালে তিনি ‘মসজিদ বন্ধ, আজান ও বোরকা নিষিদ্ধ’ করেন বলে মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।

ইতালিতে এমপিকে ‘হত্যার হুমকি’, বাংলাদেশি বহিষ্কার

ইতালি প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৮:৫৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

মনফালকোন শহরের পৌরসভা ভবন, ছবি: স্থানীয় গণমাধ্যম।

 

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ও ইতালির মনফালকোন সিটির সাবেক মেয়র আন্না মারিয়া চিসিন্টকে ‘প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগে ইতালি থেকে এক বাংলাদেশি প্রবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

গরিজিয়া পুলিশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ফেরত পাঠানো ব্যক্তির নাম আইয়ুব খান (৩৮)। তিনি কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার বাসিন্দা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি ইতালির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ফ্রিউলি ভেনেজিয়া জুলিয়া অঞ্চলের সীমান্তবর্তী শহর মনফালকোনে, শহরের কেন্দ্রস্থলে দাঁড়িয়ে আন্না মারিয়া চিসিন্টকে ‘গলা কেটে হত্যার হুমকি’ দেন আইয়ুব খান। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে জানানো হলে তাকে আটক করা হয়।

আদালতের নির্দেশে বুধবার ভেনিসের মার্কো পোলো বিমানবন্দর থেকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।

মিলানে বাংলাদেশের কনস্যুলেট কর্মকর্তা রফিকুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “প্রত্যেক বাংলাদেশিকে ইতালির আইন ও নিয়ম মেনে চলতে হবে। অপরাধ থেকে দূরে থেকে সুনামের সঙ্গে বসবাস করাই প্রবাসীদের দায়িত্ব।”

ইতালিতে ‘কট্টর ডানপন্থি’ রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত আন্না মারিয়া চিসিন্ট। লিগা পার্টির এ রাজনীতিবিদ মেয়র থাকাকালে মনফালকোনেতে ‘একাধিক মসজিদ বন্ধ, আজান নিষিদ্ধ এবং সরকারি কার্যালয়ে বোরকা পরা নিষিদ্ধ’ করেন বলে স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।

আইয়ুবের বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের পর স্থানীয় গণমাধ্যমে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “ইতালিতে একজন বিপজ্জনক চরমপন্থি কমলো। এটাই সেই ইতালি, যা আমরা চাই। আমি গরিজিয়া ও ভেনিসের পুলিশ প্রধান, গরিজিয়ার গভর্নর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সেই সব নাগরিকদের ধন্যবাদ জানাই যারা আমাকে এই সময়টায় সমর্থন ও সাহস যুগিয়েছেন।”

তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সাংসদ ডেবোরা সেরাচ্চিয়ানি। তিনি বলেন, “আমি চাই অপরাধের তদন্ত চলবে এবং প্রমাণিত হলে শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু তাকে বিমানে সহজে উঠে চলে যেতে হবে কেন। ইতালিতে যে অপরাধ করে, ইতালিতেই তার বিচার হতে হবে এবং এখানেই শাস্তি ভোগ করতে হবে। এই বহিষ্কার প্রক্রিয়া নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য সামনে এসেছে, এগুলো আমাদের সন্দিহান করে তুলছে।”

ঘটনা নিয়ে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির বেশিরভাগই মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী জানান, “আইয়ুব খান দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি প্রায়ই মদ্যপান করে রাস্তায় হট্টগোল করতেন এবং মানুষকে অকারণে গালাগালি দিতেন।”

মনফালকোনে সিটি কাউন্সিলর প্রবাসী বাংলাদেশি সানি ভূইয়া বলেন, “আমরা চাই ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের পরিস্থিতি আর তৈরি না হয়। এজন্য সবার উচিত স্থানীয় আইন-কানুন মেনে চলা।”

 

 

ইতালি প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

মেয়র থাকাকালে তিনি ‘মসজিদ বন্ধ, আজান ও বোরকা নিষিদ্ধ’ করেন বলে মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।

ইতালিতে এমপিকে ‘হত্যার হুমকি’, বাংলাদেশি বহিষ্কার

আপডেট সময় ০৮:৫৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

 

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ও ইতালির মনফালকোন সিটির সাবেক মেয়র আন্না মারিয়া চিসিন্টকে ‘প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগে ইতালি থেকে এক বাংলাদেশি প্রবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

গরিজিয়া পুলিশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ফেরত পাঠানো ব্যক্তির নাম আইয়ুব খান (৩৮)। তিনি কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার বাসিন্দা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি ইতালির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ফ্রিউলি ভেনেজিয়া জুলিয়া অঞ্চলের সীমান্তবর্তী শহর মনফালকোনে, শহরের কেন্দ্রস্থলে দাঁড়িয়ে আন্না মারিয়া চিসিন্টকে ‘গলা কেটে হত্যার হুমকি’ দেন আইয়ুব খান। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে জানানো হলে তাকে আটক করা হয়।

আদালতের নির্দেশে বুধবার ভেনিসের মার্কো পোলো বিমানবন্দর থেকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।

মিলানে বাংলাদেশের কনস্যুলেট কর্মকর্তা রফিকুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “প্রত্যেক বাংলাদেশিকে ইতালির আইন ও নিয়ম মেনে চলতে হবে। অপরাধ থেকে দূরে থেকে সুনামের সঙ্গে বসবাস করাই প্রবাসীদের দায়িত্ব।”

ইতালিতে ‘কট্টর ডানপন্থি’ রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত আন্না মারিয়া চিসিন্ট। লিগা পার্টির এ রাজনীতিবিদ মেয়র থাকাকালে মনফালকোনেতে ‘একাধিক মসজিদ বন্ধ, আজান নিষিদ্ধ এবং সরকারি কার্যালয়ে বোরকা পরা নিষিদ্ধ’ করেন বলে স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।

আইয়ুবের বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের পর স্থানীয় গণমাধ্যমে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “ইতালিতে একজন বিপজ্জনক চরমপন্থি কমলো। এটাই সেই ইতালি, যা আমরা চাই। আমি গরিজিয়া ও ভেনিসের পুলিশ প্রধান, গরিজিয়ার গভর্নর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সেই সব নাগরিকদের ধন্যবাদ জানাই যারা আমাকে এই সময়টায় সমর্থন ও সাহস যুগিয়েছেন।”

তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সাংসদ ডেবোরা সেরাচ্চিয়ানি। তিনি বলেন, “আমি চাই অপরাধের তদন্ত চলবে এবং প্রমাণিত হলে শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু তাকে বিমানে সহজে উঠে চলে যেতে হবে কেন। ইতালিতে যে অপরাধ করে, ইতালিতেই তার বিচার হতে হবে এবং এখানেই শাস্তি ভোগ করতে হবে। এই বহিষ্কার প্রক্রিয়া নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য সামনে এসেছে, এগুলো আমাদের সন্দিহান করে তুলছে।”

ঘটনা নিয়ে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির বেশিরভাগই মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী জানান, “আইয়ুব খান দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি প্রায়ই মদ্যপান করে রাস্তায় হট্টগোল করতেন এবং মানুষকে অকারণে গালাগালি দিতেন।”

মনফালকোনে সিটি কাউন্সিলর প্রবাসী বাংলাদেশি সানি ভূইয়া বলেন, “আমরা চাই ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের পরিস্থিতি আর তৈরি না হয়। এজন্য সবার উচিত স্থানীয় আইন-কানুন মেনে চলা।”

 

 

ইতালি প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম