১২:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে পুরস্কার পাচ্ছে ১৬ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান।

ইলিশের দাম বাড়তি কেন, জানালেন- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

সাবরিনা জাহান- বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৬:৪২:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
  • / ২৬ বার পড়া হয়েছে

 

সরবরাহের ‘ঘাটতি ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্মের’ কারণে ভরা মৌসুমেও ইলিশ মাছের দাম ক্রেতাদের বাইরে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

এছাড়া বৈরি আবহাওয়ার কারণে জেলেরা একসাথে সমুদ্রে মৎস্য শিকারে যেতে না পারাকেও দাম বাড়তি হওয়ার একটি কারণ বলে তুলে ধরেছেন তিনি।

সোমবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

তিনি বলেন, “সরবরাহ কম এটা প্রধান কারণ। আর চাঁদাবাজিও আছে যেটা এখনো বন্ধ করা যায়নি।”

এর আগে লিখিত বক্তব্যে ফরিদা আখতার বলেন, ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে। এ বছর জাটকা রক্ষা সপ্তাহসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে ইলিশ রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে। ১২ জুন থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৭৯০ টন ইলিশ মাছ আহরিত হয়েছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মডেল অনুযায়ী ২০২৪-২৫ সালে বাংলাদেশের ইলিশ উৎপাদন ৫ লাখ ৩৮ হাজার থেকে ৫ লাখ ৪৫ হাজার টন হতে পারে। কিন্তু এটাও সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে যে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মতো উৎপাদন হ্রাসের প্রবণতা অব্যাহত থাকলে প্রকৃত উৎপাদন আরও কম হতে পারে।

 

 

উপদেষ্টা বলেন, “ইলিশের দাম এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নেই। ঢাকায় এক কেজির কম ওজনের ইলিশ ২০০০ টাকার বেশি। এই দাম ১৫০০ টাকার মধ্যে থাকা উচিত।”

বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়লে দামও নাগালের মধ্যে আশবে বলে আশা করছেন তিনি।

তিনি জানিয়েছেন, ইলিশের দাম কমানোর জন্য ব্যবসায়ীদের পরামর্শ অনুযায়ী চাঁদাবাজি লাঘব, ডিজেলের দাম কমানোর চিন্তাভাবনা করা।

ইলিশের বাড়ি হিসেবে খ্যাত চাঁদপুরসহ যেসব জেলায় ইলিশ মাছ বেশি ধরা পড়ে, সেসব জেলায় দাম নির্ধারণের প্রস্তাবের বিষয়ে চলতি মাসের শুরুতে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

 

মৎস পদক পাচ্ছে ১৬ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান

ওই সভায় জাতীয় মৎস্য পুরস্কারের জন্য চলতি বছর ১৬ জন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করছে সরকার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বিজয়ীদের হাতে এই পদক তুলে দেবেন।

এবার দেশব্যাপী একযোগে কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে মৎস্য সপ্তাহ পালন করা হবে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি।’

উপদেষ্টা বলেন, এবারের মৎস্য সপ্তাহকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে মৎস্য পদক প্রদান, বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম, শোভাযাত্রা, আলোচনা, সেমিনার, কর্মশালা, প্রদর্শনী রাখা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতি বছরের মতো এবারও মৎস্য খাতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ৭টি ক্ষেত্রে মোট ১৬ জন মৎস্যচাষী, উদ্যোক্তা, বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি উদ্ভাবক, সম্প্রসারণ প্রতিষ্ঠান, মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারীকে জাতীয় মৎস্য পদক ২০২৫ দেওয়া হবে।

প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার হিসাবে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক দেওয়া হবে।

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “মৎস্য সপ্তাহ পালনের মধ্য দিয়ে আমরা মৎস্য খাতের অবদান তুলে ধরতে চাই। মৎস্য খাত দেশের মোট জিডিপির ২.৫৩ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপির ২২.২৬ শতাংশ।

“১২ লাখ নারীসহ প্রায় ২ কোটি অর্থাৎ মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ১২ শতাংশের অধিক মানুষের জীবন ও জীবিকা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত।”

 

 

 

সাবরিনা জাহান- বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে পুরস্কার পাচ্ছে ১৬ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান।

ইলিশের দাম বাড়তি কেন, জানালেন- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

আপডেট সময় ০৬:৪২:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

 

সরবরাহের ‘ঘাটতি ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্মের’ কারণে ভরা মৌসুমেও ইলিশ মাছের দাম ক্রেতাদের বাইরে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

এছাড়া বৈরি আবহাওয়ার কারণে জেলেরা একসাথে সমুদ্রে মৎস্য শিকারে যেতে না পারাকেও দাম বাড়তি হওয়ার একটি কারণ বলে তুলে ধরেছেন তিনি।

সোমবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

তিনি বলেন, “সরবরাহ কম এটা প্রধান কারণ। আর চাঁদাবাজিও আছে যেটা এখনো বন্ধ করা যায়নি।”

এর আগে লিখিত বক্তব্যে ফরিদা আখতার বলেন, ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে। এ বছর জাটকা রক্ষা সপ্তাহসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে ইলিশ রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে। ১২ জুন থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৭৯০ টন ইলিশ মাছ আহরিত হয়েছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মডেল অনুযায়ী ২০২৪-২৫ সালে বাংলাদেশের ইলিশ উৎপাদন ৫ লাখ ৩৮ হাজার থেকে ৫ লাখ ৪৫ হাজার টন হতে পারে। কিন্তু এটাও সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে যে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মতো উৎপাদন হ্রাসের প্রবণতা অব্যাহত থাকলে প্রকৃত উৎপাদন আরও কম হতে পারে।

 

 

উপদেষ্টা বলেন, “ইলিশের দাম এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নেই। ঢাকায় এক কেজির কম ওজনের ইলিশ ২০০০ টাকার বেশি। এই দাম ১৫০০ টাকার মধ্যে থাকা উচিত।”

বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়লে দামও নাগালের মধ্যে আশবে বলে আশা করছেন তিনি।

তিনি জানিয়েছেন, ইলিশের দাম কমানোর জন্য ব্যবসায়ীদের পরামর্শ অনুযায়ী চাঁদাবাজি লাঘব, ডিজেলের দাম কমানোর চিন্তাভাবনা করা।

ইলিশের বাড়ি হিসেবে খ্যাত চাঁদপুরসহ যেসব জেলায় ইলিশ মাছ বেশি ধরা পড়ে, সেসব জেলায় দাম নির্ধারণের প্রস্তাবের বিষয়ে চলতি মাসের শুরুতে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

 

মৎস পদক পাচ্ছে ১৬ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান

ওই সভায় জাতীয় মৎস্য পুরস্কারের জন্য চলতি বছর ১৬ জন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করছে সরকার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বিজয়ীদের হাতে এই পদক তুলে দেবেন।

এবার দেশব্যাপী একযোগে কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে মৎস্য সপ্তাহ পালন করা হবে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি।’

উপদেষ্টা বলেন, এবারের মৎস্য সপ্তাহকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে মৎস্য পদক প্রদান, বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম, শোভাযাত্রা, আলোচনা, সেমিনার, কর্মশালা, প্রদর্শনী রাখা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতি বছরের মতো এবারও মৎস্য খাতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ৭টি ক্ষেত্রে মোট ১৬ জন মৎস্যচাষী, উদ্যোক্তা, বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি উদ্ভাবক, সম্প্রসারণ প্রতিষ্ঠান, মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারীকে জাতীয় মৎস্য পদক ২০২৫ দেওয়া হবে।

প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার হিসাবে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক দেওয়া হবে।

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “মৎস্য সপ্তাহ পালনের মধ্য দিয়ে আমরা মৎস্য খাতের অবদান তুলে ধরতে চাই। মৎস্য খাত দেশের মোট জিডিপির ২.৫৩ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপির ২২.২৬ শতাংশ।

“১২ লাখ নারীসহ প্রায় ২ কোটি অর্থাৎ মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ১২ শতাংশের অধিক মানুষের জীবন ও জীবিকা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত।”

 

 

 

সাবরিনা জাহান- বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম