“আমি মনে করি ইশরাক গণঅভ্যুত্থানের অংশীজন। এ কারণে এক-দেড় মাসের ঘটনায় আমি কখনও তাকে লক্ষ্য করে কিছু বলিনি।”
ইশরাকের শপথ নেওয়ার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা আসিফ

- আপডেট সময় ১০:০৫:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
- / ১০ বার পড়া হয়েছে
মেয়াদ ‘শেষ হয়ে যাওয়ায়’ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের আর শপথ নেওয়ার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “শপথ পড়ানোর বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ ছিল না।”
ইসরাককে মেয়র হিসেবে শপথ পড়াতে এক মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করেন তার সমর্থকরা। কিন্তু তাদেরকে ‘হাই কোর্ট দেখিয়ে’ শপথ পড়ায়নি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
উপদেষ্টা বলেন, “২৬ মে শপথ পড়ানোর শেষ সময় ছিল। আমাদের ফাইলও একটা উত্থাপন করা হয়েছিল। আমরা তখন আইন মন্ত্রণালয়ে জানতে চাই যে, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আমাদের কী করা উচিত।
“আইন মন্ত্রণালয় থেকে অ্যাটর্নি জেনারেলসহ অন্যদের সঙ্গে কথা বলে আমাদের এটাই জানানো হয় যে, বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় শপথ নেওয়ার সুযোগ নেই।”
আসিফ বলেন, “গেজেটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং ১ জুন সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এ কারণে শপথ পড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।”
গত ১৪ মে থেকে নগর ভবনের সামনে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে ইশরাক সমর্থকরা। ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়নও তাতে যোগ দেয়। তাদের আন্দোলনে নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
ইশরাক সমর্থকদের সেই আন্দোলনের সমালোচনা করে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “আমরা দেখলাম, সিটি করপোরেশনকে অবরুদ্ধ করা হয়।
“ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এক কোটির বেশি মানুষ বাস করেন। তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হলে উপদেষ্টা হিসেবে সেটা আমাদের ব্যর্থতা; অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা।”
উপদেষ্টা বলেন, “ইশরাক হোসেন আইনি বিষয়টি বিবেচনা করবেন। এছাড়া বিএনপির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ভালো বোঝাপড়া। এজন্য সব পক্ষকেই দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে।
“আমি মনে করি ইশরাক হোসেন গণঅভ্যুত্থানের একজন অংশীজন। এ কারণে পুরো এক-দেড় মাসের ঘটনায় আমি কখনও তাকে টার্গেট করে কিছু বলিনি। তবে আমরা তার কাছ থেকে আরও দায়িত্বশীল আচরণ আশা করি।”
তিনি আরও বলেন, “সিটি করপোরেশনে তালা দেওয়া মানে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া। আমাদের অফিসারদের কাজ করতে না দেওয়া, মেয়রের চেয়ারে বসা— সবই ফৌজদারি অপরাধ।”
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
কিন্তু শপথ না পড়ানোয় ইশরাকের মেয়রের চেয়ারে বসা হয়নি। আন্দোলন করেও লাভ হয়নি। শেষমেশ ৩ জুন তিনি ঘোষণা, সরকার শপথ না পড়ালে নিজেই শপথ নিয়ে মেয়রের চেয়ারে বসবেন।
ইদুল আজহা সামনে রেখে সেদিন নগর ভবন ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসূচি শিথিল করার ঘোষণাও দেন ইশরাক।
কোরবানির ঈদের ছুটির পর ‘নিজেই নিজের শপথ’ না নিলেও নগর ভবনে কর্মচারীদের নিয়ে সভা করেন ইশরাক। সভার ব্যানারে তার নামের আগে লেখা ছিল ‘মাননীয় মেয়র’।