“যেকোনো সংস্কার করি, যেকোনো আইন করি- যা কিছু করি, ইভেন আন্দোলন করি, সংগ্রাম করি প্রত্যেকটাই আমাদের নিজেদের জন্য না হয়ে যেন দেশের জন্য হয়,” বলেন তিনি।
‘খুবই ঝামেলার’ মধ্যে আছি: ইআরএফ সেমিনারে বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান

- আপডেট সময় ০৪:৩৯:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
- / ৪০ বার পড়া হয়েছে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন নিয়ে সংকটে থাকার কথা জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
তার ভাষায়, “আমি আসলে আজকে খুবই ঝামেলার মধ্যে আছি। আপনারা জানেন যে, আমাদের বিশেষ করে এনবিআর সংস্কার নিয়ে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছেন, পরবর্তীতে এটা নিয়ে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের কাছ থেকে অনেকগুলো তাদের দ্বিমত এসেছে।
“এবং সেগুলোকে অ্যাড্রেস করে জুলাই মাসের মধ্যে একটা অ্যামেন্ডমেন্ট করার ঘোষণাও আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রী দিয়েছেন এবং আজকে আমাদের ৫টায় তাদের সাথে বসার কথা। হয়তোবা এই আলোচনার মাধ্যমে একটা সমাধান আমরা পাব বলে আমরা আশা করি।”
বৃহস্পতিবার ঢাকায় ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বুধবার অর্থমন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর ও কাস্টমস ক্যাডারের ‘একটি প্রতিনিধি দলকে’ আলোচনার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় ওই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে ওই বৈঠকে ‘আমন্ত্রণ না পাওয়ায়’ তাতে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবন ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনীর একটি দল। পরিষদের সভাপতি অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদার ভবনে ঢুকতে বাধা পেয়ে মূল ফটকেই অবস্থান নিয়েছেন।
মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারির পর তা বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তাদের আন্দোলনের মধ্যে সরকার পিছু হটে। বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
এরপর কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে অটল থাকেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন।
পরে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় অফিসে ফেরেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি স্বাভাবিক কাজে ফিরলেও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে।
বৃহস্পতিবারও এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিতে অবস্থান ও কলমবিরতি কর্মসূচি চলছে।
এ আন্দোলনের ফলে রাজস্ব আদায়ে ‘কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে’ মন্তব্য করে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, “আমাদের বিশেষ করে, (রেভিনিউ) কিছুটা তো হ্যাম্পার হচ্ছেই, আমাদের যে অনগোইং মুভমেন্ট যেটা হচ্ছে সেটার কারণে।
“তো আপনারা, আমরা- সবাই দেশের জন্য কাজ করব। আমাদের মূলত দেশের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করা উচিত। যেকোনো সংস্কার করি, যেকোনো আইন করি- যা কিছু করি, ইভেন আন্দোলন করি, সংগ্রাম করি প্রত্যেকটাই আমাদের নিজেদের জন্য না হয়ে যেন দেশের জন্য হয়।”
এনবিআর চেয়ারম্যানকে ‘আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী’ আমলা আখ্যা দিয়ে এবং তার বিরুদ্ধে ‘দেশ ও রাজস্ব ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত’ থাকার অভিযোগ তুলে এর মধ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ঐক্য পরিষদ।
গত সোমবার পরিষদ বলেছে, শুক্রবারের মধ্যে চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করা হলে শনিবার থেকে কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরে ‘লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন’ চলবে ঘোষণাও করা হয় পরিষদের তরফে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ আওতা বহির্ভূত থাকবে।
রাজস্ব সংস্কারে সেমিনার করতে গেলে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদকে কক্ষ বরাদ্দ না দেওয়া, আগের আন্দোলনে জড়িতদের বদলি আদেশ জারি, এনবিআর ভাগ করে দু’টি বিভাগের যে অধ্যাদেশ জারি হয়েছিল তা বাস্তবায়নে গঠিত সমন্বয় কমিটির মধ্যে পরিষদের প্রতিনিধিত্ব না রাখায় চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি জোরালো হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম