দুটি কোম্পানি স্বর্ণপদক পাওয়ার দাবি করলেও কেবল ডিপমাইন্ড-এর ফলাফলই আয়োজকদের মাধ্যমে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ প্রতিযোগিতায় আনুষ্ঠানিকভাবে অংশ নেয়নি ওপেনএআই।
গণিত প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতল ডিপমাইন্ড, ‘ওপেনএআই’

- আপডেট সময় ০৭:৪৬:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
- / ৫৬ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের সাড়ে চার ঘণ্টার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে গুগল ডিপমাইন্ডের তৈরি পরীক্ষামূলক বিভিন্ন এআই মডেল। ছবি: রয়টার্স
বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ গণিত প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে মার্কিন সার্চ জায়ান্ট গুগলের ডিপমাইন্ড ও চ্যাটজিপিটির নির্মাতা ‘ওপেনএআই’, যেটিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের জন্য বড় মাইলফলক হিসেবে দেখছেন অনেকে।
‘ইন্টারন্যাশনাল ম্যাথ অলিম্পিয়াড’ বা আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের সাড়ে চার ঘণ্টার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে গুগল ডিপমাইন্ডের তৈরি পরীক্ষামূলক বিভিন্ন এআই মডেল এবং প্রতিটি মডেল ছয়টি সমস্যার মধ্যে পাঁচটি সঠিকভাবে সমাধান করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
গুগল ডিপমাইন্ড ও ওপেনএআই উভয় কোম্পানি দাবি করেছে, তাদের নতুন তৈরি এআই মডেলগুলো যেভাবে জটিল গণিতের সমস্যা সমাধান করছে তা প্রমাণ করে যে, শক্তিশালী এআই তৈরিতে আরও কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে তারা, যা মানুষের মতো চিন্তা করতে, শিখতে ও বিভিন্ন কাজ করতে পারবে। এ ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ‘আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স’ বা এজিআই নামে পরিচিত।
দুটি কোম্পানি স্বর্ণপদক পাওয়ার দাবি করলেও কেবল ডিপমাইন্ড-এর ফলাফলই আয়োজকদের মাধ্যমে স্বীকৃতি পেয়েছে। কারণ এ প্রতিযোগিতায় আনুষ্ঠানিকভাবে অংশ নেয়নি ওপেনএআই।
আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের সভাপতি প্রফেসর গ্রেগর ডোলিনার বলেছেন, “আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, প্রত্যাশিত এ মাইলফলক স্পর্শ করেছে গুগল ডিপমাইন্ড, যেটিতে মোট ৪২ পয়েন্টের মধ্যে ৩৫ পয়েন্ট পেয়েছে কোম্পানিটি, যা স্বর্ণপদক পাওয়ার যোগ্য স্কোর।”
“এআই মডেলের এসব সমাধান অনেক দিক থেকে চমকপ্রদ ছিল। আইএমও-এর মূল্যায়নকারীরা বলেছেন, এসব সমাধান স্পষ্ট, সঠিক ও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনুসরণ করাও সহজ।”
গুগলের এআই স্টার্টআপ ডিপমাইন্ড-এর থাং লুয়ং ও এডওয়ার্ড লকহার্ট বলেছেন, তাদের এআই মডেলের যৌক্তিক ভাবনার সক্ষমতা ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ’ হবে গণিতজ্ঞ, বিজ্ঞানী ও অন্যান্য গবেষকদের জন্য। পাশাপাশি ‘এজিআই তৈরির পথে মানুষের জ্ঞানকে এগিয়ে নিতে’ সাহায্য করবে এটি।
এদিকে, অনলাইনে এ প্রতিযোগিতার ফলাফল জানিয়েছেন ওপেনএআইয়ের গবেষক অ্যালেকজান্ডার ওয়াই। তবে তার কোম্পানি আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়নি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স পোস্টে অ্যালেকজান্ডার লিখেছেন, “আমাদের বিভিন্ন এআই মডেলকে ২০২৫ সালের আইএমও প্রশ্ন দিয়ে ঠিক তেমনভাবেই পরীক্ষা করেছি আমরা যেভাবে মানুষ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। দুই দফায় সাড়ে চার ঘণ্টার পরীক্ষায় কোনো সাহায্যকারী যন্ত্র বা ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়নি, এটি কেবল অফিসিয়াল প্রশ্নগুলো পড়েছে এবং সরল ভাষায় উত্তর ও প্রমাণ লিখেছে।
“এটি একটি বড় ব্যাপার? প্রথম কারণ হচ্ছে, আইএমও-এর এসব প্রশ্ন আগের এআই পরীক্ষা বা মানদণ্ড ছিল সেগুলোর চেয়ে অনেক বেশি কঠিন। এসব সমস্যার সমাধানে কেবল গাণিতিক জ্ঞানই নয়, বরং দীর্ঘ সময় ধরে চিন্তা করে সৃজনশীলভাবে সমস্যার সমাধান করতে হয়।
“দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, আমরা এমন এক মডেল তৈরি করেছি, যা মানুষের মতো গণিতবিদদের স্তরে জটিল ও নিখুঁত যুক্তি তৈরি করতে পারে।”
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিজেদের ‘জিপিটি-৫’ মডেল চালিত চ্যাটজিপিটির নতুন সংস্করণ আনার পরিকল্পনা করছে ওপেনএআই। তবে এই সংস্করণে কোম্পানিটির পুরস্কারজয়ী বটের মতো উন্নত যুক্তিবোধ সক্ষমতা থাকবে না বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
তবে ডিপমাইন্ড এখনও জানায়নি নিজেদের ‘জেমিনাই ডিপ থিংক’ নামের এআই মডেল কবে প্রকাশ করবে তারা।
প্রযুক্তি ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম