এমআরআই মেশিন চালু অবস্থায় কক্ষে প্রবেশ করার পর প্রবল চৌম্বকীয় টানে তিনি ছিটকে গিয়ে যন্ত্রে ধাক্কা খান।
গলায় ধাতব নেকলেস, টেনে নিল এমআরআই মেশিন, যুক্তরাষ্ট্রে মর্মান্তিক মৃত্যু

- আপডেট সময় ১১:২৫:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
- / ৩০ বার পড়া হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে এক মেডিকেল সেন্টারে ম্যাগনেটিং রেজোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) মেশিন এক ব্যক্তিকে প্রচণ্ড জোরে টেনে ধরার পর তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সেসময় ৬১ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির গলায় একটি ভারী ধাতব নেকলেস ছিল বলেও জানিয়েছে তারা। ওই ধাতব নেকলেসটির কারণেই এমআরআই মেশিনটি তাকে সজোরে টেনে ধরে।
গত ১৬ জুলাই নিউ ইয়র্কের ওয়েস্টবুরির ন্যাসাউ ওপেন এমআরআই-তে এ ঘটনা ঘটে বলে ন্যাসাউ কাউন্টি পুলিশ বিভাগের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।
ওই ব্যক্তি অনুমতি ছাড়াই এমআরআই কক্ষে প্রবেশ করেছিলেন, সেসময় এমআরআই মেশিন চালু ছিল।
তার স্ত্রী স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, তিনিই তার স্ক্যান শেষ হওয়ার স্বামীকে ডেকেছিলেন, তাকে সাহায্য করার জন্য। কিন্তু তার স্বামী ওই কক্ষে প্রবেশ করার পরপরই ধাতব চেইনের কারণে এমআরআই মেশিনের দিকে সজোরে ছিটকে যান।
ওই ঘটনার পর ‘চিকিৎসাজনিত পর্ব’ চলে এবং শেষ পর্যন্ত ওই ব্যক্তি মারা যান, বলছেন কর্মকর্তারা।
অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিস্তৃত ছবি তৈরি করতে এমআরআই মেশিন শক্তিশালী চৌম্বকীয় ক্ষেত্র ব্যবহার করে। এ কারণে রোগীদেরকে সাধারণত এমআরআই বা মেশিনের কাছে যাওয়ার আগেই তাদের শরীরে কোনো ধাতব পদার্থ থাকলে তা সরিয়ে নিতে এবং পোশাক বদলাতে বলা হয়।
পুলিশ নিহতের নাম না জানালেও আদ্রিয়ান জোনস-ম্যাকঅ্যালিস্টার স্থানীয় টেলিভিশন নিউজ টুয়েলভ লং আইল্যান্ডকে বলেন, এ ঘটনায় তার স্বামী কিথ প্রাণ হারিয়েছেন।
জোনস-ম্যাকঅ্যালিস্টার জানান, তিনি সেদিন ওই মেডিকেল সেন্টারে তার হাঁটুর স্ক্যান করাতে গিয়েছিলেন। স্ক্যান শেষে উঠতে সাহায্য করার জন্য তার স্বামীকে ডেকেছিলেন।
কিথের গলায় তখন ছিল ৯ কেজি ওজনের একটি চেইন, যাতে একটি লকও ছিল। তিনি ওটা ওজনজনিত প্রশিক্ষণে ব্যবহার করতেন।
“কক্ষে ঢোকার পরপরই ওই মেশিন তার দিকে আকৃষ্ট হয়, তাকে টেনে নেয়, সে এমআরআই মেশিনে ধাক্কা খায়,” বলেন জোনস-ম্যাকঅ্যালিস্টার।
“সে আমাকে হাত নেড়ে বিদায় জানালো, আর তারপরই শরীর নিস্তেজ হয়ে যায়,” বলেন তিনি।
এ নারী জানান, সেদিনের আগেও তারা ওই মেডিকেল সেন্টারে গিয়েছিলেন। তখনও ওই সেন্টারের কর্মীরা তার স্বামীর গলায় ওই ভারী চেইন দেখেছিলেন।
এমআরআই মেশিন টেনে নেওয়ার পর টেকনিশিয়ান তার স্বামীকে যন্ত্র থেকে সরানোর চেষ্টা করেছিলেন।
“আমি চিৎকার করছিলাম, যন্ত্রটা বন্ধ করুন, ৯১১-এ কল করুন, কিছু করুন,” বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এমআরআই যন্ত্রের চৌম্বকীয় শক্তি এতটাই প্রবল যে চাবি, মোবাইল ফোন এমনকি অক্সিজেন সিলিন্ডারের মতো বড় বস্তুকেও আকৃষ্ট করতে পারে।
এ কারণে মেশিনটি চলার সময় এ ধরনের কিছুর উপস্থিতিতে যন্ত্রের যেমন গুরুতর ক্ষতি হতে পারে বা তেমনি সেখানে থাকা রোগী, তার সাহায্যকারী বা মেডিকেল কর্মীরাও আহত হতে পারেন।
২০০১ সালেও যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে এমনই এক ঘটনায় এমআরআই কক্ষে অক্সিজেন সিলিন্ডারের আঘাতে এক ছয় বছর বয়সী শিশুর খুলি ফেটে যায় এবং শিশুটির মৃত্যু হয়।
সূত্র : নিউজ টুয়েলভ লং আইল্যান্ড
বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম