০৬:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

গাইবান্ধায় ১২০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

বিশেষ প্রতিবেদন
  • আপডেট সময় ১২:৫০:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০২৩
  • / ১০৭ বার পড়া হয়েছে

গাইবান্ধায় ১২০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদানসহ অন্যান্য কার্যক্রম। কোনো কোনো স্কুলে দীর্ঘদিনেও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় সহকারী শিক্ষককে একই সঙ্গে দুই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। স্কুলগুলোতে দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগের দাবি শিক্ষক, অভিভাবকসহ স্কুল কমিটির।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়-গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি, সাদুল্যাপুর, পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ-এ সাত উপজেলায় ১ হাজার ৪৬৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু ১২০টি বিদ্যালয়ে ১২০ জন প্রধান শিক্ষক ও ১৭১ জন সহকারী শিক্ষক নেই।

গাইবান্ধা সদরের জুবীলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিরঞ্জন সাহা বলেন, এ স্কুলগুলোতে প্রধান শিক্ষকের শূন্যতায় শিক্ষার্থী ভর্তি কমে গেছে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এসব স্কুলে ভর্তি করাতে চান না। বেসরকারি স্কুলগুলো সরকারিকরণের ফলে আগের শিক্ষকের সঙ্গে নিয়োগ নিয়ে মামলা জটিলতা, অবসর গ্রহণসহ নানা সমস্যার কারণে প্রধান শিক্ষকের ওই পদ শূন্য রয়েছে।

সদর উপজেলার পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইকবাল মুনছুর আহম্মেদ বলেন, আমরা স্কুলের জন্য সময় দিলেও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে পারি না। এ স্কুলে নারী শিক্ষকের সংখ্যাই বেশি। বিদ্যালয় চলাকালীন এলাকার মাস্তান, মাদকসেবীর ভয়ে শিক্ষকরা তটস্থ থাকেন। তারা কিছু বলতে সাহস পান না। ফলে রাতে মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয় স্কুল চত্বর।

ফুলছড়ির ধুতিচোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার বাসিন্দা হামিদুর রহমান বলেন, স্কুলে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ছাত্রছাত্রীও স্কুলে আসতে চায় না। আর শিক্ষকরাও খেয়ালখুশি মতো স্কুল চালান।

সুন্দরগঞ্জের পোড়ার চরের বাসিন্দা রেজাউল মেম্বার বলেন, চরাঞ্চলের অন্তত ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো যেমন নড়বড়ে, পড়ালেখা ও শিক্ষকও তেমন। শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে আসেন না। প্রধান শিক্ষক না থাকলে তো কথাই নেই। সেদিন স্কুলে শিক্ষার্থীরা এলেও আসেন না শিক্ষকরা।

সদরের মোল্লারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা চরাঞ্চলে মোটেও ভালো নয়। প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে তারা সবাই থাকেন শহরে। দু-একজন স্থানীয় শিক্ষক দিয়ে স্কুলগুলো খুঁড়িয়ে চলে। যেসব স্কুলে পদ শূন্য রয়েছে সেখানে জরুরি ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক ও জনবল নিয়োগ করে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুনার রশিদ বলেন, আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে দিয়েছি। তারা নিয়োগ দিলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকভাবে চলবে।

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

গাইবান্ধায় ১২০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

আপডেট সময় ১২:৫০:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০২৩

গাইবান্ধায় ১২০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদানসহ অন্যান্য কার্যক্রম। কোনো কোনো স্কুলে দীর্ঘদিনেও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় সহকারী শিক্ষককে একই সঙ্গে দুই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। স্কুলগুলোতে দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগের দাবি শিক্ষক, অভিভাবকসহ স্কুল কমিটির।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়-গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি, সাদুল্যাপুর, পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ-এ সাত উপজেলায় ১ হাজার ৪৬৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু ১২০টি বিদ্যালয়ে ১২০ জন প্রধান শিক্ষক ও ১৭১ জন সহকারী শিক্ষক নেই।

গাইবান্ধা সদরের জুবীলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিরঞ্জন সাহা বলেন, এ স্কুলগুলোতে প্রধান শিক্ষকের শূন্যতায় শিক্ষার্থী ভর্তি কমে গেছে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এসব স্কুলে ভর্তি করাতে চান না। বেসরকারি স্কুলগুলো সরকারিকরণের ফলে আগের শিক্ষকের সঙ্গে নিয়োগ নিয়ে মামলা জটিলতা, অবসর গ্রহণসহ নানা সমস্যার কারণে প্রধান শিক্ষকের ওই পদ শূন্য রয়েছে।

সদর উপজেলার পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইকবাল মুনছুর আহম্মেদ বলেন, আমরা স্কুলের জন্য সময় দিলেও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে পারি না। এ স্কুলে নারী শিক্ষকের সংখ্যাই বেশি। বিদ্যালয় চলাকালীন এলাকার মাস্তান, মাদকসেবীর ভয়ে শিক্ষকরা তটস্থ থাকেন। তারা কিছু বলতে সাহস পান না। ফলে রাতে মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয় স্কুল চত্বর।

ফুলছড়ির ধুতিচোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার বাসিন্দা হামিদুর রহমান বলেন, স্কুলে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ছাত্রছাত্রীও স্কুলে আসতে চায় না। আর শিক্ষকরাও খেয়ালখুশি মতো স্কুল চালান।

সুন্দরগঞ্জের পোড়ার চরের বাসিন্দা রেজাউল মেম্বার বলেন, চরাঞ্চলের অন্তত ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো যেমন নড়বড়ে, পড়ালেখা ও শিক্ষকও তেমন। শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে আসেন না। প্রধান শিক্ষক না থাকলে তো কথাই নেই। সেদিন স্কুলে শিক্ষার্থীরা এলেও আসেন না শিক্ষকরা।

সদরের মোল্লারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা চরাঞ্চলে মোটেও ভালো নয়। প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে তারা সবাই থাকেন শহরে। দু-একজন স্থানীয় শিক্ষক দিয়ে স্কুলগুলো খুঁড়িয়ে চলে। যেসব স্কুলে পদ শূন্য রয়েছে সেখানে জরুরি ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক ও জনবল নিয়োগ করে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুনার রশিদ বলেন, আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে দিয়েছি। তারা নিয়োগ দিলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকভাবে চলবে।