এর অংশ হিসেবে রোববার থেকেই ফিলিস্তিনিদেরকে তাঁবু ও অন্যান্য আশ্রয় সামগ্রীও দেওয়া হবে বলে ঘোষণাও দিয়েছে তারা।
গাজার বাসিন্দাদের ‘দক্ষিণে সরাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে’ ইসরায়েলি বাহিনী

- আপডেট সময় ০৫:৪২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫
- / ২৮ বার পড়া হয়েছে

গাজার বাসিন্দাদের দক্ষিণে স্থানান্তর এমনিতেই ধুঁকতে থাকা হাজারো ফিলিস্তিনি পরিবারের ভোগান্তি আরও তীব্র করবে।
গাজার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তাদেরকে লড়াই চলছে এমন এলাকা থেকে সরিয়ে ভূখণ্ডের দক্ষিণে স্থানান্তরে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
এর অংশ হিসেবে রোববার থেকে এ ফিলিস্তিনিদেরকে তাঁবু ও অন্যান্য আশ্রয় সামগ্রী দেওয়া শুরু হবে, শনিবার তেল আবিবের বাহিনী এমনটাই বলেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
কয়েকদিন আগেই ইসরায়েল জানিয়েছিল, তারা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটির উত্তরাঞ্চলের শহর গাজা সিটি দখলে নতুন অভিযান শুরু করতে চায়।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার মোট বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ, ভূখণ্ডটির সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাই গাজা সিটি। সেখানে ইসরায়েলি অভিযান শুরু হলে তা মানবিক বিপর্যয় আরও তীব্র করবে বলে আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগও প্রকাশ করেছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত রোববার বলেছিলেন, গাজা সিটিতে অভিযান শুরুর আগে তারা সেখান থেকে বেসামরিকদের ‘নিরাপদ অঞ্চলে’ সরিয়ে নেবেন। গাজা সিটিকে তিনি হামাসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবেও অভিহিত করেছেন।
বাসিন্দাদের যেসব আশ্রয় সামগ্রী দেওয়া হবে সেগুলো জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার মাধ্যমে দক্ষিণ গাজার কারেম শালোম ক্রসিং হয়ে পাঠানো হবে, তার আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মীরা সেসব সামগ্রীর নিরাপত্তা যাচাই সেরে নেবেন, বলেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয় কার্যালয়ের এক মুখপাত্র গাজার বাসিন্দাদের ভূখণ্ডটির দক্ষিণে স্থানান্তরে ইসরায়েলি পরিকল্পনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এমন পদক্ষেপ এমনিতেই ধুঁকতে থাকা হাজার হাজার ফিলিস্তিনি পরিবারের ভোগান্তি আরও তীব্র করবে।
তবে জাতিসংঘের এ সংস্থাটি গাজার বাসিন্দাদের জন্য তাঁবু ও অন্যান্য আশ্রয় সামগ্রীর প্রয়োজনীয়তা যে ইসরায়েল স্বীকার করে নিয়েছে এবং সেগুলো ঢোকার সুযোগ করে দিচ্ছে তাকে স্বাগত জানিয়েছে।
“যে সম্ভাবনার দ্বার খুললো তা কাজে লাগাবে জাতিসংঘ ও এর অংশীদাররা,” বলেছেন মুখপাত্র।
জাতিসংঘ বৃহস্পতিবার সতর্ক করে বলেছিল, ইসরায়েল যদি গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হয়, তাহলে এমনিতেই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সঙ্গে লড়াইরত হাজারো পরিবারের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে।
ফিলিস্তিনি ও জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, গোটা ভূখণ্ডের কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়, এমনকি দক্ষিণ গাজার এলাকাগুলোও নয়, যেখানে ইসরায়েল বাসিন্দাদের সরে যেতে বলছে।
যে আশ্রয় সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে সেগুলো কী গাজা সিটিতে এখন বসবাসকারী আনুমানিক ১০ লাখের মতো বাসিন্দার জন্য কিনা, কিংবা ওই বাসিন্দাদের সরিয়ে মিশর সীমান্তবর্তী দক্ষিণ গাজার রাফাহতে রাখা হবে কিনা, এসব প্রশ্নের জবাব দিতে রাজি হয়নি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
এদিকে ইসরালেয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ শনিবার বলেছেন, নতুন অভিযান কেমন হবে তার পরিকল্পনা এখনও শেষ হয়নি।
হামাসের মিত্র, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ বলেছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া নিয়ে যে ঘোষণা দিয়েছে তা তাদের গাজা সিটি দখলের নৃশংস পরিকল্পনারই অংশ এবং এটি আন্তর্জাতিক আইন কানুনের প্রতি প্রকাশ্য নির্লজ্জ উপহাস।
ইসরায়েলি বাহিনী গত সপ্তাহ থেকেই গাজা সিটির আশপাশে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে। শনিবার জয়তুন ও শেজাইয়া এলাকার বাসিন্দারা ইসরায়েলি বিমান হামলা ও তুমুল গোলাবর্ষণের খবর দিয়েছেন।
ইসরায়েলি সামরিক শুক্রবার বলেছিল, তারা বিস্ফোরকের সন্ধানে, টানেল ধ্বংসে ও সন্ত্রাসীদের হত্যায় জেইতুনে নতুন অভিযান শুরু করেছে।
মিজানুর রহমান খান – বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম