উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় দিনের মত সোমবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: দিনভর সংঘর্ষে আহত দেড় শতাধিক, আইসিইউতে ২ শিক্ষার্থী

- আপডেট সময় ১২:১০:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৩১ বার পড়া হয়েছে
রাতে ‘দেরিতে’ ফেরায় বিতণ্ডা থেকে এক ছাত্রীকে মারধর করেন তার ভাড়া বাসার নিরাপত্তা প্রহরী, খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ সহপাঠীরা গেলে তৈরি হয় উত্তেজনা, এরপর রাতেই শুরু হয় উভয়পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আর সংঘর্ষ, যা পরদিনও চলেছে দফায় দফায়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্যাম্পাস সংলগ্ন জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের এমন সংঘর্ষ হয়েছে শনিবার রাত থেকে রোববার সারা দিন।
স্থানীয়দের হামলায় শিক্ষার্থী, প্রক্টোরিয়াল বডি ও উপউপাচার্যও আহত হয়েছেন। হামলার সঙ্গে ‘ছাত্রলীগ-যুবলীগেরও’ সম্পৃক্ততা দেখছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীরাও বলছেন, গ্রামবাসীর বাইরে ‘বহিরাগতরাও’ হামলা চালিয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে।
রোববার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উভয় পক্ষের দেড়শর বেশি চিকিৎসা নিয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। এর মধ্যে দুই শিক্ষার্থীকে আইসিউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
রোববার সারা দিন সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশেপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। দ্বিতীয়দিনের মত সোমবার ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, শনিবার রাতে গ্রামবাসী জড়ো হয়ে তাদের ওপর হামলা করে। তখন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে সকালে তারা ক্যাম্পাসের ২ নম্বর গেট এলাকায় গেলে গ্রামবাসী হামলা করে।
বিপরীতে স্থানীয় লোকজন বলছেন, শিক্ষার্থীরা শনিবার রাতে জোবরা গ্রামে হামলা করার পর রোববার গ্রামবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করে। রোববার দুপুরেও প্রথম ক্যাম্পাসের দিক থেকে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোববার রাতে বলেন, “বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে।”
যেভাবে শুরু
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেইট সংলগ্ন একটি ভবনের ভাড়াটিয়া এক ছাত্রীর সঙ্গে ভবনের নিরাপত্তারক্ষীর বিতণ্ডার জেরে শনিবার মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ওই ছাত্রী রাত ১১টার দিকে বাসায় ফেরেন। ভবনের গেইট বন্ধ থাকায় তিনি প্রহরীকে ডাকাডাকি করেন। সেসময় প্রহরী এসে ওই ছাত্রীর সঙ্গে তর্কে জড়ায়। একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে তিনি গালাগাল করেন এবং চড় মারেন।
ওই ছাত্রী তখন সহপাঠীদের খবর দিলে তারা সেখানে যান এবং গ্রামবাসীও ভবনের নিরাপত্তারক্ষীর পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। তখন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই পক্ষই ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে পরস্পরকে ধাওয়া করে।
এসময় স্থানীয়রা মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। স্থানীয় লোকজন সে সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের আঘাত করে বলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন।
শনিবার রাত ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মো. হায়দার আরিফ ফেইসবুকে পোস্টে সবার সহযোগিতা চেয়ে লেখেন, “দুই নম্বরে (গেইটে) আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষে প্রচুর শিক্ষার্থী আহত। সহকারী প্রক্টর কুরবান আলী স্যার, নাজমুল স্যার ও নিরাপত্তা প্রধান রহিম ভাই আহত। নিরাপত্তা বাহিনীর অনেকেই আহত। প্রক্টোরিয়াল বডি, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।”
রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে যায়। রোববার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (প্রশাসন) কামাল উদ্দিন বলেন, “পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত। পর্যাপ্ত পুলিশ আমরা ঘটনাস্থলে পাইনি। র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাদের পাইনি। শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী আসছে। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে।”
সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, রাতে অন্তত ৬০ জন আহত শিক্ষার্থীকে তারা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তাদের মধ্যে ২১ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর সকাল ৯টায় সেনা সদস্যরা চলে যায়।
আবার সংঘর্ষ
রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরের নেতৃত্বে শিক্ষকদের একটি দল ঘটনাস্থল জোবরা গ্রামের ওই এলাকা পরিদর্শন করেন।
রাতে সংঘর্ষের পর স্থানীয় লোকজন সকালে আবার সড়কে অবস্থান নিতে শুরু করে। দুই নম্বর গেইট এলাকার বিভিন্ন ভাড়া বাসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থীরা থাকেন, তারা যার যার বাসায় আটকা পড়েন।
এই খবর ছাত্রদের কাছে পৌঁছালে বেলা ১১টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে ছোট ছোট দলে শিক্ষার্থীরা ওই এলাকায় যাওয়া শুরু করেন। ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে দুই নম্বর গেইট এলাকায় গেলে ফের স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
তখন উপ উপাচার্য কামাল উদ্দিনসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের লোকজন পরিস্থিতি শান্ত করতে সেখানে যান। কিন্তু সংঘর্ষের মধ্যে ইটের আঘাতে উপ-উপচার্য নিজেও আহত হন।
দুই পক্ষই ইট-পাটকেল ছোড়ে। গ্রামবাসীর হাতে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র ছিল। এরপর শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে সেখানে যাবার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীর ধাওয়ার মুখে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তখন বিভিন্ন এলাকায় আটকে পড়া ছাত্রদের এলোপাথাড়ি মারধর করে স্থানীয়রা।
মিছিল-সমাবেশে ‘নিষিদ্ধ’
দফায় দফায় সংঘর্ষের পরিস্থিতি থামাতে রোববার বেলা ২টা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশেপাশের ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমুন নবী বলেন, আগামীকাল (সোমবার) রাত ১২টা পর্যন্ত এ ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে।
এ সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট বাজারের পূর্ব সীমা থেকে পূর্ব দিকে রেল গেট পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে রোববার বেলা ২টা থেকে সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারার আদেশ জারি থাকবে।
এই সময়ে ওই এলাকায় সকল প্রকার সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও সকল প্রকার দেশী অস্ত্র বহনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৫ বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে অবস্থান কিংবা চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
আহত দেড় শতাধিক
শনিবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০ জন চিকিৎসা নিয়েছিল। তাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আলাউদ্দিন বলেন, রোববার দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ৮৪ জন চিকিৎসা নিতে আসে।
চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেলের পাশাপাশি বেসরকারি পার্ক ভিউ হাসপাতালে ৪৩ জন এবং ন্যাশনাল হাসপাতালে ২৪ জন চিকিৎসাধীন আছেন।
গুরুতর আহত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের শিক্ষার্থী নাইম রহমানকে ন্যাশনাল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউতে আরেক শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন আছেন। সবমিলিয়ে আহতের সংখ্যা ১৫২ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারেও শনিবার রাতে ও রোববার দিনভর মোট ৩০০ শিক্ষার্থী চিকিৎসা নেয়। যাদের মধ্যে অনেককে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল ও বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রোববার বিকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের বেশিরভাগই ক্যাজুয়ালটি বিভাগ, ও নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি। তাদের বেশিরভাগেরই মাথায়, হাতে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন। কেউ হাসপাতালের বেডে চিকিৎসা নিলেও অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন।
হামলায় ‘ছাত্রলীগ/যুবলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ’
সংঘর্ষের চলার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) কামাল উদ্দিন বলেন, “সকল ছাত্রলীগের ক্যাডাররা, সকল বড় বড় ক্যাডাররা ঢুকে ঢুকে মেরেছে। তারা আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে মারছে। কোনো পুলিশ নাই। আমরা জিওসির সঙ্গে কথা বলেছি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে কথা বলেছি। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে কথা বলেছি।
“২ ঘণ্টা চলে গেছে। এখনো আমাদের মাঝে কেউ আসে নাই। আমরা আর ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। এখনো মারতেছে আমাদের। আমাদের প্রায় চার-পাঁচশ ছাত্র আহত হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, “এক ছাত্রী বাসায় ঢুকতে চেষ্টা করলে নিরাপত্তা রক্ষী তাকে মারধর করেছে। এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়ার মত না। এই সংঘাতকে আরো খারাপ অবস্থায় নেওয়ার জন্য হানিফ গং ছাত্রলীগ-যুবলীগ জড়ো হয়ে চেষ্টা করেছে কীভাবে পরিস্থিতি বেসামাল করা যায়।”
রোববার বিকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ‘ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে’ চিকিৎসাধীন বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মো. রুমান রহমান বলেন, “যারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে তাদের আমরা আগে কখনো ক্যাম্পাসে বা আশেপাশে দেখি নাই। আমার মনে হয় হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গ্রামের বাইরে থেকেও এসেছে।”
রুমান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় একটি বেসরকারি কটেজে ভাড়া থাকেন। তিনি শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছেন। তার পায়ের বিভিন্ন অংশে জখম দেখা গেছে।
মাথায় আঘাত পাওয়া ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ফাহাদ বলেন, ইটের আঘাতে আমি মাথায় আঘাত পেয়েছি। হামলাকারীরা ধানক্ষেতে নেমেও শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছে। তাদের হাতে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দেখেছি। হামলাকারীরা কাউকে কুপিয়েছে, কাউকে মারধর করেছে। হামলার আমাদের প্রো-ভিসি স্যারও আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের মধ্যে ‘বহিরাগত’ ছিল বলেও জানান তিনি।
গ্রামবাসী কী বলছে
নাম প্রকাশ না করে জোবরা গ্রামের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী বলেন, “রাতে এক ছাত্রীকে এক দারোয়ান মারার পর এই ঘটনার শুরু হয়। তখন গ্রামের কিছু মানুষ জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে।
“পরে শিক্ষার্থীরাও দলবেঁধে এসে গ্রামের লোকদের উপর হামলা করে। রাতেই কিছু দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়।”
স্থানীয় ওই ব্যবসায়ী বলেন, “সকালে আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি ও স্থানীয় মুরুব্বিদের নিয়ে বসে সমাধানের চেষ্টা করছিলাম। গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে কিছু শিক্ষার্থী ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের দাবি ছিল তাদের ক্যাম্পাসে পৌঁছে দিতে হবে।
“এ নিয়ে যখন আলোচনা চলছিল তখন হঠাৎ করে কিছু শিক্ষার্থী ইট মারে। এরপর আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে আর থামানো যায়নি। উভয় পক্ষ দায়ী। আমি আপনাকে মেরেছি, তারপর আপনি আমাকে মেরেছেন। ছাত্ররা বেশি আহত হয়েছে। ২০ জন গ্রামবাসীও আহত হয়েছে।”
যা বলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম রোববার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে অফিসে এসে আমরা যখন করণীয় ঠিক করতে আলোচনা করছিলাম, তখনই খবর পাই আবার ছাত্ররা আক্রান্ত হচ্ছে। তারাও আবার সেদিকে যাচ্ছে।
“সকালে হাটহাজারী থানার ওসি এখানে ছিল। উনাকে বললাম ২০০ পুলিশ দরকার। কিন্তু তিনি বললেন, এত পুলিশ কোথায় পাব। ডিআইজির সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনি বলেছেন ফোর্স পাঠাচ্ছি।”
সাইফুল ইসলাম বলেন, “শনিবার রাতে সেনাবাহিনী এসেছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল মনে করে তাদের বিদায় দেয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতা আরো বেশি প্রয়োজন ছিল। বারবার তাগাদা দিয়েও পুলিশ আসেনি।”
শিক্ষার্থীদের দেখতে হাসপাতালে মেয়র
হামলায় আহতদের দেখতে রোববার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন।
চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন, চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন এবং সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
মোহাম্মদ আলিমুজ্জামান – বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম