গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নুরের স্ত্রী মারিয়া আক্তার, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন।

পরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নুরুল হকের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মারিয়া আক্তার।

তিনি জানান, নুরের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে; নাকের হাড় ভেঙেছে; তিনি চোয়ালে ও মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়েছেন।

চিকিৎসার জন্য নুরকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন বলে জানান মারিয়া আক্তার।

এ সময় তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসার জন্য নূরকে বিদেশে পাঠাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “এ ঘটনায় আমরা সবাই স্তম্ভিত। তার সুচিকিৎসায় আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে।”

এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।

আইন উপদেষ্টা জানান, হামলার ঘটনায় বিচারপতি আলী রেজার নেতৃত্বে এক সদস্যের কমিটি করা হচ্ছে। আগামীকালের মধ্যেই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ হবে। ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কাজ সম্পন্ন করবে।

পরে যমুনার সামনে নুরের স্ত্রী মারিয়া আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ”আমাকে মাননীয় উপদেষ্টা ডেকেছিলেন নুরের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য। উনি খবর নিয়েছেন এবং যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, তার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।”

শারীরিক অবস্থার বিবেচনা করে তাকে বাইরে উন্নত চিকিৎসার কথা বলেছেন বলেও জানান মারিয়া।

তিনি বলেন, ”গতকাল দুপুর পর্যন্ত মোটামুটি ছিল, কিন্তু বিকাল থেকে আবারও নাক থেকে ব্লিডিং হচ্ছে। কথা বলতে গেলে হঠাৎ চুপ হয়ে যাচ্ছে। এখনও শারীরিক অবস্থা ভালো না।”

শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাওয়ার সময় সংঘর্ষে জড়ান উভয় দলের নেতাকর্মীরা।

সেদিন রাতে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে দাবি করেন, হামলার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাদের মশাল মিছিলের কর্মসূচি ছিল। সেটি শেষ করে গণঅধিকার পরিষদ কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিং করতে গেলে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা তাদের লাঠিপেটা করে। এতে নুরুল হক গুরুতর আহত হন।

তবে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর—আইএসপিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘শান্তিপূর্ণ সমাধানের সব চেষ্টা অগ্রাহ্য’ হওয়ার পর সেনাবাহিনী সেখানে ‘মব ভায়োলেন্স’ ঠেকানোর জন্য বল প্রয়োগে বাধ্য হয়।

মিজানুর রহমান খান – বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম