লক্ষ্য হচ্ছে ‘নতুন, অসাধারণ বৈজ্ঞানিক উপকরণ’ তৈরি করা, যা ব্যবহার করে পদার্থবিজ্ঞান থেকে শুরু করে জীববিজ্ঞান পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে আবিষ্কারের গতি বাড়ানো যাবে।
চ্যাটবটের বাইরে নতুন উদ্যোগ নিয়ে হাজির হচ্ছে ওপেনএআই

- আপডেট সময় ০২:১৩:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৪ বার পড়া হয়েছে
নতুন এক উদ্যোগ নিয়েছে চ্যাটজিপিটির নির্মাতা ওপেনএআই, যেটি কোনো চ্যাটবট নয়, বরং এটি বদলে দিতে পারে বিজ্ঞানের কাজের ধারা।
বর্তমানে ‘ওপেনএআই ফর সায়েন্স’ নামে নতুন এক উদ্যোগের মাধ্যমে বিজ্ঞান গবেষণায় ‘নতুন যুগের সূচনা’ করেছে ওপেনএআই।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ উদ্যোগটি সম্পর্কে লিখেছেন ওপেনএআইয়ের প্রধান পণ্য কর্মকর্তা কেভিন ওয়েইল।
এ উদ্যোগের লক্ষ্য হচ্ছে ‘নতুন, অসাধারণ বৈজ্ঞানিক উপকরণ’ তৈরি করা, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইকে ব্যবহার করে পদার্থবিজ্ঞান থেকে শুরু করে জীববিজ্ঞান পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে আবিষ্কারের গতি বাড়াতে সাহায্য করবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট টমস গাইড।
এআইনির্ভর আবিষ্কারের নতুন অধ্যায়
সংক্ষিপ্ত ওই এক্স পোস্টে ওয়েইল লিখেছেন, কোম্পানিটি এখন কেবল ব্যবহারকারীদের জন্য চ্যাটবট বানিয়েই থেমে থাকতে চাইছে না, বরং সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি অ্যাপ্লিকেশনের বাইরে গিয়ে, মূল ও মৌলিক বিজ্ঞানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সক্ষমতা প্রয়োগ করবে ওপেনএআই।
ওয়েইলের লিংকডইন প্রোফাইলে এখনও তাকে ওপেনএআইয়ের ‘চিফ প্রোডাক্ট অফিসার’ হিসেবে দেখানো হলেও অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘পিমন্টস’-এর তথ্য বলছে, তিনি এখন কোম্পানিটির ‘এআই ফর সায়েন্স’ নামের নতুন বিভাগে কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্বে রয়েছেন। এ অভ্যন্তরীণ গবেষণা দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
বিষয়টি এমন সময়ে ঘটছে যখন কোম্পানিটির উচ্চপর্যায়ের নেতৃত্বেও বড় রকমের পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে ওপেনএআইয়ের ‘অ্যাপ্লিকেশন’ বিভাগের দায়িত্ব নিয়েছেন ফিদজি সিমো। পাশাপাশি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রোডাক্ট টিমের অন্যান্য পদও নতুন করে সাজিয়েছে কোম্পানিটি।
ওয়েইল লিখেছেন, ছোট হলেও কিছু ‘সেরা পর্যায়ের’ বিজ্ঞানী ও গবেষককে নিয়ে ছোট দল গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার। রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি করতে ওপেনএআইয়ের গবেষকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে এ দলটি।
চ্যাটজিপিটি ৫-এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ডেটাকোনমি’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ নতুন উদ্যোগটি চ্যাটজিপিটি ৫-এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যা বৈজ্ঞানিক কাজের জন্য অত্যাধুনিক এক এআই সহযোগী হিসেবে গড়ে উঠবে। গবেষণার নানা কাজ যেমন ধারণা তৈরি থেকে শুরু করে জটিল গবেষণা পর্যন্ত সবকিছুতেই সাহায্য করবে।
এসব থেকে ইঙ্গিত মেলে, ওপেনএআই এখন কেবল তত্ত্বেই আটকে নেই, বরং সরাসরি ল্যাব পর্যায়ে কাজ করছে কোম্পানিটি এবং সম্ভবত শক্তিশালী এক নতুন ধরনের বৈজ্ঞানিক টুলও তৈরি করতে যাচ্ছে তারা।
এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ
ওপেনএআইয়ের এ উদ্যোগ সফল হলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দ্রুত উন্নতি ঘটাবে এআই, যা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের গতি, কোনো দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, নতুন নতুন উদ্ভাবন বাড়ানো এবং দেশের নিরাপত্তাকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।
উদ্যোগটি থেকে ধারণা মেলে, ওপেনএআই কেবল একটি প্রোডাক্ট কোম্পানি হিসেবেই নয়, বরং নিজেদেরকে বৈজ্ঞানিক সহযোগী ও গবেষণা কেন্দ্র হিসেবেও প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।
কী কী পরিবর্তন আসতে পারে?
লক্ষ্য বড় থাকলেও কোম্পানিটির অনেক তথ্য সম্পর্কে এখনও খুব অল্পই জানা যায়। নিজেদের পরিকল্পনা নিয়ে কোনো সময়সীমা বা নির্দিষ্ট অগ্রগতি এখনও প্রকাশ করেনি ওপেনএআই। এ উদ্যোগটি এখনও শুরুর পর্যায়েই রয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই নিজেদের এই বিজ্ঞান বিভাগের জন্য নতুন সদস্য নিয়োগের ঘোষণা দেবে কোম্পানিটি। পাশাপাশি এ নিয়ে ছোট ছোট পরীক্ষামূলক প্রকল্প শুরু হবে তারা।
ল্যাবের কাজের ধারা ও প্রক্রিয়ায় এআইয়ের বিভিন্ন সক্ষমতা যোগের পাশাপাশি কোম্পানিটির কাজ ও বৈজ্ঞানিক নিয়মের সঙ্গে মিল রেখে বড় ধরনের পরিবর্তনও আনতে পারে ওপেনএআই।
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম