২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৩,০০০ মেগাওয়াট ‘রুফটপ সোলার’ স্থাপনের লক্ষ্য রয়েছে।
ছাদে সৌরবিদ্যুৎ সম্প্রসারণে বড় বাধা অর্থায়ন: সেমিনার

- আপডেট সময় ০২:০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৩২ বার পড়া হয়েছে
ছাদে সৌরবিদ্যুৎ পদ্ধতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাংকগুলোর জটিল ও শর্তযুক্ত অর্থায়ন পদ্ধতি সবচেয়ে বড় বাধা বলে তুলে ধরেছেন এ খাত সংশ্লিষ্টরা।
এর বিপরীতে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার পর এখানে বিনিয়োগ ফিরে আসতে বিলম্ব হওয়ায় অর্থায়ন ঝুঁকি অনেক বেশি।
মঙ্গলবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে ‘সোলার রুফটপ ফাইন্যান্স উন্মোচন: একটি টেকসই জ্বালানি ভবিষ্যতের পথে’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি এ খাতের সমস্যা আর সম্ভাবনার কথাও উঠে আসে।
সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার বলেন, সৌরবিদ্যুতের সম্প্রসারণে অচিরে একগুচ্ছ প্রণোদনামূলক কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে সরকার।
বাংলাদেশ সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউএবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশন (বিএসআরইএ) ও অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ যৌথভাবে এ আলোচনার আয়োজন করে।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবিরের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পরিচালক খোন্দকার মোরশেদ মিল্লাত।
বিদ্যুৎ বিভাগ, স্রেডা, ইডকল, বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা, বাণিজ্যিক ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই), নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের ব্যবসায়ীরা আলোচনায় অংশ নেন।
ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার বলেন, “২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সোলার প্লান্টে জড়িত। রুফটপ সোলার এখন আমাদের দেশে খুব প্রয়োজন। ইপিজেড, ইজেড ও অন্যান্য অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২০ শতাংশ সৌর বিদ্যুতের নীতিমালা আসছে। বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন নির্দেশনা আসছে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সব বিভাগীয় শহরে ক্লাস্টারভিত্তিক ফ্রাঞ্চাইজি চালু করার উদ্যোগ নেবে বিপিডিবি। পেমেন্ট নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এসক্রো সিস্টেম চালু করা হবে।”
রেলওয়ের অব্যবহৃত জমি ব্যবহার করে পিপিপি মডেলে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প চালুর প্রচেষ্টা করা হচ্ছে বলেও তুলে ধরেন তিনি।
ইডকলের প্রধান নির্বাহী আলমগীর মোরশেদ বলেন, অর্থায়নের ক্ষেত্রে ইডকল সামনে থাকবে। ব্যাংকগুলো এগিয়ে আসলে মিশ্র বিনিয়োগ হতে পারে। এখন প্রতি ওয়াটের খরচ ৩০/৩৫ টাকায় চলে আসছে। যেখানে ১০ বছর আগে ১০০ টাকার উপরে ছিল। এখন বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রযুক্তি উন্নতির ফলে ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমে আসলেও তা এখনও উদ্যোক্তাদের কাছে অজানা রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসির একজন প্রতিনিধি বলেন, “গত ২/৩ বছরে বিনিয়োগ অভিজ্ঞতা ভালো। আমরা ৮০ মেগাওয়াটের মতো প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছি। এখন দরকার হচ্ছে সচেতনতা বাড়ানো। গ্যাস ছাড়া সেকেন্ড সুলভমূল্যের বিদ্যুৎ হচ্ছে রুফটপের সৌরবিদ্যুৎ।”
বিএসআরইএ’র সভাপতি মোস্তফা আল মাহমুদ বলেন, “২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৩,০০০ মেগাওয়াট রুফটপ সোলার স্থাপনের লক্ষ্য রয়েছে। কিন্তু এই খাতে সম্ভাবনা থাকলেও বড় প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে অর্থায়ন। বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আসছে মাত্র ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বিদ্যুৎ, যা আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম।”
অনুষ্ঠানে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, সিটি ব্যাংকসহ আরও কিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এই খাতে বিনিয়োগের কিছু নেতিবাচক অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
সাবরিনা জাহান- বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম