০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার পর দুদিন হাসপাতালে ছিলেন সিইসি; এরপর তাকে ঘিরে নানা আলোচনার মধ্যে সেই সাক্ষাতের বিষয় ও ইসি পুনর্গঠনের দাবি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।

জোর করে নয়, উড়ে এসেও জুড়ে বসিনি: সিইসি

নিউজ ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ১১:৩২:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
  • / ২৯ বার পড়া হয়েছে

 

বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়ে একটি দলের প্রশ্ন তোলার প্রেক্ষাপটে সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন জোরালোভাবে বলেছেন, ইসি পুনর্গঠনের কোনো বার্তা প্রধান উপদেষ্টার তরফ থেকে দেওয়া হয়নি।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) গণ অভ্যুত্থানের ‘ফসল’ হিসেবে তুলে ধরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, বর্তমান সিইসি ও নির্বাচন কমিশনাররা জোর করে চেয়ারে বসেননি; উড়ে এসেও জুড়ে বসেননি। সম্পূর্ণ স্বচ্ছ আইনি ও বাছাই প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে সাংবিধানিক এ সংস্থায় নিয়োগ পেয়েছেন।

এ নিয়ে রাজনৈতিক দলের নানা রকম বক্তব্য থাকলেও দিনশেষে সমঝোতা হয়ে সবকিছুর সুরাহা হয়ে যাবে বলে আশা তার।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তার প্রথম ও আলোচিত ওই বৈঠকে স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠেছিল। তারা এ নিয়ে কথা বলেছেন, ভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে সরকারপ্রধানকে অবহিত করেছেন। তবে ভোটের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে তুলে ধরেন সিইসি।

মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সামনে আসেন সিইসি। তখন এ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৃহস্পতিবার বিকালে একান্ত সাক্ষাৎ করেন সিইসি। সেই থেকে এ বৈঠক ঘিরে আগ্রহ তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।

ওই সাক্ষাতের পর শুক্র ও শনিবার ছিল ছুটির দিন। রবি ও সোমবার নির্বাচন ভবনে আসেননি সিইসি। এরপর মঙ্গলবার এসে মুখ খুললেন সিইসি; খোলামেলা জবাব দিলেন অনেক প্রশ্নের।

নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার আইনে নিয়োগের কারণে বর্তমান ইসির পুনর্গঠনের দাবি তুলেছে। প্রধান উপদেষ্টা ও সিইসির সাক্ষাতে ইসি পুনর্গঠনের বার্তার খবরে এসেছে সংবাদমাধ্যমেও।

এমন পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সৌজন্য সাক্ষাৎ, আলোচনার বিষয়বস্তু, ভোটের প্রস্তুতি, প্রধান উপদেষ্টার দিক নির্দেশনা, ভোটের সম্ভাব্য সময় ২০২৬ সালের শুরু নাকি ফেব্রুয়ারি, কিংবা এপ্রিলের প্রথমার্ধ তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে কথা বলেন নাসির উদ্দিন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক মাস পর বিদায় নেন তৎকালীন ইসি। এরপর নভেম্বরে নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে বর্তমান ইসি যোগ দেয়; যাদের হাতে রয়েছে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ভার।

 

মুখে কুলুপ, কোথায় ছিলেন তিনি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পর চার দিন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি সিইসি। নির্বাচন কমিশনে চার নির্বাচন কমিশনার এলেও তিনি আসেননি।

স্মিত হেসে সিইসি বলেন, “শারীরিকভাবে আমি একটু অসুস্থ আছি। দু’তিন দিন আমি হাসপাতালে (সিএমএইচ) ছিলাম। সেখানে শুয়ে শুয়ে যেসব নিউজ আমি দেখছিলাম, আমি নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করলাম।”

একটি হাদিসের উদ্ধৃতি টেনে তিনি বলেন, “এজন্য বলা রয়েছে ’তোমরা অনুমান দ্বারা পরিচালিত হইও না’।“

হাসতে হাসতে তিনি বলেন, “এ অনুমানের মধ্যে দেখলাম কেউ কেউ আমাকে পদত্যাগ করিয়ে দিয়েছে। কেই কেউ বলে (প্রধান উপদেষ্টার সাথে) আমি কথা বলার পর অসুস্থ হয়ে গেছি। নানা ধরনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ।”

বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ হলেও শুক্রবার হাসপাতালে যাওয়ার বিষয়য়টি পূর্ব নির্ধারিত থাকার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, “শুক্রবার আমি হাসপাতালে চলে গিয়েছি। তাই আপনাদের সাথে কথা বলতে পারিনি। এখন প্রতি পদে পদে জানিয়ে জানিয়ে চলাফেরা করতে পারব না আমি।

”জেলখানার কয়েদির মত কোথায় গেলাম, প্রত্যেকটা পদক্ষেপ জানিয়ে যেতে হবে বুঝলাম না, (হাসতে হাসতে) আমার কি অসুস্থ হওয়ার অধিকার নেই?”

চিকিৎসার পর এখন ভালো থাকার কথা বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য কমিশন স্বউদ্যোগে সময় চেয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, “দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করা হয়নি। রাষ্ট্রাচারের নিয়ম হচ্ছে- উনার সাথে সাক্ষাত করতে হলে, আমি চিকিৎসা করতে যাব, এজন্য আমার অফিস থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে, একটা সৌজন্য সাক্ষাৎতের সূচির বিষয়ে, ব্যস–হয়েছে।”

 

‘উনিও নিরপেক্ষ, আমিও নিরপেক্ষ’

প্রধান উপদেষ্টা ও সিইসির সাক্ষাতের বিষয়বস্তু কোনো তরফ থেকেই জানানো হয়নি। এরপর সবার নজর ছিল ইসির দিকে। এ কারণে সিইসি অফিসে আসার পর জড়ো হন সংবাদকর্মীরা। বিকালে কথা বলেন তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দিন বলেন, “আপনারা (সংবাদমাধ্যম) প্রায়শ বলেন সরকারের সাথে কথা (ইসির) কথা হয়েছে কিনা। সরকারতো প্রধান উপদেষ্টা একজন নন, সরকার ব্যাপক অর্থে বোঝায়। আমাদের অফিসাররা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথেও কথা বলে, তাও সরকারের সাথে কথা বলা। বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলা হয়। শুধু প্রধান উপদেষ্টার সাথে কথা বলা সরকারের সাথে যোগাযোগ নয়।

“এটা ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ। দায়িত্ব নেওয়ার পরে আমার সাথে ফরমালি কোনো বৈঠক হয়নি। উনিও (প্রধান উপদেষ্টা) নিরপেক্ষ, আমিও নিরপেক্ষ।”

সিইসি বলেন, দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকলে সাধারণ সিইসির সঙ্গে সরকারপ্রধানের দেখা হয়না। সরকারপ্রধান দলীয় প্রধান হলে তিনি নিজের জন্য নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। সেজন্য সরাসরি দেখা না হওয়াই মূল কারণ।

“এখানে আমি যেমন নিরপেক্ষ, উনিও নিরপেক্ষ। এটা একদম সৌজন্য সাক্ষাত।”

এ সাক্ষাতে ভোটের বিষয় উঠে এসেছিল কিনা এমন জিজ্ঞাসার জবাবে নাসির উদ্দিন বলেন, “উনি প্রধান উপদেষ্টা এবং নির্বাচনটা আলোচনার মূল কেন্দ্রে, আমি সিইসি; সুতরাং এ সৌজন্য সাক্ষাৎকারে স্বভাবতই সাইড টক হিসেবে কিছুটাতো আসেই। আমি কোনো এজেন্ডা নিয়ে আলোচনায় যাইনি।”

কথা প্রসঙ্গে নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তুলে ধরেন তিনি।

 

ফুল গিয়ারে ভোটের প্রস্তুতিতে ইসি

প্রধান উপদেষ্টাকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে অবহিত করার কথা তুলে ধরে সিইসি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা জাতিকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দিতে চান। তিনি জানতে চাইলেন, আমাদের প্রস্তুতি আছে কিনা? শুধু এটুকু উনি জানতে চেয়েছিলেন। আমরা বলছি যে, আমরা প্রস্তুতি ফুল গিয়ারে নিচ্ছি।

”নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মধ্যেই কিন্তু আমরা প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছি বিভিন্ন বিষয়ে, যাতে নির্বাচনটা সরকার যখন করতে চায়, যখন নির্ধারিত হয়, সাথে আমরা নির্বাচনটা করতে পারি।“

 

’তারিখ নিয়ে আলোচনা হয়নি, ভোটের তারিখ দেবে ইসি’

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে আলোচনা না হওয়ার কথা বলেন সিইসি। বলেন, “ওটা আমার উদ্দেশ্যও ছিল না। নির্বাচনের তারিখ এবং শিডিউল আপনারা যথাসময় পাবেন, জানতে পারবেন।”

ভোটের তফসিল নির্বাচন কমিশনই ঘোষণা করবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, “একটু অপেক্ষা করতে হবে, ধৈর্যের বাধ ভেঙে গেলে হবে না।”

গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অত্যন্ত আন্তরিক বলেও তুলে ধরেন তিনি।

“এই সুযোগে এ সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আমি বুঝতে পেরেছি উনি অত্যন্ত আন্তরিক, একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশন যাতে হয় এবং একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে হয়। এ ব্যাপারে উনার আন্তরিকতা প্রশ্নাতীত। যেমন আমাদের আন্তরিকতা প্রশ্নাতীত।”

প্রধান উপদেষ্টা ইসিকে কোনো দলের জন্য কাজ করতেও বলেননি বলে মন্তব্য করেন সিইসি।

 

অগ্রাধিকারে জাতীয় নির্বাচন, স্থানীয় নয়

ইসির প্রস্তুতি জানতে চাওয়ার পাশাপাশি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশনাও দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

সিইস বলেন, “আমার তো বলতে দ্বিধা নেই- উনি এ পর্যন্ত কোনদিন আমাদেরকে কোনো দলের জন্য কাজ করার জন্য বা ফেভার করার জন্য বলেননি। প্রধান উপদেষ্টা আন্তরিকতার সাথে একটা নিউট্রাল ফ্রি ফ্রেয়ার ক্রেডিবল ইলেকশন জাতিকে উপহার দিতে চান, সৌজন্য সাক্ষাতে উনি এরকম একটা আভাস দিয়েছেন।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের এ মুহূর্তে প্রস্তুতি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। যা নিচ্ছি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি নিচ্ছি, স্থানীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের প্রস্তুতিও নেই। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে হয় যদি হয়, আমাদের ভোটার তালিকা ও নির্বাচনি মালামাল ব্যবহার করতে পারব না? সেটা হতেই পারে। কিন্তু আমাদের ফোকাস এ মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই নিয়েছি।“

প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে দেশে-বিদেশে প্রতিশ্রুতবদ্ধ বলে তুলে ধরেন তিনি।

“প্রধান উপদেষ্টা স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলছেন না। উনি জাতিকে যে ওয়াদা দিচ্ছেন দেশে বিদেশে, সেখানে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলছেন না, উনি জাতীয় নির্বাচনের কথাই বলছেন। উনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরাও জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

 

তবে ভোট কখন?

এপ্রিলের প্রথমার্ধে ভোটের সম্ভাব্য সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পর লন্ডন বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে তা আয়োজনের কথা এসেছে।

এমন পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ভোটের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানতে পেরেছেন কিনা? জানতে চাইলে সিইসি বলেন, “সম্ভাব্য সময় আপনারা যেটুকু জানেন আমিও সেটাই জানি। প্রথমেই উনি বলেছিলেন এপ্রিলের প্রথমার্ধে, পরে লন্ডনে ফেব্রুয়ারির কথা। আজ টিভিতে দেখলাম-মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে আগামী বছরের প্রথম দিকে বলেছেন। কিন্তু আমার সাথে তারিখ, সম্ভাব্য সময় নিয়ে কোনো কথা হয়নি।”

এসময় প্রস্তুতি কোন সময়কে ঘিরে চলছে জানতে চান সাংবাদিকরা। তখন তিনি বলেন, “ওই দুটো ট্রাইম ফ্রেমকে (ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিল) সামনে রেখেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। দ্রুত সম্ভব আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি, যাতে সরকার যখনই করতে চায়, আমরা নির্বাচন করতে পারি।”

 

ইসি পুনর্গঠন

নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির নেতারা সবশেষ ২২ জুন বলেন, বর্তমান ইসি পুনর্গঠন হবেই, কোনো ‘প্লান বি’ নেই।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিইসি বলেন, “রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। তারা নানা ধরনের বক্তব্য দিতে পারে। রাজনৈতিক দলতো কত রকমের কথাই বলে। যখন দাবি জানিয়েছে, আমিও শুনছি, গণমাধ্যমে দেখেছি। রাজনৈতিক বক্তব্য বলে আমরা মনে করি।”

ইসি পুনর্গঠনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার তরফ থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছে- সংবাদমাধ্যমে এমন খবর এসেছে। এমন কোনো বার্তা সিইসিকে দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চান আরেক সাংবাদিক।

নাসির উদ্দিন বলেন, “নিশ্চিত করছি, এ ধরনের কোনো বার্তা (ইসি পুনর্গঠন করা হবে) আমাকে তো দেওয়া হয়নি। কেন দেবে? আমরা কোনো ইলেকশন করেছি? ইলেকশন রিগিং করেছি বা কোনো পক্ষপাতিত্ব করেছি? আমরা কি জোর করে কেউ এ চেয়ারে বসে গেছি? বিদ্যমান আইনে যথাযথ প্রক্রিয়ায়, একটা সিলেকশন প্রসেসের মাধ্যমে আমরা এসেছি। আমরাতো কোনো উড়ে এসে জুড়ে বসিনিতো।”

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারের সময় আমাদের নিয়োগ দিয়ে গেছে এমন নয়। আমরা ৫ অগাস্টের পরে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আমরা নিয়োগপ্রাপ্ত। নানাবিধ কথা বলতেই পারে। আমি নিশ্চিত, আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা দিনশেষে মঙ্গল চায়, সবাই সমঝোতায় আসবেন।”

রাজনীতিবিদদের প্রতি আস্থাশীল ও সমঝোতার মাধ্যমে সব কিছুর সুরাহা হয়ে যাবে বলে আশা রাখেন সিইসি।

রাজনৈতিক দলগুলো ইসির প্রতি আস্থা রাখছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ইসির পরিকল্পনা রয়েছে। সে অনুযায়ী আগাচ্ছি। রাজনৈতিক দলগুলো যখন আমাদের কর্মকাণ্ড দেখবে, নিরপেক্ষভাবে আমাদের কাজ দেখবে; অবশ্যই উনাদের আস্থা, বিশ্বাস সৃষ্টি হবে। আমরা কারো কোনো খাতির করছি না।”

স্বাভাবিকভাবে ভোটের মাস দুয়েক আগে তফসিল দেওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি।

 

কারাগারে দুই সাবেক সিইসি

একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী সিইসি কে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বর্তমান সিইসি বলেন, “এটা বিচারাধীন বিষয়। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।”

সূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

 

 

নিউজ ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার পর দুদিন হাসপাতালে ছিলেন সিইসি; এরপর তাকে ঘিরে নানা আলোচনার মধ্যে সেই সাক্ষাতের বিষয় ও ইসি পুনর্গঠনের দাবি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।

জোর করে নয়, উড়ে এসেও জুড়ে বসিনি: সিইসি

আপডেট সময় ১১:৩২:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫

 

বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়ে একটি দলের প্রশ্ন তোলার প্রেক্ষাপটে সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন জোরালোভাবে বলেছেন, ইসি পুনর্গঠনের কোনো বার্তা প্রধান উপদেষ্টার তরফ থেকে দেওয়া হয়নি।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) গণ অভ্যুত্থানের ‘ফসল’ হিসেবে তুলে ধরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, বর্তমান সিইসি ও নির্বাচন কমিশনাররা জোর করে চেয়ারে বসেননি; উড়ে এসেও জুড়ে বসেননি। সম্পূর্ণ স্বচ্ছ আইনি ও বাছাই প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে সাংবিধানিক এ সংস্থায় নিয়োগ পেয়েছেন।

এ নিয়ে রাজনৈতিক দলের নানা রকম বক্তব্য থাকলেও দিনশেষে সমঝোতা হয়ে সবকিছুর সুরাহা হয়ে যাবে বলে আশা তার।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তার প্রথম ও আলোচিত ওই বৈঠকে স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠেছিল। তারা এ নিয়ে কথা বলেছেন, ভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে সরকারপ্রধানকে অবহিত করেছেন। তবে ভোটের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে তুলে ধরেন সিইসি।

মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সামনে আসেন সিইসি। তখন এ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৃহস্পতিবার বিকালে একান্ত সাক্ষাৎ করেন সিইসি। সেই থেকে এ বৈঠক ঘিরে আগ্রহ তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।

ওই সাক্ষাতের পর শুক্র ও শনিবার ছিল ছুটির দিন। রবি ও সোমবার নির্বাচন ভবনে আসেননি সিইসি। এরপর মঙ্গলবার এসে মুখ খুললেন সিইসি; খোলামেলা জবাব দিলেন অনেক প্রশ্নের।

নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার আইনে নিয়োগের কারণে বর্তমান ইসির পুনর্গঠনের দাবি তুলেছে। প্রধান উপদেষ্টা ও সিইসির সাক্ষাতে ইসি পুনর্গঠনের বার্তার খবরে এসেছে সংবাদমাধ্যমেও।

এমন পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সৌজন্য সাক্ষাৎ, আলোচনার বিষয়বস্তু, ভোটের প্রস্তুতি, প্রধান উপদেষ্টার দিক নির্দেশনা, ভোটের সম্ভাব্য সময় ২০২৬ সালের শুরু নাকি ফেব্রুয়ারি, কিংবা এপ্রিলের প্রথমার্ধ তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে কথা বলেন নাসির উদ্দিন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক মাস পর বিদায় নেন তৎকালীন ইসি। এরপর নভেম্বরে নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে বর্তমান ইসি যোগ দেয়; যাদের হাতে রয়েছে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ভার।

 

মুখে কুলুপ, কোথায় ছিলেন তিনি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পর চার দিন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি সিইসি। নির্বাচন কমিশনে চার নির্বাচন কমিশনার এলেও তিনি আসেননি।

স্মিত হেসে সিইসি বলেন, “শারীরিকভাবে আমি একটু অসুস্থ আছি। দু’তিন দিন আমি হাসপাতালে (সিএমএইচ) ছিলাম। সেখানে শুয়ে শুয়ে যেসব নিউজ আমি দেখছিলাম, আমি নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করলাম।”

একটি হাদিসের উদ্ধৃতি টেনে তিনি বলেন, “এজন্য বলা রয়েছে ’তোমরা অনুমান দ্বারা পরিচালিত হইও না’।“

হাসতে হাসতে তিনি বলেন, “এ অনুমানের মধ্যে দেখলাম কেউ কেউ আমাকে পদত্যাগ করিয়ে দিয়েছে। কেই কেউ বলে (প্রধান উপদেষ্টার সাথে) আমি কথা বলার পর অসুস্থ হয়ে গেছি। নানা ধরনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ।”

বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ হলেও শুক্রবার হাসপাতালে যাওয়ার বিষয়য়টি পূর্ব নির্ধারিত থাকার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, “শুক্রবার আমি হাসপাতালে চলে গিয়েছি। তাই আপনাদের সাথে কথা বলতে পারিনি। এখন প্রতি পদে পদে জানিয়ে জানিয়ে চলাফেরা করতে পারব না আমি।

”জেলখানার কয়েদির মত কোথায় গেলাম, প্রত্যেকটা পদক্ষেপ জানিয়ে যেতে হবে বুঝলাম না, (হাসতে হাসতে) আমার কি অসুস্থ হওয়ার অধিকার নেই?”

চিকিৎসার পর এখন ভালো থাকার কথা বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য কমিশন স্বউদ্যোগে সময় চেয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, “দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করা হয়নি। রাষ্ট্রাচারের নিয়ম হচ্ছে- উনার সাথে সাক্ষাত করতে হলে, আমি চিকিৎসা করতে যাব, এজন্য আমার অফিস থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে, একটা সৌজন্য সাক্ষাৎতের সূচির বিষয়ে, ব্যস–হয়েছে।”

 

‘উনিও নিরপেক্ষ, আমিও নিরপেক্ষ’

প্রধান উপদেষ্টা ও সিইসির সাক্ষাতের বিষয়বস্তু কোনো তরফ থেকেই জানানো হয়নি। এরপর সবার নজর ছিল ইসির দিকে। এ কারণে সিইসি অফিসে আসার পর জড়ো হন সংবাদকর্মীরা। বিকালে কথা বলেন তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দিন বলেন, “আপনারা (সংবাদমাধ্যম) প্রায়শ বলেন সরকারের সাথে কথা (ইসির) কথা হয়েছে কিনা। সরকারতো প্রধান উপদেষ্টা একজন নন, সরকার ব্যাপক অর্থে বোঝায়। আমাদের অফিসাররা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথেও কথা বলে, তাও সরকারের সাথে কথা বলা। বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলা হয়। শুধু প্রধান উপদেষ্টার সাথে কথা বলা সরকারের সাথে যোগাযোগ নয়।

“এটা ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ। দায়িত্ব নেওয়ার পরে আমার সাথে ফরমালি কোনো বৈঠক হয়নি। উনিও (প্রধান উপদেষ্টা) নিরপেক্ষ, আমিও নিরপেক্ষ।”

সিইসি বলেন, দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকলে সাধারণ সিইসির সঙ্গে সরকারপ্রধানের দেখা হয়না। সরকারপ্রধান দলীয় প্রধান হলে তিনি নিজের জন্য নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। সেজন্য সরাসরি দেখা না হওয়াই মূল কারণ।

“এখানে আমি যেমন নিরপেক্ষ, উনিও নিরপেক্ষ। এটা একদম সৌজন্য সাক্ষাত।”

এ সাক্ষাতে ভোটের বিষয় উঠে এসেছিল কিনা এমন জিজ্ঞাসার জবাবে নাসির উদ্দিন বলেন, “উনি প্রধান উপদেষ্টা এবং নির্বাচনটা আলোচনার মূল কেন্দ্রে, আমি সিইসি; সুতরাং এ সৌজন্য সাক্ষাৎকারে স্বভাবতই সাইড টক হিসেবে কিছুটাতো আসেই। আমি কোনো এজেন্ডা নিয়ে আলোচনায় যাইনি।”

কথা প্রসঙ্গে নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তুলে ধরেন তিনি।

 

ফুল গিয়ারে ভোটের প্রস্তুতিতে ইসি

প্রধান উপদেষ্টাকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে অবহিত করার কথা তুলে ধরে সিইসি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা জাতিকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দিতে চান। তিনি জানতে চাইলেন, আমাদের প্রস্তুতি আছে কিনা? শুধু এটুকু উনি জানতে চেয়েছিলেন। আমরা বলছি যে, আমরা প্রস্তুতি ফুল গিয়ারে নিচ্ছি।

”নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মধ্যেই কিন্তু আমরা প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছি বিভিন্ন বিষয়ে, যাতে নির্বাচনটা সরকার যখন করতে চায়, যখন নির্ধারিত হয়, সাথে আমরা নির্বাচনটা করতে পারি।“

 

’তারিখ নিয়ে আলোচনা হয়নি, ভোটের তারিখ দেবে ইসি’

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে আলোচনা না হওয়ার কথা বলেন সিইসি। বলেন, “ওটা আমার উদ্দেশ্যও ছিল না। নির্বাচনের তারিখ এবং শিডিউল আপনারা যথাসময় পাবেন, জানতে পারবেন।”

ভোটের তফসিল নির্বাচন কমিশনই ঘোষণা করবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, “একটু অপেক্ষা করতে হবে, ধৈর্যের বাধ ভেঙে গেলে হবে না।”

গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অত্যন্ত আন্তরিক বলেও তুলে ধরেন তিনি।

“এই সুযোগে এ সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আমি বুঝতে পেরেছি উনি অত্যন্ত আন্তরিক, একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশন যাতে হয় এবং একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে হয়। এ ব্যাপারে উনার আন্তরিকতা প্রশ্নাতীত। যেমন আমাদের আন্তরিকতা প্রশ্নাতীত।”

প্রধান উপদেষ্টা ইসিকে কোনো দলের জন্য কাজ করতেও বলেননি বলে মন্তব্য করেন সিইসি।

 

অগ্রাধিকারে জাতীয় নির্বাচন, স্থানীয় নয়

ইসির প্রস্তুতি জানতে চাওয়ার পাশাপাশি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশনাও দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

সিইস বলেন, “আমার তো বলতে দ্বিধা নেই- উনি এ পর্যন্ত কোনদিন আমাদেরকে কোনো দলের জন্য কাজ করার জন্য বা ফেভার করার জন্য বলেননি। প্রধান উপদেষ্টা আন্তরিকতার সাথে একটা নিউট্রাল ফ্রি ফ্রেয়ার ক্রেডিবল ইলেকশন জাতিকে উপহার দিতে চান, সৌজন্য সাক্ষাতে উনি এরকম একটা আভাস দিয়েছেন।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের এ মুহূর্তে প্রস্তুতি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। যা নিচ্ছি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি নিচ্ছি, স্থানীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের প্রস্তুতিও নেই। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে হয় যদি হয়, আমাদের ভোটার তালিকা ও নির্বাচনি মালামাল ব্যবহার করতে পারব না? সেটা হতেই পারে। কিন্তু আমাদের ফোকাস এ মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই নিয়েছি।“

প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে দেশে-বিদেশে প্রতিশ্রুতবদ্ধ বলে তুলে ধরেন তিনি।

“প্রধান উপদেষ্টা স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলছেন না। উনি জাতিকে যে ওয়াদা দিচ্ছেন দেশে বিদেশে, সেখানে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলছেন না, উনি জাতীয় নির্বাচনের কথাই বলছেন। উনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরাও জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

 

তবে ভোট কখন?

এপ্রিলের প্রথমার্ধে ভোটের সম্ভাব্য সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পর লন্ডন বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে তা আয়োজনের কথা এসেছে।

এমন পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ভোটের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানতে পেরেছেন কিনা? জানতে চাইলে সিইসি বলেন, “সম্ভাব্য সময় আপনারা যেটুকু জানেন আমিও সেটাই জানি। প্রথমেই উনি বলেছিলেন এপ্রিলের প্রথমার্ধে, পরে লন্ডনে ফেব্রুয়ারির কথা। আজ টিভিতে দেখলাম-মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে আগামী বছরের প্রথম দিকে বলেছেন। কিন্তু আমার সাথে তারিখ, সম্ভাব্য সময় নিয়ে কোনো কথা হয়নি।”

এসময় প্রস্তুতি কোন সময়কে ঘিরে চলছে জানতে চান সাংবাদিকরা। তখন তিনি বলেন, “ওই দুটো ট্রাইম ফ্রেমকে (ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিল) সামনে রেখেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। দ্রুত সম্ভব আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি, যাতে সরকার যখনই করতে চায়, আমরা নির্বাচন করতে পারি।”

 

ইসি পুনর্গঠন

নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির নেতারা সবশেষ ২২ জুন বলেন, বর্তমান ইসি পুনর্গঠন হবেই, কোনো ‘প্লান বি’ নেই।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিইসি বলেন, “রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। তারা নানা ধরনের বক্তব্য দিতে পারে। রাজনৈতিক দলতো কত রকমের কথাই বলে। যখন দাবি জানিয়েছে, আমিও শুনছি, গণমাধ্যমে দেখেছি। রাজনৈতিক বক্তব্য বলে আমরা মনে করি।”

ইসি পুনর্গঠনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার তরফ থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছে- সংবাদমাধ্যমে এমন খবর এসেছে। এমন কোনো বার্তা সিইসিকে দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চান আরেক সাংবাদিক।

নাসির উদ্দিন বলেন, “নিশ্চিত করছি, এ ধরনের কোনো বার্তা (ইসি পুনর্গঠন করা হবে) আমাকে তো দেওয়া হয়নি। কেন দেবে? আমরা কোনো ইলেকশন করেছি? ইলেকশন রিগিং করেছি বা কোনো পক্ষপাতিত্ব করেছি? আমরা কি জোর করে কেউ এ চেয়ারে বসে গেছি? বিদ্যমান আইনে যথাযথ প্রক্রিয়ায়, একটা সিলেকশন প্রসেসের মাধ্যমে আমরা এসেছি। আমরাতো কোনো উড়ে এসে জুড়ে বসিনিতো।”

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারের সময় আমাদের নিয়োগ দিয়ে গেছে এমন নয়। আমরা ৫ অগাস্টের পরে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আমরা নিয়োগপ্রাপ্ত। নানাবিধ কথা বলতেই পারে। আমি নিশ্চিত, আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা দিনশেষে মঙ্গল চায়, সবাই সমঝোতায় আসবেন।”

রাজনীতিবিদদের প্রতি আস্থাশীল ও সমঝোতার মাধ্যমে সব কিছুর সুরাহা হয়ে যাবে বলে আশা রাখেন সিইসি।

রাজনৈতিক দলগুলো ইসির প্রতি আস্থা রাখছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ইসির পরিকল্পনা রয়েছে। সে অনুযায়ী আগাচ্ছি। রাজনৈতিক দলগুলো যখন আমাদের কর্মকাণ্ড দেখবে, নিরপেক্ষভাবে আমাদের কাজ দেখবে; অবশ্যই উনাদের আস্থা, বিশ্বাস সৃষ্টি হবে। আমরা কারো কোনো খাতির করছি না।”

স্বাভাবিকভাবে ভোটের মাস দুয়েক আগে তফসিল দেওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি।

 

কারাগারে দুই সাবেক সিইসি

একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী সিইসি কে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বর্তমান সিইসি বলেন, “এটা বিচারাধীন বিষয়। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।”

সূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

 

 

নিউজ ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম