০২:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

জ্বালানি তেলে সরকার ভর্তুকি দেয় না : প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদ দাতা
  • আপডেট সময় ০৯:৪৩:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মে ২০২৩
  • / ৮৪ বার পড়া হয়েছে

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে জ্বালানি তেলে লোকসানে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, জ্বালানি তেলে সরকার বর্তমানে সরাসরি কোনও ভর্তুকি দেয় না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান থাকায় ২০২২-২৩ অর্থবছরেও বিপিসির লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে।

বুধবার (৩১ মে) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে এ প্রশ্ন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করে। তারপরও ওই অর্থবছরে বিপিসি প্রায় ২ হাজার ৭০৫ কোটি টাকার লোকসান দিয়েছে। এখানে বিপিসি সরকার থেকে কোনো ভর্তুকি না নিয়েও আগের মুনাফা থেকে এ লোকসান বহন করেছে।

তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান থাকায় ২০২২-২৩ অর্থবছরেও বিপিসির লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে। এ অর্থবছরেও বিপিসি সরকারের থেকে ভর্তুকি নেয়নি। আগের মুনাফা হতে লোকসান বহন করা হচ্ছে। নসরুল হাসিদ বলেন, বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি চালু হওয়ার পর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত সব ধরনের ট্যাক্স দিয়ে সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে তিন হাজার ৫১৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা। নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের উত্তরে নসরুল হামিদ জানান, ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৭ কোটি ৮৯ লাখ লাখ ৯ হাজার টাকা মুনাফা করেছে, যা ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় ১৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা বেশি। ওই অর্থবছরে সরকারের মুনাফা অর্জন করেছিল ৩২ কোটি ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, গ্যাস খাতের উন্নয়নে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশে বিদেশি কোম্পানিগুলো তিন হাজার ৪৮৩ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করেছে। সাতটি বিদেশি কোম্পানি দেশে বিনিয়োগ করেছে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে আমেরিকার তেল-গ্যাস কোম্পানি শেভরণ সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করেছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি জানান, এ কোম্পানি দুই হাজার ৯৪১ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি তাল্লো ২৩৬ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ডলার, একই দেশের কেয়ার্ন এনার্জির বিনিয়োগ ২৪২ দশমিক শূন্য ৭ মিলিয়ন ডলার। চতুর্থ সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করেছে ভারতীয় ওএনজিসি কোম্পানি। এ কোম্পানির বিনিয়োগের পরিমাণ ৪৫ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানকোফিলিপস ৬ দশমিক ২২ মিলিয়ন, অস্ট্রেলিয়ার সান্তোস ৫ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলার ও দক্ষিণ কোরিয়ার পোসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন বাংলাদেশে ৫ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। নসরুল হামিদ বলেন, দেশের গ্যাস চাহিদা মেটানোর জন্য এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্তের কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০-এর আলোকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান এলএনজি স্থাপন করা হয়। এক্ষেত্রে সরকার বা পেট্রোবাংলার কোনো অর্থ খরচ হয়নি। তবে এলএনজি ব্যবহারের জন্য পেট্রোবাংলা নির্ধারিত ফি দিচ্ছে।

আগামী ১৫ বছর পর এলএনজি টার্মিনাল দুটির মালিকানা সরকার বা প্রেট্রোবাংলার কাছে ন্যস্ত হবে। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শাহে আলমের এক প্রশ্নের উত্তরে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে ১১৬৯ দশমিক ৭৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। যার মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ থেকে অফ গ্রিডে ৩৫৭ দশমিক শূন্য ৯ মেগাওয়াট এবং অন-গ্রিডে ৫৭৮ দশমিক ৬৬ মেগাওয়াটসহ মোট ৯৩৫ দশমিক ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

জ্বালানি তেলে সরকার ভর্তুকি দেয় না : প্রতিমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৯:৪৩:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মে ২০২৩

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে জ্বালানি তেলে লোকসানে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, জ্বালানি তেলে সরকার বর্তমানে সরাসরি কোনও ভর্তুকি দেয় না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান থাকায় ২০২২-২৩ অর্থবছরেও বিপিসির লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে।

বুধবার (৩১ মে) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে এ প্রশ্ন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করে। তারপরও ওই অর্থবছরে বিপিসি প্রায় ২ হাজার ৭০৫ কোটি টাকার লোকসান দিয়েছে। এখানে বিপিসি সরকার থেকে কোনো ভর্তুকি না নিয়েও আগের মুনাফা থেকে এ লোকসান বহন করেছে।

তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান থাকায় ২০২২-২৩ অর্থবছরেও বিপিসির লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে। এ অর্থবছরেও বিপিসি সরকারের থেকে ভর্তুকি নেয়নি। আগের মুনাফা হতে লোকসান বহন করা হচ্ছে। নসরুল হাসিদ বলেন, বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি চালু হওয়ার পর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত সব ধরনের ট্যাক্স দিয়ে সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে তিন হাজার ৫১৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা। নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের উত্তরে নসরুল হামিদ জানান, ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৭ কোটি ৮৯ লাখ লাখ ৯ হাজার টাকা মুনাফা করেছে, যা ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় ১৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা বেশি। ওই অর্থবছরে সরকারের মুনাফা অর্জন করেছিল ৩২ কোটি ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, গ্যাস খাতের উন্নয়নে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশে বিদেশি কোম্পানিগুলো তিন হাজার ৪৮৩ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করেছে। সাতটি বিদেশি কোম্পানি দেশে বিনিয়োগ করেছে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে আমেরিকার তেল-গ্যাস কোম্পানি শেভরণ সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করেছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি জানান, এ কোম্পানি দুই হাজার ৯৪১ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি তাল্লো ২৩৬ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ডলার, একই দেশের কেয়ার্ন এনার্জির বিনিয়োগ ২৪২ দশমিক শূন্য ৭ মিলিয়ন ডলার। চতুর্থ সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করেছে ভারতীয় ওএনজিসি কোম্পানি। এ কোম্পানির বিনিয়োগের পরিমাণ ৪৫ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানকোফিলিপস ৬ দশমিক ২২ মিলিয়ন, অস্ট্রেলিয়ার সান্তোস ৫ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলার ও দক্ষিণ কোরিয়ার পোসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন বাংলাদেশে ৫ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। নসরুল হামিদ বলেন, দেশের গ্যাস চাহিদা মেটানোর জন্য এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্তের কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০-এর আলোকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান এলএনজি স্থাপন করা হয়। এক্ষেত্রে সরকার বা পেট্রোবাংলার কোনো অর্থ খরচ হয়নি। তবে এলএনজি ব্যবহারের জন্য পেট্রোবাংলা নির্ধারিত ফি দিচ্ছে।

আগামী ১৫ বছর পর এলএনজি টার্মিনাল দুটির মালিকানা সরকার বা প্রেট্রোবাংলার কাছে ন্যস্ত হবে। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শাহে আলমের এক প্রশ্নের উত্তরে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে ১১৬৯ দশমিক ৭৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। যার মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ থেকে অফ গ্রিডে ৩৫৭ দশমিক শূন্য ৯ মেগাওয়াট এবং অন-গ্রিডে ৫৭৮ দশমিক ৬৬ মেগাওয়াটসহ মোট ৯৩৫ দশমিক ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।