১১:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের ইংলিশ বধ

নিজস্ব সংবাদ দাতা
  • আপডেট সময় ০৯:৫২:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০২৩
  • / ১৩২ বার পড়া হয়েছে

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ইংল্যান্ডের দেওয়া ১৫৭ রানের লক্ষ্য দুই ওভার হাতে রেখেই ৬ উইকেটের দুরন্ত এক জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।

আজ বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চোধুরী স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের দেওয়া ১৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদারের ব্যাটে শুরুটা দারুণ হয়েছিল বাংলাদেশের। তবে সে ধারাটা ঠিক ধরে রাখতে পারেনি টাইগাররা। ফলে দলীয় ৩৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আদিল রশিদের ঘুর্ণি বল ডিফেন্স করতে গিয়ে ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক দিয়ে বোল্ড হয়ে যান দীর্ঘ ৮ বছর পর জাতীয় দলে ফেরা রনি। বিদায়ের আগে চার বাউন্ডারিতে ২১ রান করেন তিনি। এর আগে ২০১৫ সালে একমাত্র ম্যাচেও ২২ বলে ২১ রান করেছিলেন রনি।

রশিদের করা ওই ওভারেই আউট হতে হতেও বেঁচে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়লে আম্পায়ার আউট দিয়ে দিয়েছিলেন। যদিও পরে রিভিউ নিয়ে শেষ রক্ষা হয় শান্তর। আল্ট্রাএজে দেখা যায়, গ্লাভস স্পর্শ করেছিল বল। তাতে জীবন পেয়ে শান্ত যেন অশান্ত হয়ে ওঠেন। তবে লিটন বেশিক্ষন স্থায়ী হতে পারেননি। ওয়ানডে সিরিজে বাজে পারফরম্যান্স দেখানো দেশসেরা ব্যাটার লিটন আজ প্রথম টি-টোয়েন্টিতে শুরু থেকেই দর্শনীয় সব শটে ছন্দে ফেরার বার্তা দিচ্ছিলেন। যদিও বেশিক্ষণ বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। আর্চারকে পুল করতে গিয়ে মিডঅনে ওকসের হাতে ধরা পড়েন। ১০ বলে দুটি চারে লিটন করেন ১২ রান।

এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটে রান তাড়ার পথ সহজ করে দেন। তাদের ৬৫ রানের জুটিতে জয়ের পথে এগিয়ে যায় টাইগাররা। কিন্তু দলীয় ১০৮ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নে ফিরে যান অভিষিক্ত হৃদয়। বিদায়ের আগে ১৭ বলে ২ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ২৪ রান করেন তিনি। এরপর ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন শান্ত। তবে ঠিক পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ইংলিশ পেসার মার্ক উডের বলে বিদায়ের আগে ৩০ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ৫১ রান করেন তিনি। এরপর বাকি কাজটুকু আফিফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে সহজেই উতরে যান সাকিব আল হাসান।

শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে সাকিবের ২৪ বলে ৩৪ ও আফিফের ১৩ বলে ১৫ রানে ভর করে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। এর আগে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে বেশ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাটিং করছিল ইংলিশ দুই ওপেনার জস বাটলার ও ফিল সল্ট। ফলে পাঁচ ওভার যেতে না যেতেই রান ৪৪ হয়ে যায়। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে জোড়া ক্যাচ মিস করে ফেলে বাংলাদেশ। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে ফিল সল্ট বোলার নাসুমের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। তবে বাঁহাতি এই স্পিনার নিচু হয়ে হাত লাগালেও সেই ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি। একই ওভারে ইংলিশ অধিনায়ক বাটলারও ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু বেশ উঁচু হয়ে আসা বল টাইগার দলপতি সাকিবও তা ফেলে দেন। ফলে ছয় ওভার শেষে বিনা উইকেটে ৫১ রান করেছে সফরকারীরা।

এরপর কিছুটা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন সাকিব-নাসুমরা। তবে ইংল্যান্ডের ইনিংসে দলের রান ৮০ হয়ে গিয়েছিল। তবে ওভারের শেষ বলে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। উইকেটের পিছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে দেন সল্ট। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর ইংলিশ ওপেনার রিভিউ নিয়েও নিজের ইনিংস ফেরত পাননি। সল্ট ৩৫ বলে চার বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৩৮ রান করেন। এরপর ১২তম ওভারে এসে ডেভিড মালানের উইকেট তুলে নেন সাকিব। তার স্পিন ঘুর্ণির বল সামনে এসে টেনে মারতে গিয়ে লং অনে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দেন। বিদায়ের আগে ৭ বলে মাত্র ৪ রান করেন তিনি।

এরপর ১৩তম ওভারে হাসান মাহমুদকে টানা দুই ছক্কার মেরে নিজের ফিফটির সঙ্গে ইংল্যান্ডের দলীয় ১০০ পেরিয়ে নিয়ে যান বাটলার। দলীয় ১৩৫ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ১৬তম ওভারের শেষ বলে মোস্তাফিজের শিকারে পরিণত হন তিনি। ফিজের ক্রস সিমের বলটি নিচু হয়েছিল বেশ, আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে নাগালই পাননি ডাকেট। তাতে ১৩ বলে ২০ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। আগের ওভারের শেষ বলে মোস্তাফিজের শিকার ডাকেট, পরের ওভারের প্রথম বলে হাসান মাহমুদের বলে ফিরলেন বাটলার।

লং অন দিয়ে টেনে মারার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে ইংল্যান্ড অধিনায়কের, ৪২ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলেছেন এর আগে। ফলে টানা বলে উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় ইংল্যান্ড। এরপর শেষ দিকে মঈন আলী ৮, স্যাম কারান ৬, ক্রিস ওকস ১ ও ক্রিস জর্ডানের ৫ রানে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান করেছে সফরকারীরা। বোলিংয়ে বাংলাদেশের পক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ। এছাড়া সাকিব, তাসকিন, মোস্তাফিজ ও নাসুম প্রত্যেকে একটি করে উইকেট পান।

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের ইংলিশ বধ

আপডেট সময় ০৯:৫২:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০২৩

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ইংল্যান্ডের দেওয়া ১৫৭ রানের লক্ষ্য দুই ওভার হাতে রেখেই ৬ উইকেটের দুরন্ত এক জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।

আজ বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চোধুরী স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের দেওয়া ১৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদারের ব্যাটে শুরুটা দারুণ হয়েছিল বাংলাদেশের। তবে সে ধারাটা ঠিক ধরে রাখতে পারেনি টাইগাররা। ফলে দলীয় ৩৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আদিল রশিদের ঘুর্ণি বল ডিফেন্স করতে গিয়ে ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক দিয়ে বোল্ড হয়ে যান দীর্ঘ ৮ বছর পর জাতীয় দলে ফেরা রনি। বিদায়ের আগে চার বাউন্ডারিতে ২১ রান করেন তিনি। এর আগে ২০১৫ সালে একমাত্র ম্যাচেও ২২ বলে ২১ রান করেছিলেন রনি।

রশিদের করা ওই ওভারেই আউট হতে হতেও বেঁচে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়লে আম্পায়ার আউট দিয়ে দিয়েছিলেন। যদিও পরে রিভিউ নিয়ে শেষ রক্ষা হয় শান্তর। আল্ট্রাএজে দেখা যায়, গ্লাভস স্পর্শ করেছিল বল। তাতে জীবন পেয়ে শান্ত যেন অশান্ত হয়ে ওঠেন। তবে লিটন বেশিক্ষন স্থায়ী হতে পারেননি। ওয়ানডে সিরিজে বাজে পারফরম্যান্স দেখানো দেশসেরা ব্যাটার লিটন আজ প্রথম টি-টোয়েন্টিতে শুরু থেকেই দর্শনীয় সব শটে ছন্দে ফেরার বার্তা দিচ্ছিলেন। যদিও বেশিক্ষণ বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। আর্চারকে পুল করতে গিয়ে মিডঅনে ওকসের হাতে ধরা পড়েন। ১০ বলে দুটি চারে লিটন করেন ১২ রান।

এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটে রান তাড়ার পথ সহজ করে দেন। তাদের ৬৫ রানের জুটিতে জয়ের পথে এগিয়ে যায় টাইগাররা। কিন্তু দলীয় ১০৮ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নে ফিরে যান অভিষিক্ত হৃদয়। বিদায়ের আগে ১৭ বলে ২ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ২৪ রান করেন তিনি। এরপর ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন শান্ত। তবে ঠিক পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ইংলিশ পেসার মার্ক উডের বলে বিদায়ের আগে ৩০ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ৫১ রান করেন তিনি। এরপর বাকি কাজটুকু আফিফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে সহজেই উতরে যান সাকিব আল হাসান।

শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে সাকিবের ২৪ বলে ৩৪ ও আফিফের ১৩ বলে ১৫ রানে ভর করে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। এর আগে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে বেশ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাটিং করছিল ইংলিশ দুই ওপেনার জস বাটলার ও ফিল সল্ট। ফলে পাঁচ ওভার যেতে না যেতেই রান ৪৪ হয়ে যায়। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে জোড়া ক্যাচ মিস করে ফেলে বাংলাদেশ। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে ফিল সল্ট বোলার নাসুমের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। তবে বাঁহাতি এই স্পিনার নিচু হয়ে হাত লাগালেও সেই ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি। একই ওভারে ইংলিশ অধিনায়ক বাটলারও ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু বেশ উঁচু হয়ে আসা বল টাইগার দলপতি সাকিবও তা ফেলে দেন। ফলে ছয় ওভার শেষে বিনা উইকেটে ৫১ রান করেছে সফরকারীরা।

এরপর কিছুটা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন সাকিব-নাসুমরা। তবে ইংল্যান্ডের ইনিংসে দলের রান ৮০ হয়ে গিয়েছিল। তবে ওভারের শেষ বলে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। উইকেটের পিছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে দেন সল্ট। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর ইংলিশ ওপেনার রিভিউ নিয়েও নিজের ইনিংস ফেরত পাননি। সল্ট ৩৫ বলে চার বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৩৮ রান করেন। এরপর ১২তম ওভারে এসে ডেভিড মালানের উইকেট তুলে নেন সাকিব। তার স্পিন ঘুর্ণির বল সামনে এসে টেনে মারতে গিয়ে লং অনে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দেন। বিদায়ের আগে ৭ বলে মাত্র ৪ রান করেন তিনি।

এরপর ১৩তম ওভারে হাসান মাহমুদকে টানা দুই ছক্কার মেরে নিজের ফিফটির সঙ্গে ইংল্যান্ডের দলীয় ১০০ পেরিয়ে নিয়ে যান বাটলার। দলীয় ১৩৫ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ১৬তম ওভারের শেষ বলে মোস্তাফিজের শিকারে পরিণত হন তিনি। ফিজের ক্রস সিমের বলটি নিচু হয়েছিল বেশ, আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে নাগালই পাননি ডাকেট। তাতে ১৩ বলে ২০ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। আগের ওভারের শেষ বলে মোস্তাফিজের শিকার ডাকেট, পরের ওভারের প্রথম বলে হাসান মাহমুদের বলে ফিরলেন বাটলার।

লং অন দিয়ে টেনে মারার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে ইংল্যান্ড অধিনায়কের, ৪২ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলেছেন এর আগে। ফলে টানা বলে উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় ইংল্যান্ড। এরপর শেষ দিকে মঈন আলী ৮, স্যাম কারান ৬, ক্রিস ওকস ১ ও ক্রিস জর্ডানের ৫ রানে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান করেছে সফরকারীরা। বোলিংয়ে বাংলাদেশের পক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ। এছাড়া সাকিব, তাসকিন, মোস্তাফিজ ও নাসুম প্রত্যেকে একটি করে উইকেট পান।