০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নতুন করে ফল সংশোধনের তথ্য দিয়ে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় বলেছে, এতে ভোটের ফলাফলে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

ডাকসুর ভোটে ‘যোগবিভ্রাট’, দুঃখ প্রকাশ

মইদুল হাসান - জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০২:০১:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রকাশিত ভোটের তথ্য নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগের পর দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

নতুন করে ফল সংশোধনের তথ্য দিয়ে রোববার রাতে বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় বলেছে, এতে ভোটের ফলাফলে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

নিজের প্রাপ্ত ভোটে অসঙ্গতি থাকার কথা তুলে ধরে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে বিজয়ী সর্বমিত্র চাকমা। ফল ঘোষণার সময়ের চেয়ে তার ভোট বেড়ে গেছে।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদের প্রার্থী মোহাম্মদ সাকিব অভিযোগ করেছেন তার ভোট কমে গেছে।

ফেইসবুকে ফলাফলের ক্রুটি তুলে ধরে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) এই প্রার্থী লেখেন, “শিক্ষার্থীদের রায়কে সম্মান জানিয়ে যে কয়জন নির্বাচনকে গ্রহণ করেছে আমি তাদের মধ্যে অন্যতম। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ব্যর্থতাকে আমি দালিলিক প্রমাণ হিসেবে রাখলাম।”

সাকিবের প্রাপ্তভোট ৩ হাজার ৯৬২ এবং প্রকাশিত ফলে রয়েছে ৩৯২২। তিনি ছাত্রশিবিরের জসীমউদ্দিন খানের (৯,৭০৬) কাছে পরাজিত হয়েছেন।

এমন ভুলের বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেন্দ্রগুলো থেকে পাওয়া সব হলের ভোটের ফলাফল যোগ করতে গিয়ে এ গরমিল হয়।

এর প্রেক্ষিতে রোববার প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক জসীম বলেন, “আটটি কেন্দ্রের ভোট যোগ করে ডাকসুর সমন্বিত ফলাফল তৈরির সময় ‘দীর্ঘ বিরতিহীন কর্মসম্পাদনজনিত মানবীয় অবসাদের’ কারণে সামান্য কয়েকটি ক্ষেত্রে যোগবিভ্রাট ঘটে।”

ইতোমধ্যে প্রকাশিত কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলের ভিত্তিতে ডাকসুর সমন্বিত ফলাফল সংশোধন করার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, এই সংশোধনীর কারণে নির্বাচিতদের তালিকায় কোনো পরিবর্তন হয়নি।

এ ‘অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির’ জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্তৃপক্ষ ‘আন্তরিকভাবে দুঃখও’ প্রকাশ করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরা হয়।

ডাকসুতে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনে গত ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি কেন্দ্রে ডাকসু ও হল সংসদের ভোট দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ভোট গণনা শেষে মধ্যরাতের পর সব হল সংসদ নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় সংসদের ফল ঘোষণা করা হয় বুধবার সকালে।

নির্বাচনে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রকাশিত ফলের সঙ্গে হলভিত্তিক অন্তত ১৮জন প্রার্থীর প্রাপ্তভোটে গরমিল দেখতে পাওয়ার তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তাদের একজন হলেন সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদের প্রার্থী মো. লানজু খান। সংশোধনের পর তার প্রাপ্তভোট ১ হাজার ৫৭১; আগে প্রকাশিত ফলে ছিল ১ হাজার ৫৩১। ভোটে অবশ্য তিনি বড় ব্যবধানের পরাজিত হন।

এ নিয়ে ফেইসবুকে পোস্টে ক্ষোভ জানিয়ে তিনি লেখেন, “ডাকসু নির্বাচনের ফলাফলে আমার ভোট ১ হাজার ৫৩১টি হলেও প্রতিটি হলের ভোট গণনা করে আমার ভোট এসেছে ১ হাজার ৫৭১টি। ধন্যবাদ ঢাবি প্রশাসনকে। আপনাদের চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারি।”

অপরদিকে সর্বমিত্র চাকমা ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে বিজয়ী হন। তিনিও ফলাফল বিভ্রাটের তথ্য দিয়েছেন।

ফেইসবুকে তিনি লেখেন, তার প্রাপ্ত ভোট ৯ হাজার ৫৪৮ (সংশোধিত), পূর্বে ঘোষিত ভোট ৮ হাজার ৯৮৮।

“ডাকসুর মতো নির্বাচনে ভোট গণনায় ভুল কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ধরনের ভুল পুরো নির্বাচন তথা শিক্ষক-শিক্ষার্থী-সাংবাদিক-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের অক্লান্ত পরিশ্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে যথেষ্ট। যদিও চিফ রিটার্নিং অফিসার এ বিষয়ে দু:খ প্রকাশ করেছেন।

“ফলাফল ঘোষণার কথা ছিল ৯ সেপ্টেম্বর রাত ১২ টার মধ্যে। প্রশাসন ফল প্রকাশ করতে বাড়তি ৮ ঘণ্টা সময় নিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় ফল প্রকাশ করে, এত কালক্ষেপণ করেও গণনায় ভুল করাটা শোচনীয়।”

 

 

মইদুল হাসান – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

নতুন করে ফল সংশোধনের তথ্য দিয়ে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় বলেছে, এতে ভোটের ফলাফলে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

ডাকসুর ভোটে ‘যোগবিভ্রাট’, দুঃখ প্রকাশ

আপডেট সময় ০২:০১:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রকাশিত ভোটের তথ্য নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগের পর দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

নতুন করে ফল সংশোধনের তথ্য দিয়ে রোববার রাতে বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় বলেছে, এতে ভোটের ফলাফলে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

নিজের প্রাপ্ত ভোটে অসঙ্গতি থাকার কথা তুলে ধরে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে বিজয়ী সর্বমিত্র চাকমা। ফল ঘোষণার সময়ের চেয়ে তার ভোট বেড়ে গেছে।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদের প্রার্থী মোহাম্মদ সাকিব অভিযোগ করেছেন তার ভোট কমে গেছে।

ফেইসবুকে ফলাফলের ক্রুটি তুলে ধরে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) এই প্রার্থী লেখেন, “শিক্ষার্থীদের রায়কে সম্মান জানিয়ে যে কয়জন নির্বাচনকে গ্রহণ করেছে আমি তাদের মধ্যে অন্যতম। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ব্যর্থতাকে আমি দালিলিক প্রমাণ হিসেবে রাখলাম।”

সাকিবের প্রাপ্তভোট ৩ হাজার ৯৬২ এবং প্রকাশিত ফলে রয়েছে ৩৯২২। তিনি ছাত্রশিবিরের জসীমউদ্দিন খানের (৯,৭০৬) কাছে পরাজিত হয়েছেন।

এমন ভুলের বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেন্দ্রগুলো থেকে পাওয়া সব হলের ভোটের ফলাফল যোগ করতে গিয়ে এ গরমিল হয়।

এর প্রেক্ষিতে রোববার প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক জসীম বলেন, “আটটি কেন্দ্রের ভোট যোগ করে ডাকসুর সমন্বিত ফলাফল তৈরির সময় ‘দীর্ঘ বিরতিহীন কর্মসম্পাদনজনিত মানবীয় অবসাদের’ কারণে সামান্য কয়েকটি ক্ষেত্রে যোগবিভ্রাট ঘটে।”

ইতোমধ্যে প্রকাশিত কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলের ভিত্তিতে ডাকসুর সমন্বিত ফলাফল সংশোধন করার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, এই সংশোধনীর কারণে নির্বাচিতদের তালিকায় কোনো পরিবর্তন হয়নি।

এ ‘অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির’ জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্তৃপক্ষ ‘আন্তরিকভাবে দুঃখও’ প্রকাশ করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরা হয়।

ডাকসুতে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনে গত ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি কেন্দ্রে ডাকসু ও হল সংসদের ভোট দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ভোট গণনা শেষে মধ্যরাতের পর সব হল সংসদ নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় সংসদের ফল ঘোষণা করা হয় বুধবার সকালে।

নির্বাচনে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রকাশিত ফলের সঙ্গে হলভিত্তিক অন্তত ১৮জন প্রার্থীর প্রাপ্তভোটে গরমিল দেখতে পাওয়ার তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তাদের একজন হলেন সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদের প্রার্থী মো. লানজু খান। সংশোধনের পর তার প্রাপ্তভোট ১ হাজার ৫৭১; আগে প্রকাশিত ফলে ছিল ১ হাজার ৫৩১। ভোটে অবশ্য তিনি বড় ব্যবধানের পরাজিত হন।

এ নিয়ে ফেইসবুকে পোস্টে ক্ষোভ জানিয়ে তিনি লেখেন, “ডাকসু নির্বাচনের ফলাফলে আমার ভোট ১ হাজার ৫৩১টি হলেও প্রতিটি হলের ভোট গণনা করে আমার ভোট এসেছে ১ হাজার ৫৭১টি। ধন্যবাদ ঢাবি প্রশাসনকে। আপনাদের চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারি।”

অপরদিকে সর্বমিত্র চাকমা ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে বিজয়ী হন। তিনিও ফলাফল বিভ্রাটের তথ্য দিয়েছেন।

ফেইসবুকে তিনি লেখেন, তার প্রাপ্ত ভোট ৯ হাজার ৫৪৮ (সংশোধিত), পূর্বে ঘোষিত ভোট ৮ হাজার ৯৮৮।

“ডাকসুর মতো নির্বাচনে ভোট গণনায় ভুল কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ধরনের ভুল পুরো নির্বাচন তথা শিক্ষক-শিক্ষার্থী-সাংবাদিক-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের অক্লান্ত পরিশ্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে যথেষ্ট। যদিও চিফ রিটার্নিং অফিসার এ বিষয়ে দু:খ প্রকাশ করেছেন।

“ফলাফল ঘোষণার কথা ছিল ৯ সেপ্টেম্বর রাত ১২ টার মধ্যে। প্রশাসন ফল প্রকাশ করতে বাড়তি ৮ ঘণ্টা সময় নিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় ফল প্রকাশ করে, এত কালক্ষেপণ করেও গণনায় ভুল করাটা শোচনীয়।”

 

 

মইদুল হাসান – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম