এর মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ছয়টি বিষয়কে 'হ্যাঁ' এবং ছয়টি বিষয়কে 'না' বলবে তারা।
ডাকসু নির্বাচন: ৩৬ সংস্কারের প্রতিশ্রুতি ছাত্রশিবিরের প্যানেলের

- আপডেট সময় ০৪:৩৫:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৩ বার পড়া হয়েছে
কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি, গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতি এবং ইসলামফোবিয়া ও সাইবার বুলিংসহ ছয়টি বিষয়কে সব সময় ‘না’ বলার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’।
তারা ইশতেহারে বলেছে, ১২ মাসে ৩৬টি সংস্কার তারা করতে চায়। এর মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ছয়টি বিষয়কে ‘হ্যাঁ’ এবং ছয়টি বিষয়কে ‘না’ বলবে তারা।
এ প্যানেল যেসব বিষয়ে ‘হ্যাঁ’ বলবে সেগুলো হল- নিরাপদ ক্যাম্পাস; আবাসন সংকট সমাধান; নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা; চিকিৎসা সুবিধা ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার; উন্নত পরিবহন এবং ক্যারিয়ার গঠনে পর্যাপ্ত তথ্য ও সেবা।
যে ছয় বিষয়ের বিরুদ্ধে সব সময় তারা অবস্থান নেবে-সেগুলোর মধ্যে আছে- কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি, নির্যাতন ও সহিংসতা; গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতি; বৈষম্যমূলক নীতি ও আচরণ; মাদক, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি; ‘লাঞ্চের পরে আসেন’ সংস্কৃতি; ইসলামফোবিয়া ও সাইবার বুলিং।
সোমবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার পাঠ করেন ডাকসু নির্বাচনে ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ এর এজিএস প্রার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান।
ছাত্রশিবির মনোনীত এ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম বলেন,
“আমরা ৩৬টি সংস্কারের কথা বলেছি, তার ব্যাপারে বিস্তারিত আমাদের ওয়েবসাইটেও দেওয়া আছে। কোন মাসে কী করবো, তাও বলেছি।
৬টি হ্যাঁ এবং ৬টি না- আমাদের মূল ফোকাস।”
জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদ বলেন, “৩৬ জুলাইকে মাথায় রেখে আমরা ৩৬টি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। স্বপ্নের ক্যাম্পাস গড়ার পথযাত্রী আমরা থামব না।”
নির্বাচন যথা সময়ে হওয়া নিয়ে কোনো অনিশ্চিয়তা আছে কিনা? প্রশ্নে ফরহাদ বলেন, “আমরা মনে করি নির্বাচন যথা সময়েই হবে।”
নির্বাচনের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ না করার পক্ষে তাদের অবস্থান বলে তুলে ধরেন তিনি।
এ প্যানেলের ইশতেহারে ডাকসু নির্বাচনকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারের অন্তর্ভুক্ত করে প্রতি বছর নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন বাস্তবায়নের করার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হয়েছে।
একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘ফ্যাসিবাদের’ দোসরমুক্ত করা এবং ফ্যাসিবাদের চিহ্ন ও ফ্যাসিবাদী কাঠামো, ব্যবস্থা, সংস্কৃতি ও চর্চার পুনরুৎপাদন রোধ করা। গেস্টরুম, গণরুম সংস্কৃতি ফিরে আসার সব পথ রুদ্ধ করার কথাও বলা হয়েছে ইশতেহারে।
পাশাপাশি প্রথম বর্ষ থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বৈধ সিট নিশ্চিত করা। আবাসন সংকটের অস্থায়ী সমাধান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে অস্থায়ী হোস্টেল বা মাসিক আবাসন ভাতার বাবস্থা করা এবং স্থায়ী সমাধান হিসেবে হল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা।
এ প্যানেলের সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর পরই হাই কোর্টের নির্দেশনায় ডাকসু নির্বাচন স্থগিতের খবর আলোচনা তৈরি করে।
আধা ঘণ্টা পর একই জায়গায় আবারও ফিরে আসেন ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’।
ডাকসু ভবনের সামনে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে এস এম ফরহাদ বলেন, “ডাকসু নির্বাচন যথা সময়েই হবে। আমরা জানি কারা নির্বাচনকে ভয় পাই। ৯ সেপ্টেম্বর নির্বাচন হবে এবং শিক্ষার্থীরা তাদেরকে লাল কার্ড দেখাবে।
সাদিক কায়েম বলেন, যারা নির্বাচন বন্ধ করতে চায় শিক্ষার্থীরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।
পরে তারা মিছিল নিয়ে ডাকসু, কলাভবনের সামনে দিয়ে ভিসি বাংলোর দিকে যায়।
১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্তৃক নৃশংস হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আইনি শাস্তি নিশ্চিত করা। একই সাথে সাম্য, মোফাজ্জল ও আবু বকর হত্যাসহ ফ্যাসিবাদী আমলে সংঘটিত সকল নিপীড়নের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা।
মইদুল হাসান – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম