১২:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ডেঙ্গুর অশনি সংকেত; সাতদিনে ১৮ জনের মৃত্যু

বিশেষ প্রতিবেদন
  • আপডেট সময় ১১:৫৬:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ জুলাই ২০২৩
  • / ১২৫ বার পড়া হয়েছে

দেশজুড়ে ফের উদ্বেগজনক হারে বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে রাজধানী ঢাকার বাসিন্দারা। কিন্তু ডেঙ্গু মোকাবিলায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম হতাশ করছে মানুষকে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুসারে, জুলাইয়ের প্রথম সাতদিনে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৩২০ জন। আর এই সময়ের মধ্যে ১৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে।

ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই গত পাঁচ বছরের হিসাব টপকে বেশ বিপজ্জনক মাত্রায় অবস্থান করছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১১২৯৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বাংলাদেশে ষাটের দশকে প্রথম ডেঙ্গু শনাক্তের পর পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালেই পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। সেবার ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, তাদের মধ্যে মৃত্যু ঘটে ১৭৯ জনের। আক্রান্ত এবং মৃতদের বেশিরভাগই ছিল রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা।

ওই বছর প্রাক-বর্ষা মৌসুম জরিপে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ২১টি ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ছিল ২০ এর বেশি। আর চলতি বছর প্রাক-বর্ষা মৌসুম জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, এবার তার দ্বিগুণের বেশি ৫৫টি ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ২০ এর উপরে।

দুই সিটির গড় ব্রুটো ইনডেক্সই ২০ এর বেশি, ডিএনসিসি এলাকায় ২৫ দশমিক ৫২ এবং ডিএসসিসি এলাকায় ২০ দশমিক ৯৮। দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯৮টিতে গত ১৮ থেকে ২৭ জুন এই জরিপ পরিচালনা করা হয়।

ডেঙ্গুতে শিশু-তরুণেরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, ‘ডেঙ্গুর ধরন চারটি। ডেনভি ১, ডেনভি ২, ডেনভি ৩ এবং ডেনভি ৪। যারা ১৫ বছর আগে ডেনভি ১,১২ বছর আগে ডেনভি ২ এবং ৮ বছর আগে ডেনভি ৩ ধরনে আক্রান্ত হয়েছেন তারা এবার শুধু ডেনভি ৪ ধরনে আক্রান্তের ঝুঁকিতে রয়েছে। আর যারা শিশু-তরুণ তারা কিন্তু এর আগে আক্রান্ত হয়নি। কিংবা আক্রান্ত হলেও একবার আক্রান্ত হয়েছে। তাই তাদের আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি। আক্রান্তের সংখ্যা যেহেতু বেশি তাই শিশু-তরুণদের মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি।

এদিকে, হাসপাতালগুলোতে প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। প্রতি দুই মিনিটে কোনো না কোনো হাসপাতালে একজন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। ঢাকার ডেঙ্গু রোগী ভর্তি করে এমন হাসপাতালের নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে ঠাঁই নেই অবস্থা। যার ফলে মেঝেতে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে রোগীদের।

মুগদা হাসপাতালে বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ড, সোহরাওয়ার্দী, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের নির্ধারিত ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

ডেঙ্গুর অশনি সংকেত; সাতদিনে ১৮ জনের মৃত্যু

আপডেট সময় ১১:৫৬:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ জুলাই ২০২৩

দেশজুড়ে ফের উদ্বেগজনক হারে বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে রাজধানী ঢাকার বাসিন্দারা। কিন্তু ডেঙ্গু মোকাবিলায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম হতাশ করছে মানুষকে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুসারে, জুলাইয়ের প্রথম সাতদিনে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৩২০ জন। আর এই সময়ের মধ্যে ১৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে।

ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই গত পাঁচ বছরের হিসাব টপকে বেশ বিপজ্জনক মাত্রায় অবস্থান করছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১১২৯৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বাংলাদেশে ষাটের দশকে প্রথম ডেঙ্গু শনাক্তের পর পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালেই পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। সেবার ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, তাদের মধ্যে মৃত্যু ঘটে ১৭৯ জনের। আক্রান্ত এবং মৃতদের বেশিরভাগই ছিল রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা।

ওই বছর প্রাক-বর্ষা মৌসুম জরিপে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ২১টি ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ছিল ২০ এর বেশি। আর চলতি বছর প্রাক-বর্ষা মৌসুম জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, এবার তার দ্বিগুণের বেশি ৫৫টি ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ২০ এর উপরে।

দুই সিটির গড় ব্রুটো ইনডেক্সই ২০ এর বেশি, ডিএনসিসি এলাকায় ২৫ দশমিক ৫২ এবং ডিএসসিসি এলাকায় ২০ দশমিক ৯৮। দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯৮টিতে গত ১৮ থেকে ২৭ জুন এই জরিপ পরিচালনা করা হয়।

ডেঙ্গুতে শিশু-তরুণেরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, ‘ডেঙ্গুর ধরন চারটি। ডেনভি ১, ডেনভি ২, ডেনভি ৩ এবং ডেনভি ৪। যারা ১৫ বছর আগে ডেনভি ১,১২ বছর আগে ডেনভি ২ এবং ৮ বছর আগে ডেনভি ৩ ধরনে আক্রান্ত হয়েছেন তারা এবার শুধু ডেনভি ৪ ধরনে আক্রান্তের ঝুঁকিতে রয়েছে। আর যারা শিশু-তরুণ তারা কিন্তু এর আগে আক্রান্ত হয়নি। কিংবা আক্রান্ত হলেও একবার আক্রান্ত হয়েছে। তাই তাদের আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি। আক্রান্তের সংখ্যা যেহেতু বেশি তাই শিশু-তরুণদের মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি।

এদিকে, হাসপাতালগুলোতে প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। প্রতি দুই মিনিটে কোনো না কোনো হাসপাতালে একজন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। ঢাকার ডেঙ্গু রোগী ভর্তি করে এমন হাসপাতালের নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে ঠাঁই নেই অবস্থা। যার ফলে মেঝেতে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে রোগীদের।

মুগদা হাসপাতালে বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ড, সোহরাওয়ার্দী, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের নির্ধারিত ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।