ঢাকার তাপমাত্রা কমাতে ‘চিফ হিট অফিসার’ নিয়োগ
- আপডেট সময় ১০:২৭:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩
- / ৮১ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাড্রিয়েন আর্শট-রকফেলার ফাউন্ডেশনের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। এর আওতায় ঢাকার তাপমাত্রা কমাতে ডিএনসিসি ও ফাউন্ডেশনটি যৌথভাবে কাজ করবে।
বুধবার (৩ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই চুক্তির ফলে তাপ কমাতে ডিএনসিসিতে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে আর্শট-রক ফাউন্ডেশন। এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বুশরা আফরিনকে ডিএনসিসির ‘চিফ হিট অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে এশিয়ার প্রথম কোনো শহরে একজন চিফ হিট অফিসার নিয়োগ দেওয়া হলো। ডিএনসিসি এলাকায় তাপপ্রবাহ কমাতে বিভিন্ন কার্যক্রমের নেতৃত্বে দেবেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বুশরা আফরিন বলেন, আমার শহরের প্রচণ্ড তাপ থেকে মানুষ ও সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিভিন্ন শহরের নেতা ও বিশেষজ্ঞদের একটি বৈশ্বিক সংগঠনে যোগ দিতে পেরে আমি রোমাঞ্চিত। ঢাকার একজন স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে আমি জানি তীব্র তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপের বিকল্প নেই। ঢাকা শহরে তাপমাত্রা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বিশেষ করে স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ, বস্তিবাসী, অভিবাসী, নারী ও শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আর্শট-রকের গবেষণায় উঠে এসেছে, ২০৫০ সালের মধ্যে তাপপ্রবাহ বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩.৫ বিলিয়নের বেশি মানুষের জীবন ও জীবিকায় মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। তাদের মধ্যে হবে অর্ধেকের বেশি শহরে বসবাসকারী মানুষ। তীব্র তাপপ্রবাহ শহরগুলোর জন্য বেশি বিপজ্জনক ও প্রতি বছর শহর ক্রমাগত ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় ঢাকা শহর তাপপ্রবাহের ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। গ্রামাঞ্চলের তুলনায় ডিএনসিসি এলাকার তাপমাত্রা প্রায় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এই চরম তাপ পরিস্থিতি নগরবাসীর জীবনকে হুমকির মুখে ফেলছে ও শহরের বার্ষিক উৎপাদনের প্রায় ৮ শতাংশেরও বেশি শ্রম উৎপাদনশীলতা কমছে। ২০৫০ সাল নাগাদ গরমকালের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার অনুমান করা হচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে নারী ও শিশুদের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পরবে।
আর্শট-রকের পরিচালক ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্যাথি বাঘম্যান ম্যাকলিওড বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহ সারা বিশ্বের শহরগুলোতে একটি প্রেসার কুকারের মতো কাজ করছে। ডিএনসিসি এলাকায় জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় এখানে ঝুঁকি আরও বেশি। তাই ডিএনসিসি এলাকায় একজন চিফ হিট অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার নেতৃত্বে এই শহরে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি বুশরা আফরিনের ভূমিকা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় শহরগুলোর জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে কাজ করবে। আর্শট-রক ফাউন্ডেশন এই উদ্যোগের অংশীদার হতে পেরে গর্বিত ও ডিএনসিসি এলাকায় মানুষের সুরক্ষায় সম্ভাব্য সহযোগিতা প্রদান করবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এতে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাই কমিশনার ম্যাট ক্যানেল, অ্যাড্রিয়েন আর্শট-রকফেলার ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্যাথি বাঘম্যান ম্যাকলিওড, অ্যাড্রিয়েন আর্শট-রকফেলার ফাউন্ডেশনের হিট অ্যান্ড সিটি ডিপ্লোমেসি বিভাগের প্রধান উপদেষ্টা মরিসিও রোডাস, শক্তি ফাউন্ডেশনের ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রোগ্রামের প্রধান সোহানি হক ইলিয়াস, শক্তি ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক ইমরান আহমেদ ও ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা।