“আমরা আগামী বছরগুলোর জন্য দুই দেশের মধ্য রোডম্যাপ তৈরি করতে চাই,” বলেন পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী।
ঢাকা-করাচি বিমান চলাচল এ বছরেই, আশা – পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান

- আপডেট সময় ০২:০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
- / ১৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় খুব আগ্রহী এবং দুই দেশের মধ্যে এ বছরেই সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান।
শুক্রবার নগরীর আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্যদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জাম কামাল বলেন, “বশিরউদ্দীন সাহেবের (বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন) সঙ্গে ইতোমধ্যে যে আলোচনা হয়েছে তা হলো, আমাদের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে যৌথ উদ্যোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরই মধ্যে আমাদের দশটির বেশি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছে। তারা কোন কোন খাতে আগ্রহী, তা আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। আমাদের আরও প্রতিনিধি দল আসবে।
“পাশাপাশি আপনাদের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কেও আমি আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আপনারা আসুন, দেখুন এবং অংশগ্রহণ করুন। শুধু ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সঙ্গেই সম্পৃক্ততা নয়, পাশাপাশি আমাদের জাতীয় প্রদর্শনীগুলোতেও (এক্সপো) অংশ নিন। নভেম্বরে আমাদের একটি জাতীয় প্রদর্শনী আছে, যা বাজার সম্প্রসারণের জন্য পনাদের সুযোগ হতে পারে।”
গত দুই দিনের আলোচনায় বন্দর সংযোগ, এফটিএ (মুক্তি বাণিজ্য চুক্তি) ও বাণিজ্য ঘাটতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ হয়েছে জানিয়ে পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “জাহাজে করে বাংলাদেশের সঙ্গে পণ্য পরিবহন কার্যক্রম মূলত শিপিং লাইনগুলো পরিচালনা করে থাকে। জাহাজে করে দুই দেশের মধ্যে খাদ্য শস্য ও পণ্য পরিবহনে ক্ষেত্রে কম সময় ও সাশ্রয়ী ব্যবস্থাপনাকে আমরা স্বাগত জানাব।
“বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসার ক্ষেত্রে পাকিস্তানি ব্যবসায়ী সম্প্রদায় খুব আগ্রহী হলেও আকাশপথে যোগাযোগ না থাকায় এটা খুব একটা সহজ নয়। আমরা দুই দেশের বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চূড়ান্তকরণ প্রক্রিয়ায় আছি। আশা করি, চলতি বছরের শেষ দিকে পাকিস্তানি বিমান বাংলাদেশে আসতে পারবে এবং আবার বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে যাবে, যা দুই দেশের মানুষের মধ্যে এবং ব্যবসায়ীদের সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
তিনি বলেন, “আশা করি ২৪ অগাস্ট আমরা জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ সই করব। তারপর জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ নির্ধারণ করবে, আমাদের আরও কি করতে হবে। এছাড়া আমাদের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিশন আছে, যা পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সামগ্রিক করণীয় নির্ধারণ করবে। এর মধ্যে শিক্ষার্থী বিনিময়, স্বাস্থ্য খাত, কৃষি ও শিল্পসহ আরও বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
“আমরা আগামী বছরগুলোর জন্য দুই দেশের মধ্য রোডম্যাপ তৈরি করতে চাই। বিনিয়োগ, ব্যবসা এবং আমদানি-রপ্তানির কোন খাতগুলোতে বিশেষ জোর দিতে হবে, তা জয়েন্ট ওয়ার্কি গ্রুপ সইয়ের পরই সভা করে নির্ধারণ করবে।”
সভায় শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “বাণিজ্য বৈচিত্র্যকরণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যতগুলো দেশের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া সম্ভব, আমরা চেষ্টা করছি। পাকিস্তানের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি, সব ব্যবসায়ী তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রবৃদ্ধিকে উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে সচেষ্ট হবেন।”
চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা স্বাগত বক্তব্যে বলেন, “দুদেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য সম্পর্ক থাকলেও পাকিস্তান থেকে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের অধিক আমদানির বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি মাত্র ৫৮ মিলিয়ন ডলার।
“তবে সাফটা এবং ডি-৮ পিটিএ কার্যকর করার পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে ননট্যারিফ বাধা হ্রাস করা, বিটুবি সংযোগ উৎসাহিত করার মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ আকর্ষণ সম্ভব।”
প্রচলিত তৈরি পোশাক শিল্পের বাইরে ফার্মাসিউটিক্যাল ও হেলথকেয়ার প্রোডাক্ট, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, আইসিটি ও ডিজিটাল সেবা, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ও শিপবিল্ডিং, অ্যাগ্রো ও ফুড প্রসেসিং খাতে বিনিয়োগ ও সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে বলে মত দেন আনোয়ার পাশা।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী, বিএসআরএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আলীহুসেইন আকবর আলী, পান রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. একরামুল করিম চৌধুরী, চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক আমজাদ হোসেন চৌধুরী, বিজিএমইএ পরিচালক এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, বাফার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী (মিজান) ও প্রান্তিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সরওয়ার।
মইদুল হাসান – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম