০৭:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঢাকা-কায়রো রুটে সরাসরি ফ্লাইটে আনন্দে প্রবাসীরা‌

নিজস্ব সংবাদ দাতা
  • আপডেট সময় ০৮:৩৭:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৯৭ বার পড়া হয়েছে

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে হাজারো মিশর প্রবাসীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। মিশরের রাজধানী কায়রো থেকে ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পেয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সরকারি মালিকানাধীন এয়ারলাইন্স ইজিপ্টএয়ার।‌

সম্প্রতি বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুমতি পায় ইজিপ্ট এয়ার। মার্চের ২৯ তারিখে বেবিচকের সহকারী পরিচালক (এয়ার ট্রান্সপোর্ট) মো. ওয়াহিদুজ্জামান ওই অনুমতি পত্রে সই করেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানায়, ১৪ মে প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করবে ইজিপ্ট এয়ার। ঢাকা কায়রো সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়ার কথা জানতে চাইলে এই প্রতিনিধিকে মিশরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবত ঝুলে ছিল। বিভিন্ন কারণে ঢাকা কায়রো সরাসরি ফ্লাইট চালু হচ্ছিল না।‌‌

রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, আগামী মে মাসের ১৪ তারিখ কায়রো থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে প্রথম ফ্লাইট ছেড়ে যাবে ইনশাল্লাহ।‌ আশা করি এবার আর বিলম্ব হবে না।‌ প্রথম দিকে কায়রো-ঢাকা সরাসরি পরবর্তীতে উভয় দিক থেকে চালু হবে, তাতে আমাদের দু-দেশের সম্পর্কে আরও উন্নতি হবে। অনেক বাংলাদেশি এ দেশে আসতে পারবেন। বিশেষ করে তারা হজ বা ওমরাহ করবেন। অথবা যারা ইউরোপ আমেরিকা যাবেন তারা ঢাকা থেকে সরাসরি কায়রো এসে অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুবিধা নিয়ে দু-তিন দিন এ দেশে থেকে দেখতে পারবেন‌ হাজার হাজার বছরের পুরোনো ইতিহাস ও ঐতিহ্য।‌

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, কায়রো-ঢাকা সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়ার পর আমরা ই-ভিসা চালু করব। ই-ভিসা চালু হয়ে গেলে ভিসা সংক্রান্ত আর কোন জটিলতা থাকবে না। নীল নদের দ্বীপ জাজিরাতুল মা’দীর বাংলাদেশি সবজি বাগান ‘তাজা এগ্রো’র স্বত্বাধিকারী আলমগীর হোসেন বলেন, আমি আনন্দে অভিভূত। ঢাকা কায়রো সরাসরি বিমান চলবে সেটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ, সেই আসা পূরণ হতে যাচ্ছে। অনেক অপেক্ষায় আছি, কায়রো থেকে সরাসরি ফ্লাইটে ঢাকা যাওয়ার।

রাজধানী কায়রোর বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকার বাসিন্দা পোশাক শিল্প ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান (ইসলাম) বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, এটা অত্যন্ত খুশির সংবাদ যে কায়রো- ঢাকা রুটে সরাসরি বিমান চালু হতে যাচ্ছে। আশা করছি এতে আমাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেকটা সুবিধা হবে। বিশেষ করে, ট্রানজিট ভোগান্তি খুবই অধৈর্যের ছিল। আমরা এই ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবো। সময় অনেকটা সাশ্রয় হবে। যারা এর উদ্যোক্তা এবং যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ঢাকা-কায়রো সরাসরি ফ্লাইট বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে তাদের প্ৰতি আন্তরিক অভিবাদন ও‌ ধন্যবাদ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইজিপ্ট এয়ারের একজন কর্মকর্তা বলেন, ইজিপ্টএয়ার ঢাকা-কায়রো রুটে প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে দু’টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এয়ারলাইনসটি এই রুটে যাত্রী বহনে বোয়িং ৭৮৭-৯ মডেলের একটি এয়ারক্রাফট ব্যবহার করবে। এছাড়া ওই রুটে ফ্লাইট সংখ্যা আরও বাড়ানোর জন্য বেবিচকের কাছে অনুমতি চাইবে এয়ারলাইনসটি। এভিয়েশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই রুটে ফ্লাইট চালু শুরু হলে সেটি এভিয়েশন খাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। সেই সঙ্গে দেশের আকাশ পথের সংযোগ সীমাও বৃদ্ধি পাবে।

পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ এবং মিশর এ দু’দেশের মধ্যে ২০১৯ সালে মোট ১৭৩২০ জন্য টু-ওয়ে যাত্রী যাতায়াত করে, যার মধ্যে কায়রো-ঢাকা শহরের যাত্রী ছিল ৭৫ শতাংশ। এই সময়ে সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় প্রায় ৩৫ শতাংশ যাত্রী দুবাই হয়ে কায়রোতে এক-স্টপেজ রুটে যাত্রা করেন। বর্তমানে ইজিপ্টএয়ার আফ্রিকা, ইউরোপ, এশিয়া এবং আমেরিকার ৮১টি গন্তব্যে যাত্রী ও মালবাহী পরিষেবা পরিচালনা করে।

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

ঢাকা-কায়রো রুটে সরাসরি ফ্লাইটে আনন্দে প্রবাসীরা‌

আপডেট সময় ০৮:৩৭:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে হাজারো মিশর প্রবাসীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। মিশরের রাজধানী কায়রো থেকে ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পেয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সরকারি মালিকানাধীন এয়ারলাইন্স ইজিপ্টএয়ার।‌

সম্প্রতি বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুমতি পায় ইজিপ্ট এয়ার। মার্চের ২৯ তারিখে বেবিচকের সহকারী পরিচালক (এয়ার ট্রান্সপোর্ট) মো. ওয়াহিদুজ্জামান ওই অনুমতি পত্রে সই করেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানায়, ১৪ মে প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করবে ইজিপ্ট এয়ার। ঢাকা কায়রো সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়ার কথা জানতে চাইলে এই প্রতিনিধিকে মিশরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবত ঝুলে ছিল। বিভিন্ন কারণে ঢাকা কায়রো সরাসরি ফ্লাইট চালু হচ্ছিল না।‌‌

রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, আগামী মে মাসের ১৪ তারিখ কায়রো থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে প্রথম ফ্লাইট ছেড়ে যাবে ইনশাল্লাহ।‌ আশা করি এবার আর বিলম্ব হবে না।‌ প্রথম দিকে কায়রো-ঢাকা সরাসরি পরবর্তীতে উভয় দিক থেকে চালু হবে, তাতে আমাদের দু-দেশের সম্পর্কে আরও উন্নতি হবে। অনেক বাংলাদেশি এ দেশে আসতে পারবেন। বিশেষ করে তারা হজ বা ওমরাহ করবেন। অথবা যারা ইউরোপ আমেরিকা যাবেন তারা ঢাকা থেকে সরাসরি কায়রো এসে অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুবিধা নিয়ে দু-তিন দিন এ দেশে থেকে দেখতে পারবেন‌ হাজার হাজার বছরের পুরোনো ইতিহাস ও ঐতিহ্য।‌

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, কায়রো-ঢাকা সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়ার পর আমরা ই-ভিসা চালু করব। ই-ভিসা চালু হয়ে গেলে ভিসা সংক্রান্ত আর কোন জটিলতা থাকবে না। নীল নদের দ্বীপ জাজিরাতুল মা’দীর বাংলাদেশি সবজি বাগান ‘তাজা এগ্রো’র স্বত্বাধিকারী আলমগীর হোসেন বলেন, আমি আনন্দে অভিভূত। ঢাকা কায়রো সরাসরি বিমান চলবে সেটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ, সেই আসা পূরণ হতে যাচ্ছে। অনেক অপেক্ষায় আছি, কায়রো থেকে সরাসরি ফ্লাইটে ঢাকা যাওয়ার।

রাজধানী কায়রোর বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকার বাসিন্দা পোশাক শিল্প ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান (ইসলাম) বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, এটা অত্যন্ত খুশির সংবাদ যে কায়রো- ঢাকা রুটে সরাসরি বিমান চালু হতে যাচ্ছে। আশা করছি এতে আমাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেকটা সুবিধা হবে। বিশেষ করে, ট্রানজিট ভোগান্তি খুবই অধৈর্যের ছিল। আমরা এই ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবো। সময় অনেকটা সাশ্রয় হবে। যারা এর উদ্যোক্তা এবং যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ঢাকা-কায়রো সরাসরি ফ্লাইট বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে তাদের প্ৰতি আন্তরিক অভিবাদন ও‌ ধন্যবাদ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইজিপ্ট এয়ারের একজন কর্মকর্তা বলেন, ইজিপ্টএয়ার ঢাকা-কায়রো রুটে প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে দু’টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এয়ারলাইনসটি এই রুটে যাত্রী বহনে বোয়িং ৭৮৭-৯ মডেলের একটি এয়ারক্রাফট ব্যবহার করবে। এছাড়া ওই রুটে ফ্লাইট সংখ্যা আরও বাড়ানোর জন্য বেবিচকের কাছে অনুমতি চাইবে এয়ারলাইনসটি। এভিয়েশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই রুটে ফ্লাইট চালু শুরু হলে সেটি এভিয়েশন খাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। সেই সঙ্গে দেশের আকাশ পথের সংযোগ সীমাও বৃদ্ধি পাবে।

পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ এবং মিশর এ দু’দেশের মধ্যে ২০১৯ সালে মোট ১৭৩২০ জন্য টু-ওয়ে যাত্রী যাতায়াত করে, যার মধ্যে কায়রো-ঢাকা শহরের যাত্রী ছিল ৭৫ শতাংশ। এই সময়ে সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় প্রায় ৩৫ শতাংশ যাত্রী দুবাই হয়ে কায়রোতে এক-স্টপেজ রুটে যাত্রা করেন। বর্তমানে ইজিপ্টএয়ার আফ্রিকা, ইউরোপ, এশিয়া এবং আমেরিকার ৮১টি গন্তব্যে যাত্রী ও মালবাহী পরিষেবা পরিচালনা করে।