দলের অবস্থান নিয়ে হতাশ জাপা নেতাকর্মীরা
- আপডেট সময় ০৯:৫৫:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুলাই ২০২৩
- / ৮৯ বার পড়া হয়েছে
জাতীয় নির্বাচনের আর কয়েক মাস বাকি। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে দলীয় অবস্থান অনেকটা ধোঁয়াশায়। একই সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে সরকারের সঙ্গে থাকা জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে কেমন অবস্থান নেবে তাও স্পষ্ট নয়। এই অবস্থায় অস্বস্তিতে দলটির নেতাকর্মীরা। তারা অনেকটা বিভ্রান্ত। দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়া হবে। আবার নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক জোট করার কথাও বলছেন কেউ কেউ।
জাতীয় নির্বাচনের আর কয়েক মাস বাকি। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে দলীয় অবস্থান অনেকটা ধোঁয়াশায়। একই সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে সরকারের সঙ্গে থাকা জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে কেমন অবস্থান নেবে তাও স্পষ্ট নয়। এই অবস্থায় অস্বস্তিতে দলটির নেতাকর্মীরা। তারা অনেকটা বিভ্রান্ত। দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়া হবে। আবার নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক জোট করার কথাও বলছেন কেউ কেউ।
তবে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হতে পারে তার কোনো রূপরেখা দলটির পক্ষ থেকে দেয়ার কোনো পরিকল্পনা দেখা যাচ্ছে না। এসব বিষয়ে হতাশ দলটির নেতাকর্মীরা।
মো. আশরাফুল আকন্দ রংপুর সরকারি কলেজে ছাত্রনেতা ছিলেন। তিনি বলেন, এরশাদের মৃত্যুর পর বিভক্তি স্পষ্ট। আমরা ছোট দল, এই দলে বিভক্তি এলে দলের আসলে কিছু থাকে না। তিনি বলেন, বারবার একটা প্রশ্ন শুনতে হয় জিএম কাদের নাকি রওশন এরশাদ পন্থি? এই প্রশ্নের কোনো জবাব থাকে না দেয়ার মতো।
রংপুরের ছাত্রনেতা রেজওয়ান আহমেদ সৌদ বলেন, জাতীয় পার্টির রাজনীতি এখন একটা টালমাটাল অবস্থায় আছে। জিএম কাদেরের নেতৃত্বে আমরা চাই দলটা ঠিক থাকুক। কিন্তু রওশন ও বিদিশা এরশাদের হাতে নেতৃত্ব ভার গেলে ক্ষতিকর হবে। তিনি আরও বলেন, রংপুর-৩ আসনে যেহেতু এরশাদ সাহেব নির্বাচন করতেন আমরা চাই বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের এই আসন থেকে নির্বাচন যাতে করেন।
রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গতকাল কথা হয় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে। তাদের একজন রাইসুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা সরকারি দলে থেকে বিরোধী দল। এটা একটা হাস্যকর কথা। অনেকেই বলেন, গৃহপালিত বিরোধী দল।
আসাদুল ইসলাম বলেন, সামনে নির্বাচন। এখনো বার্তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়, আমরা কি আওয়ামী লীগের জোট নাকি এককভাবে নির্বাচন করছি। যদিও ঘোষণা দেয়া হয়েছে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবেন। দলের শীর্ষ নেতারা নানা কথা বলছেন, তারা বারবার বলছেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু এই কথার গুরুত্ব তারা কতটুকু দিচ্ছেন- তারা হয়তো নিজেরাও জানেন না।
ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির পদপ্রত্যাশী একজন নেতা বলেন, আমাদের কয়েকজন নেতা সংসদে কিংবা গণমাধ্যমে বেশ ভালো বক্তব্য দিচ্ছেন। আমরা শেয়ার করছি। কিন্তু তৃণমূলের জন্য তারা কি করছেন? এছাড়াও লাঙ্গলে যারা ভোট দেবেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তারা কিছুই করছেন না। হাতপাখার প্রার্থী জাতীয় পার্টির থেকে বেশি ভোট পায় এটা আমাদের জন্য লজ্জার।
আলিমুর রহমান বলেন, এখন দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র উপর বিরক্ত। তারা তৃতীয় দল চায়। গণঅধিকার পরিষদ যদি মাঠ গরম রাখতে পারে আমরা কেন পারবো না। কয়েকজন এমপি হলেই দলের সম্মান বৃদ্ধি পায় না। আমাদের নেতা এরশাদ ছিলেন অকুতোভয় দেশপ্রেমিক। তার ভাই জিএম কাদেরও সেই পথে হাঁটছেন। কিন্তু কোথায় যেন তাদের ভয়। তিনি আরও বলেন, একবার জোর দিয়ে মাঠে নেমেই দেখেনÑ সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে এসে দাঁড়াবে।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আরিফুল ইসলাম অল্প কথায় বলেন, বর্তমানে আমরা লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেই। অনেকেই ভোট দেন শুধু প্রতীকটাতে। কিন্তু দলের যে অবস্থা, বিভাজন এটাকে রাজনৈতিক দল বলা মুশকিল। তিনি বলেন, সংসদে কয়েকজন নেতা ভালো কথা বলছেন কিন্তু তারা সাধারণ মানুষের সামনে উন্মুক্ত মাঠে কথা বলছেন না।
জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতা গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বলেন, এখন দলের প্রধান সমস্যা নীতি, দলের অবস্থান। আমাদের দলের অবস্থান কি? আমাদের অদূর ও সুদূর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি সেই বার্তা আমাদের কাছে স্পষ্ট না। আমরা যদি কোনো দলের সঙ্গে যুক্তও হই, কেন হচ্ছি, কীভাবে হচ্ছি- আমাদেরকে জানাতে হবে। ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবেন এমন ঘোষণাও এসেছে। কিন্তু মেসেজ হতে হবে লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার।
আফিয়া সুলতানা নামে এক নারী নেত্রী বলেন, দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে চায়, লাঙ্গলকে চায়। কিন্তু এখন যেভাবে চলছে তাতে শুধু কেন্দ্রীয় নেতা থাকবে সমর্থক থাকবে না।
ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল মামুন বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ষোঘণা দিয়েছেন সামনের জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবেন। আমরা সেভাবেই নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করছি, প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা ছাত্র সমাজের ৮৮ ইউনিট আছে আমরা সেই আঙ্গিকে নিজেদের সাজাচ্ছি। মানুষ চাইছে জাতীয় পার্টিকে নতুন আঙ্গীকে সাজাতে।