বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিনি জবানবন্দি দেন।
দেশে ‘ফ্যাসিবাদী’ শাসন আর যেন ফিরতে না পারে: মাহমুদুর রহমান

- আপডেট সময় ০১:৫৯:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২১ বার পড়া হয়েছে
দেশে শেখ হাসিনার দুঃশাসনের কথা তুলে ধরে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, দেশে আর যেন কখনো ‘ফ্যাসিবাদী’ শাসন ফিরে আসতে না পারে, জনগণ তা প্রত্যাশা করে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি এ কথা বলেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিনি জবানবন্দি দেন।
এ ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
কমান্ড রেসপন্সিবিলিটির অভিযোগ আনা এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও অন্য দুই আসামি হলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন।
এ মামলায় সাবেক আইজিপি মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন। এদিন তিনি আদালতে হাজির ছিলেন। অপর দুই আসামি পলাতক থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ চলছে।
এ মামলার ৪৬তম সাক্ষী হিসেবে মাহমুদুর রহমান সোমবার ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেওয়া শুরু করেন।
মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো জবানবন্দি দিতে গিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে সময় দমন-পীড়নের ঘটনায় জাতিসংঘের দেওয়া প্রতিবেদনের বরাতে তিনি বলেন, জুলাই-অগাস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে শেখ হাসিনা হত্যা ও লাশ গুম করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সরাসরি নির্দেশে গণহত্যা চালানো হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের উপর ‘কমান্ড রেসপনসিবিলিটির’ দায় পড়ে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে ইটালি ও জার্মানিতে ফ্যাসিস্ট শাসক মুসোলিনি ও হিটলারের পতন হয়েছিল যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর। জার্মানিতে সেই সময় জনগণ বিশেষ করে, ইহুদি জনগোষ্ঠীর উপরে যে গণহত্যা চালানো হয়েছিল সেই প্রেক্ষাপটে সারাবিশ্বে আওয়াজ উঠেছিল ‘Never Again’, অর্থাৎ আর যেন কখনও হিটলারের মতো নিষ্ঠুর ফ্যাসিস্ট শাসকের আগমন না ঘটে।
“বাংলাদেশেও শেখ হাসিনার ১৫ বছরের চরম দুর্নীতিপরায়ণ এবং মানবতাবিরোধী শাসনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা হল, আর যেন কখনও আমাদের দেশে এমন ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রত্যাবর্তন না ঘটে।”
বিগত ১৫ বছর ধরে যে ‘ফ্যাসিস্ট’ শাসন ব্যবস্থা বাংলাদেশের জনগণের উপর যে অবর্ণনীয় জুলুম চালিয়েছে, সে সম্পর্কে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিয়মিত আলোচনা ও সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বাংলাদেশে গণতন্ত্রহীনতা এবং মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার প্রতিবেদনের প্রসঙ্গও টানেন মাহমুদুর রহমান।
এ সময় তিনি কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার ‘অল দি প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়টিও তুলে ধরেন।
দ্বিতীয় দিন জবানবন্দি শেষ করার পর শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন মাহমুদুর রহমানকে জেরা শুরু করেন। বিকাল ৪টায়ও জেরা শেষ না হওয়ার বুধবার ফের জেরা হবে।
মঙ্গলবার জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাহমুদুর রহমানের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ না হওয়ায় তার জন্য বুধবার দিন রাখা হয়।
নিঝুম আহমেদ – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম