গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের আদমপুর নতুন বাজারে ৯ বছর আগে ফার্মেসি খোলেন রেজাউল। পরে তিনি নিজেই ব্যবস্থাপত্র দেওয়া শুরু করেন।
নেই চিকিৎসা সনদ- প্রশিক্ষণ তবু চেম্বারেই রোগী ভর্তি, করতেন অস্ত্রোপচারও

- আপডেট সময় ১১:২৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ১৮ বার পড়া হয়েছে

গোপালগঞ্জে চিকিৎসা সনদ বা প্রশিক্ষণবিহীন এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত; যিনি অস্বাস্থ্যকর টিনশেডের চেম্বারে রোগী ভর্তি রাখতেন, এমনকি সেখানে অস্ত্রোপচারও করে আসছিলেন।
গোপালগঞ্জে চিকিৎসা সনদ বা প্রশিক্ষণবিহীন এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত; যিনি অস্বাস্থ্যকর টিনশেডের চেম্বারে রোগী ভর্তি রাখতেন, এমনকি সেখানে অস্ত্রোপচারও করে আসছিলেন।
সোমবার মুকসুদপুর উপজেলার আদমপুর নতুন বাজারে ওই ব্যক্তির চেম্বারে অভিযান চালিয়ে তাকে তিন মাসের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার আহমেদ।
সাজাপ্রাপ্ত মো. রেজাউল করিম শেখ (৪২) মুকসুদপুর উপজেলার আদমপুর গ্রামের আতর আলীর ছেলে।
ব্যবস্থাপত্রে তার নামের আগে ডাক্তার লেখা হয়েছে। নামের পরে ডি.এম.এ ঢাকা ডিগ্রি যুক্ত করে তিনি কোমর, বাত, হাঁটু ব্যাথা, চর্ম, এলার্জি, ডায়াবেটিস, মা ও শিশু স্বাস্থ্য মেডিসিনে অভিজ্ঞ বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন প্রকার অপারেশন ও দাঁত তোলায় বিশেষ অভিজ্ঞ বলেও লিখে রেখেছেন ব্যবস্থাপত্রে।
আদমপুর বাজারের বাসিন্দা তাইজুল হোসেন বলেন, রেজাউল করিম ৯ বছর আগে আদমপুর নতুন বাজার মসজিদ এলাকায় আল করিম ফার্মেসি খোলেন। পরে তিনি নিজেই সেখানে চেম্বার খুলে রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র দেওয়া শুরু করেন। ব্যবস্থাপত্রে তিনি দামি দামি একাধিক এন্টিবায়োটিক লিখতেন।
মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রায়হান ইসলাম শোভন বলেন, “মো. রেজাউল করিম শেখের কোনো চিকিৎসা সনদ বা প্রশিক্ষণ নেই। তবুও তিনি নামের আগে ডাক্তার শব্দ ব্যবহার করেছেন। রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র লিখে দিতেন।
“তিনি অস্বাস্থ্যকর টিনশেডের চেম্বারে রোগী ভর্তি রেখে অস্ত্রোপচারও করে আসছিলেন। তার চেম্বারে প্রসূতি মৃত্যু ও অঙ্গহানীর ঘটনা বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে আসছিলেন। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় মৃত্যু বা অঙ্গহানীর প্রমাণ পাওয়া যায়নি।”
এছাড়া তিনি চিকিৎসায় অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতেন। তার চেম্বারের ফার্মেসিতে লাইসেন্সবিহীন ওষুধ বিক্রি করতেন। ফার্মেসিতে বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ মজুতও ছিল।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আরও বলেন, “স্বাক্ষ্য-প্রমাণ গ্রহণ শেষে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক তাকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন মাসের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। সিলগালা করে দেওয়া হয় আল করিম ফার্মেসি।
“পরে ভ্রাম্যমাণ আদলতের ফোর্স তাকে গোপালগঞ্জে নিয়ে যায়, সেখান থেকে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।”
ভ্রাম্যমাণ আদলতের অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জের ড্রাগ সুপার বিথী রানী মণ্ডল, পুলিশ ও আনসার-ব্যাটালিয়ন সদস্যরা।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম