০৩:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ওলির পদত্যাগের পর রাজনৈতিকভাবে বড় সংকটে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার দায়িত্ব পড়েছে সেনাবাহিনীর হাতে।

নেপালে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি

মিজানুর রহমান খান - বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ১২:১৯:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি কার্কি ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত বিচারিক প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। তার মেয়াদকালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের জন্য সুপরিচিত ছিলেন তিনি।

 

নেপালে সহিংস বিক্ষোভের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর যাদের নাম অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে আসছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নাম।

ওলির পদত্যাগের পর রাজনৈতিকভাবে বড় সংকটে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার দায়িত্ব পড়েছে সেনাবাহিনীর হাতে।

দেশটিতে একদিনেরও বেশি সময় ধরে কার্যত কোনো সরকার নেই।

কার্কি জেন-জি বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি হয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন। ৬ ঘণ্টার টানা বৈঠক শেষে বিক্ষোভকারীরা সাবেক এ নারী প্রধান বিচারপতিকেই তাদের প্রতিনিধি ঠিক করেছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনার আগে নিজেদের দাবিদাওয়াও তুলে ধরেছে জেন-জি বিক্ষোভকারীরা। এসব দাবির মধ্যে আছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওলি ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ যারা বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল তাদের যত দ্রুত সম্ভব গ্রেপ্তার করা, কেউ দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না এমন বিধান যুক্ত করাসহ সংবিধান সংশোধন, নিপীড়ন তদন্তের দায়িত্বে থাকা কমিশন সিআইএএ, বিচার বিভাগ ও মেধাভিত্তিক নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব বাদ দেওয়া।

“জেন-জি গোষ্ঠীগুলো এখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনটি নাম আলোচনায় আছে,” কার্কির নাম আলোচনায় আছে জানিয়ে সন্ধ্যায় জেন-জি বিক্ষোভকারী সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা পিটিআই এমনটাই বলেছিল।

পরে এনডিটিভির প্রতিবেদনে কার্কিকেই বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন বলে জানানো হয়।

নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি কার্কি ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত বিচারিক প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। তার মেয়াদকালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের জন্য সুপরিচিত ছিলেন তিনি।

কৃষক পরিবারের সন্তান কার্কি ৭ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়, তার পরিবারের সঙ্গে নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিপি কৈরালার পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। কৈরালা ১৯৫৯ সাল থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।

১৯৭২ সালে মাহেন্দ্র মোরং ক্যাম্পাস থেকে বিএ পাস করা কার্কি ১৯৭৫ সালে ভারতের বানারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পলিটিকাল সায়েন্সে এমএ শেষ করেন। পরে তিনি ১৯৭৮ সালে ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি নেন।

তিনি প্রধান বিচারপতি থাকাকালে সেসময়কার তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী জয়প্রকাশ প্রসাদ ‍গুপ্ত দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।

তার রায়ে দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষের প্রভাবশালী এক প্রধান অপসারিত হওয়ার পর ‘পক্ষপাতদুষ্ট রায় দেওয়ার অভিযোগে’ সেসময় ক্ষমতাসীন নেপালি কংগ্রেস ও কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (মাওয়িস্ট সেন্টার) তাকে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করে। এ কারণে সাময়িক সময়ের জন্য বরখাস্তও ছিলেন তিনি।

 

 

মিজানুর রহমান খান – বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

ওলির পদত্যাগের পর রাজনৈতিকভাবে বড় সংকটে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার দায়িত্ব পড়েছে সেনাবাহিনীর হাতে।

নেপালে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি

আপডেট সময় ১২:১৯:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

নেপালে সহিংস বিক্ষোভের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর যাদের নাম অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে আসছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নাম।

ওলির পদত্যাগের পর রাজনৈতিকভাবে বড় সংকটে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার দায়িত্ব পড়েছে সেনাবাহিনীর হাতে।

দেশটিতে একদিনেরও বেশি সময় ধরে কার্যত কোনো সরকার নেই।

কার্কি জেন-জি বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি হয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন। ৬ ঘণ্টার টানা বৈঠক শেষে বিক্ষোভকারীরা সাবেক এ নারী প্রধান বিচারপতিকেই তাদের প্রতিনিধি ঠিক করেছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনার আগে নিজেদের দাবিদাওয়াও তুলে ধরেছে জেন-জি বিক্ষোভকারীরা। এসব দাবির মধ্যে আছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওলি ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ যারা বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল তাদের যত দ্রুত সম্ভব গ্রেপ্তার করা, কেউ দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না এমন বিধান যুক্ত করাসহ সংবিধান সংশোধন, নিপীড়ন তদন্তের দায়িত্বে থাকা কমিশন সিআইএএ, বিচার বিভাগ ও মেধাভিত্তিক নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব বাদ দেওয়া।

“জেন-জি গোষ্ঠীগুলো এখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনটি নাম আলোচনায় আছে,” কার্কির নাম আলোচনায় আছে জানিয়ে সন্ধ্যায় জেন-জি বিক্ষোভকারী সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা পিটিআই এমনটাই বলেছিল।

পরে এনডিটিভির প্রতিবেদনে কার্কিকেই বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন বলে জানানো হয়।

নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি কার্কি ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত বিচারিক প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। তার মেয়াদকালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের জন্য সুপরিচিত ছিলেন তিনি।

কৃষক পরিবারের সন্তান কার্কি ৭ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়, তার পরিবারের সঙ্গে নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিপি কৈরালার পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। কৈরালা ১৯৫৯ সাল থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।

১৯৭২ সালে মাহেন্দ্র মোরং ক্যাম্পাস থেকে বিএ পাস করা কার্কি ১৯৭৫ সালে ভারতের বানারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পলিটিকাল সায়েন্সে এমএ শেষ করেন। পরে তিনি ১৯৭৮ সালে ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি নেন।

তিনি প্রধান বিচারপতি থাকাকালে সেসময়কার তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী জয়প্রকাশ প্রসাদ ‍গুপ্ত দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।

তার রায়ে দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষের প্রভাবশালী এক প্রধান অপসারিত হওয়ার পর ‘পক্ষপাতদুষ্ট রায় দেওয়ার অভিযোগে’ সেসময় ক্ষমতাসীন নেপালি কংগ্রেস ও কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (মাওয়িস্ট সেন্টার) তাকে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করে। এ কারণে সাময়িক সময়ের জন্য বরখাস্তও ছিলেন তিনি।

 

 

মিজানুর রহমান খান – বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম