ইশিবার সরকারের এক বছরও হয়নি, তার মধ্যেই ক্ষমতাসীন জোট পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে।
পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা

- আপডেট সময় ০৬:৩৮:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৫ বার পড়া হয়েছে
ক্ষমতায় বসার এক বছর পার হওয়ার আগেই পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর দলের ভেতর-বাইরে চাপের মুখে অবশেষে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ৬৮ বছর বয়সী এ রাজনীতিক বলেন, তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং দলকে নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে বলেছেন।
পদত্যাগের ঘোষণা দিলেও নতুন কেউ দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত ইশিবাই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকবেন।
তার পদত্যাগ নড়বড়ে অবস্থায় থাকা দেশটির নীতি স্থবিরতার কাল আরও দীর্ঘায়িত করতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর আগে ইশিবার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছিলেন।
একসময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলানো ইশিবা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন এক বছরও হয়নি, এর মধ্যেই তার জোট পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। জীবনযাপনের খরচ বাড়তে থাকায় ভোটারদের ক্ষোভ তার দল ও জোটের ওপর গিয়ে পড়েছে।
জুলাইয়ে উচ্চকক্ষে পরাজয়ের পর তার দল লিবারেল ডেমোক্র্যাট পার্টি (এলডিপি) তাকে দায় নিয়ে পদত্যাগ করার আহ্বান জানালেও তিনি এতদিন তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
এলডিপি-ই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী প্রায় পুরো সময় ধরে এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিকে চালিয়ে আসছে।
ক্ষমতা না ছেড়ে ইশিবা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার চেষ্টায় বেশি মনোযোগী ছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক এরই মধ্যে জাপানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অটোমোবাইল ও এর যন্ত্রাংশ খাতকে অস্থির করে তুলেছে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগের কারণে গত সপ্তাহ থেকে জাপানি মুদ্রা ইয়েন ও এর সরকারি বন্ডের বিক্রি বেড়ে গিয়েছিল, বুধবার ৩০ বছর মেয়াদী বন্ডের লভ্যাংশ বুধবার রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে যায়।
ইশিবা পদত্যাগের ঘোষণায় জাপানে এখন নতুন প্রধানমন্ত্রীর খোঁজ শুরু হবে। এলডিপি প্রথমে তাদের নেতার জায়গায় ইশিবার স্থলাভিষিক্ত বেছে নেবে। এরপর ওই নতুন নেতাকে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে উৎরাতে হবে।
এলডিপির নেতৃত্ব নির্বাচন বেশ জটিল, এদিকে পার্লামেন্টের দুই কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানো এলডিপির পরবর্তী নেতাকেই যে অন্য দলগুলো প্রধানমন্ত্রী সমর্থন করবে তারও নিশ্চয়তা নেই। এ নিয়ে দেশটির রাজনৈতিক মহলেও ব্যাপক উদ্বেগ রয়েছে।
ইশিবার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে এলডিপির সানায়ে তাকাইচি, শিনজিরো কোইজুমি ও ইয়োশিমাসা হায়াশির নাম ঘুরেফিরে আসছে। এর মধ্যে ৬৪ বছর বয়সী সানায়ে তাকাইচি যদি সব বাধা অতিক্রম করেন, তাহলে তিনিই হবেন জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য কোইজুমির সম্ভাবনাও কম নয়।
আলোচনায় আছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদল কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব জাপানের প্রধান ইয়োশিকো নোডা এবং ডেমোক্রেটিক পার্টি অব দ্য পিপলের ইয়ুচিরো তামাকির নামও।
মিজানুর রহমান খান – বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম