১১:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে ইরানের পার্লামেন্টের সদস্যরা একটি বিল তৈরি করছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান

নিউজ ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৬:৪২:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
  • / ৭ বার পড়া হয়েছে

ছবি: ইরানের পতাকা।

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান। চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে ইরানের পার্লামেন্টের সদস্যরা একটি বিল তৈরি করছেন।

সোমবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এ খবর জানিয়েছে। তবে একই সঙ্গে মন্ত্রণালয় ইরান সরকারের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, তারা ধ্বংসের জন্য পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর বিরোধী।

ইরানের এনপিটি চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাঈ বলেন, “সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা একটি যথাযথ সিদ্ধান্ত নেব।

“সরকার পার্লামেন্টের বিল বাস্তবায়ন করতে বাধ্য, তবে এই প্রস্তাব এখন কেবল প্রস্তুতির পর্যায়ে রয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে আমরা এটি পার্লামেন্টের সঙ্গে সমন্বয় করব।”

১৯৭০ সালে এনপিটি চুক্তি অনুমোদন করেছিল ইরান। এই চুক্তি অনুযায়ী, দেশগুলো বেসামরিক পরমাণু শক্তি কাজে লাগাতে পারে। বিনিময়ে তাদেরকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত থাকতে হয় এবং আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ-র সঙ্গে সহযোগিতা করতে হয়।

গত সপ্তাহে ইসরায়েল ইরানে হামলা চালায়। তারা দাবি করে, তেহরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। তবে ইরান বরাবরই বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। যদিও আইএইএ গত সপ্তাহে এক ঘোষণায় জানিয়েছে যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) শর্ত লঙ্ঘন করছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান কয়েকদিন আগেই জানিয়েছিলেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র বানাতে চায় না। তারপরই তেহরানের এনপিটি চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির খবর এল।

তবে সোমবার পেজেশকিয়ান আবারও তার আগের অবস্থান জানান দিয়ে বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ধর্মীয় ফরমানের বিরুদ্ধে যায়।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, এনপিটি থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি পার্লামেন্ট। প্রস্তাবটি আইনি প্রক্রিয়ার কেবল প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

ইরানের এপথে পা বাড়ানোর কারণ হিসাবে ইসরায়েলের হামলার মতো প্রেক্ষাপটই তুলে ধরেছেন ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাঘাঈ। তিনি বলেন, “এ ধরনের ঘটনা (ইসরায়েলের হামলা) স্বাভাবিকভাবেই রাষ্ট্রের কৌশলগত সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে।”

ইরানের চুক্তির বাধ্যবধকতা না মানা নিয়ে আইএইএ যে প্রস্তাবনা এনেছে সেই পদক্ষেপকে দোষারোপ করে বাঘাঈ বলেন, ওই প্রস্তাবনার পরেই ইরানে ইসরায়েলের হামলা হয়েছে।

“যারা আইএইএ-র প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তারাই এই হামলার পথ প্রশস্ত করেছেন”, বলেন তিনি।

রয়টার্স লিখেছে, ইসরায়েল কখনও এনপিটি চুক্তিতে সই করেনি। তবে আঞ্চলিক দেশগুলোর ধারণা, ইসরায়েলের হাতে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। তবে ইসরায়েল এই বিষয়টি কখন নিশ্চিত কিংবা অস্বীকার কোনোটিই করেনি।

ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাঘাঈ বলেন, “এ অঞ্চলে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের একমাত্র ধারক হচ্ছে দখলদার ইহুদি শাসকগোষ্ঠী।”

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে ইরানের পার্লামেন্টের সদস্যরা একটি বিল তৈরি করছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান

আপডেট সময় ০৬:৪২:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান। চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে ইরানের পার্লামেন্টের সদস্যরা একটি বিল তৈরি করছেন।

সোমবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এ খবর জানিয়েছে। তবে একই সঙ্গে মন্ত্রণালয় ইরান সরকারের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, তারা ধ্বংসের জন্য পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর বিরোধী।

ইরানের এনপিটি চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাঈ বলেন, “সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা একটি যথাযথ সিদ্ধান্ত নেব।

“সরকার পার্লামেন্টের বিল বাস্তবায়ন করতে বাধ্য, তবে এই প্রস্তাব এখন কেবল প্রস্তুতির পর্যায়ে রয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে আমরা এটি পার্লামেন্টের সঙ্গে সমন্বয় করব।”

১৯৭০ সালে এনপিটি চুক্তি অনুমোদন করেছিল ইরান। এই চুক্তি অনুযায়ী, দেশগুলো বেসামরিক পরমাণু শক্তি কাজে লাগাতে পারে। বিনিময়ে তাদেরকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত থাকতে হয় এবং আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ-র সঙ্গে সহযোগিতা করতে হয়।

গত সপ্তাহে ইসরায়েল ইরানে হামলা চালায়। তারা দাবি করে, তেহরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। তবে ইরান বরাবরই বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। যদিও আইএইএ গত সপ্তাহে এক ঘোষণায় জানিয়েছে যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) শর্ত লঙ্ঘন করছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান কয়েকদিন আগেই জানিয়েছিলেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র বানাতে চায় না। তারপরই তেহরানের এনপিটি চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির খবর এল।

তবে সোমবার পেজেশকিয়ান আবারও তার আগের অবস্থান জানান দিয়ে বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ধর্মীয় ফরমানের বিরুদ্ধে যায়।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, এনপিটি থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি পার্লামেন্ট। প্রস্তাবটি আইনি প্রক্রিয়ার কেবল প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

ইরানের এপথে পা বাড়ানোর কারণ হিসাবে ইসরায়েলের হামলার মতো প্রেক্ষাপটই তুলে ধরেছেন ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাঘাঈ। তিনি বলেন, “এ ধরনের ঘটনা (ইসরায়েলের হামলা) স্বাভাবিকভাবেই রাষ্ট্রের কৌশলগত সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে।”

ইরানের চুক্তির বাধ্যবধকতা না মানা নিয়ে আইএইএ যে প্রস্তাবনা এনেছে সেই পদক্ষেপকে দোষারোপ করে বাঘাঈ বলেন, ওই প্রস্তাবনার পরেই ইরানে ইসরায়েলের হামলা হয়েছে।

“যারা আইএইএ-র প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তারাই এই হামলার পথ প্রশস্ত করেছেন”, বলেন তিনি।

রয়টার্স লিখেছে, ইসরায়েল কখনও এনপিটি চুক্তিতে সই করেনি। তবে আঞ্চলিক দেশগুলোর ধারণা, ইসরায়েলের হাতে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। তবে ইসরায়েল এই বিষয়টি কখন নিশ্চিত কিংবা অস্বীকার কোনোটিই করেনি।

ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাঘাঈ বলেন, “এ অঞ্চলে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের একমাত্র ধারক হচ্ছে দখলদার ইহুদি শাসকগোষ্ঠী।”