“মাহিন সরকার চলে গেছে, শুধু তা না। অনেক প্রার্থীকে ‘মন্ত্রিপাড়াসহ’ বিভিন্ন জায়গা থেকে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে,” বলেন তিনি।
প্যানেল ভাঙতে ‘মন্ত্রিপাড়া’ থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে: ভিপি প্রার্থী জামাল উদ্দীন

- আপডেট সময় ১১:৩২:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৭ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের পাশে শুক্রবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন জামাল উদ্দীন মুহাম্মদ খালিদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল ভাঙতে ‘মন্ত্রিপাড়া’ থেকে প্রার্থীদের চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন প্যানেলটির ভিপি প্রার্থী জামাল উদ্দীন মুহাম্মদ খালিদ।
এ প্যানেলের জিএস প্রার্থী এনসিপির বহিষ্কৃত নেতা মাহিন সরকারও সেই চাপের কারণে শুক্রবার ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে অভিযোগ জামাল উদ্দীনের।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের পাশে ‘জরুরি সংবাদ সম্মেলন’ করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন মাহিন। এর কয়েক ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় একই জায়গায় সংবাদ সম্মেলনে আসেন জামাল উদ্দীন।
‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদের’ এ ভিপি প্রার্থী বলেন, “আজকে আমাদের প্যানেল থেকে মাহিন সরকার চলে গেছে, শুধু তা না। আমার প্যানেলের অনেক প্রার্থীকে ‘মন্ত্রিপাড়াসহ’ বিভিন্ন জায়গা থেকে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে যেন তারা বসে যায়।”
তার অভিযোগ, “আমাদের প্যানেল ভাঙার জন্য বিভিন্ন প্রার্থীকে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এমনকি আমাদের প্যানেলের প্রার্থীদের পারসোনাল তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ ষড়যন্ত্র দূর থেকে করা হচ্ছে। প্যানেলে আসার আগেও অনেক প্রার্থীকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এতে আমাদের মনোবল ভাঙেনি।”
মাহিন সরকারকে নিয়ে তিনি বলেন, “প্যানেলে আসার আগেও মাহিনকে দল (এনসিপি) থেকে প্রেসার দেওয়া হয় এবং দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়। শেষ পর্যন্ত এলাকায় নাকি নেতাকর্মীরা প্রচুর হুমকি দিচ্ছে।
“আমার বলেছি, (মাহিন) আবারও ভেবে দেখেন। সে হয়ত সেই চাপটুকু নিতে পারেনি। এর আগেও মাহিন ডাকসু নিয়ে আন্দোলন করেছিল, তখনও তাকে হুমকি দেওয়া হয়। আমরা মনে করি সে ভুল করেছে।”
ডাকসু নির্বাচনে ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলে জিএস পদের মনোনয়ন ফরম নেওয়ার পর গত ১৮ অগাস্ট এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিনকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ প্যানেল থেকে ভিপি বা সহ-সভাপতি পদে লড়ছেন ‘স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংসদ’ এর আহ্বায়ক জামাল উদ্দীন খালিদ।
জিএস পদে প্রার্থী হলেও শুক্রবার এনসিপির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) জিএস পদপ্রার্থী আবু বাকের মজুমদারকে সমর্থন জানিয়ে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান মাহিন।
তার ভাষ্য, গণঅভ্যুত্থানের সব শক্তির ঐক্য ধরে রাখার জন্য তিনি ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। যদিও তার সরে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী জামাল ‘বিভিন্ন চাপের’ কথা বলছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জামাল উদ্দীন বলেন, “মাহিন সরকারকে নিয়ে জুলাই শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার ফ্রেমিং করা হচ্ছে। জুলাই কেন্দ্রীক চেতনাকে বিক্রি করে ‘সিম্প্যাথির’ মাধ্যমে ভোট ব্যাংক বাড়াতে চায়। তাহলে এখানে প্যানেলে যারা আছে, তারা কি জুলাইয়ের সম্মুখসারির যোদ্ধা না? আমাদের প্যানেলে জুলাইয়ে আহত অনেকজন আছে, সহ-সমন্বয়করা আছে। জুলাই অভ্যুত্থান কারও একার শরিকানা নয়। একাত্তরের চেতনাকে আওয়ামী লীগের একক সম্পত্তি বানিয়ে যেভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিকে নষ্ট করা হয়েছিল, একই চেষ্টা এখন করা হচ্ছে।”
তার দাবি, “শিক্ষার্থীদের কাছে আমাদের সাড়া দেখে তারা এমন ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু আমাদের মনোবল চাঙ্গা আছে। আমরা মনে করছি এটা আমাদের শক্তি। আমরা মাঠ ছাড়ব না, আমাদের শিডিউল অনুযায়ী কাজ করছি।”
‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের এজিএস প্রার্থী ফাতেহা শারমিন এ্যানি বলেন, “একক ব্যক্তির কারণে আমরা ভেঙে পড়ব না। লেজুড়বৃত্তির ভয় আমাদের দেখানো হচ্ছে। আমরা দলীয় লেজুড়বৃত্তির বিরুদ্ধে সবসময় লড়েছি। আমার মাঠ থেকে লড়াই করতে করতে এ পর্যন্ত এসেছি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম