আগামি ২৮ অগাস্ট এই তিন মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ রাখা হয়েছে।
‘প্লট দুর্নীতি’: হাসিনা, রেহানা, টিউলিপদের বিরুদ্ধে তিন মামলায় বাদীর সাক্ষ্য

- আপডেট সময় ০৫:৩১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
- / ৩২ বার পড়া হয়েছে
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকদের বিরুদ্ধে দুদকের করা তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে।
বুধবার ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ মো. রবিউল আলমের আদালতে তিন মামলার বাদীরা সাক্ষ্য দেন।
সাক্ষীরা হলেন- দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া এবং সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।
আগামি ২৮ অগাস্ট এই তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম।
এদিন বেলা ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। একে একে তিনজন সাক্ষ্য দেন। তাদের সাক্ষ্য শেষ হয় পৌনে ৩টায়।
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ৬ প্লট দুর্নীতির মামলায় গত ৩১ জুলাই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার সঙ্গে তাদের সন্তানসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালত।
এর মধ্যে তিন মামলায় শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ১১ অগাস্ট। ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে ওই তিন মামলার বিচার কাজ চলছে।
এবার বিশেষ জজ রবিউল আলমের আদালতে বাকি তিন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হল।
শেখ পরিবারের বাইরে যে ১৬ জন আসামির তালিকায় রয়েছেন, তারা হলেন— জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।

শেখ রেহানা, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী ও টিউলিপ সিদ্দিক
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ভারতে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। তার পরিবারের অন্যরাও দেশের বাইরে। পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী সাক্ষীদের জেরা করার সুযোগ পাচ্ছেন না।
তাদের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা করে ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গত ডিসেম্বরে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এরপর ১২ জানুয়ারি প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহার ও নিয়মের অভিযোগে পুতুলের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করে দুদক। পরদিন শেখ রেহানা, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর বিরুদ্ধে মামলা করে সংস্থাটি।
এরপর ১৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুদক। এই ছয় মামলাতেই শেখ হাসিনাকে আসামি করেছে দুদক। অন্যদেরও কেউ কেউ একাধিক মামলার আসামি। সব মিলিয়ে ছয় মামলার আসামির সংখ্যা ২৩।
এসব মামলায় দুদক অভিযোগ করেছে, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। অযোগ্য হলেও তারা পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ নেন।
মইদুল হাসান – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম