১১:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫
২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শিশুটিকে অপহরণের দুই দিন পর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

বরগুনায় মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, যুবকের মৃত্যুদণ্ড

বরগুনা প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৮:১৯:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

বরগুনা আদালতে রায় ঘোষণা শেষে আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

 

বরগুনার আমতলী উপজেলায় ষষ্ঠ শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড ও তার সহযোগীকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

বুধবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান রাস্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) রনজুয়ারা সিপু।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া মো. হৃদয় খান (২০) উপজেলার পূঁজাখোলা ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা। পাঁচ বছরের সাজা পাওয়া জাহিদুল ইসলাম (১৯) একই এলাকার বাসিন্দা।

মামলার বরাতে পিপি রনজুয়ারা সিপু বলেন, ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে ১২ বছরের শিশুটি ঘুম থেকে উঠে বাড়ির পাশে ক্ষেতে শাক তুলে ঘরে রেখে আবার বাইরে যায়। দুপুরের পরও শিশুটি বাড়ি না ফেরার পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন।

অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে পরদিন শিশুটির বাবা আমতলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর মধ্যে শিশুটির ভাইয়ের মোবাইল নম্বরে অজ্ঞাত পরিচয় একজন বার্তা পাঠিয়ে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।

তিনি বলেন, মোবাইলের বার্তা ধরে ৭ ফেব্রুয়ারি হৃদয় খানকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় খান পুলিশকে জানান, মুক্তিপণের উদ্দেশে মেয়েটিকে অপহরণ করেছেন তিনি। পরে মুক্তিপণ না পেয়ে প্রথমে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়।

ধর্ষণের কথা পরিবারের কাছে বলে দিতে পারে এমন আশঙ্কায় মেয়েটিকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় হৃদয় খানকে সহযোগীতা করেন জাহিদুল। পরে হৃদয় খানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি হৃদয় আমতলীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আরিফুর রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে জানান পিপি রনজুয়ারা সিপু।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে হৃদয়কে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং জাহিদুলকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়; যা অনাদায়ে তাকে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাবাসে থাকতে হবে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী।

রায়ে ন্যায়বিচার পাওয়ার কথা বলে শিশুটির বাবা বলেন, “অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে হৃদয় আমার মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গোপন করার জন্য হোগল পাতার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিল।”

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল ওয়াসি মতিন বলেন, “শিশুটির মেডিকেল প্রতিবেদনে ধর্ষণের কোনো আলামত নেই। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমার মক্কেল উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।”

 

 

 

বরগুনা প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শিশুটিকে অপহরণের দুই দিন পর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

বরগুনায় মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, যুবকের মৃত্যুদণ্ড

আপডেট সময় ০৮:১৯:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

 

বরগুনার আমতলী উপজেলায় ষষ্ঠ শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড ও তার সহযোগীকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

বুধবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান রাস্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) রনজুয়ারা সিপু।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া মো. হৃদয় খান (২০) উপজেলার পূঁজাখোলা ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা। পাঁচ বছরের সাজা পাওয়া জাহিদুল ইসলাম (১৯) একই এলাকার বাসিন্দা।

মামলার বরাতে পিপি রনজুয়ারা সিপু বলেন, ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে ১২ বছরের শিশুটি ঘুম থেকে উঠে বাড়ির পাশে ক্ষেতে শাক তুলে ঘরে রেখে আবার বাইরে যায়। দুপুরের পরও শিশুটি বাড়ি না ফেরার পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন।

অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে পরদিন শিশুটির বাবা আমতলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর মধ্যে শিশুটির ভাইয়ের মোবাইল নম্বরে অজ্ঞাত পরিচয় একজন বার্তা পাঠিয়ে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।

তিনি বলেন, মোবাইলের বার্তা ধরে ৭ ফেব্রুয়ারি হৃদয় খানকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় খান পুলিশকে জানান, মুক্তিপণের উদ্দেশে মেয়েটিকে অপহরণ করেছেন তিনি। পরে মুক্তিপণ না পেয়ে প্রথমে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়।

ধর্ষণের কথা পরিবারের কাছে বলে দিতে পারে এমন আশঙ্কায় মেয়েটিকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় হৃদয় খানকে সহযোগীতা করেন জাহিদুল। পরে হৃদয় খানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি হৃদয় আমতলীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আরিফুর রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে জানান পিপি রনজুয়ারা সিপু।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে হৃদয়কে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং জাহিদুলকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়; যা অনাদায়ে তাকে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাবাসে থাকতে হবে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী।

রায়ে ন্যায়বিচার পাওয়ার কথা বলে শিশুটির বাবা বলেন, “অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে হৃদয় আমার মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গোপন করার জন্য হোগল পাতার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিল।”

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল ওয়াসি মতিন বলেন, “শিশুটির মেডিকেল প্রতিবেদনে ধর্ষণের কোনো আলামত নেই। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমার মক্কেল উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।”

 

 

 

বরগুনা প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম