০৬:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
বাণিজ্য যুদ্ধের নতুন পর্বে ১৪টি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের খড়্গে পড়েছে।

বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫% সম্পূরক শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের, কার্যকর ১ অগাস্ট

মিজানুর রহমান খান - বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ১১:৪৯:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
  • / ২৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ওপর নতুন শুল্ক ঘোষণা করে সোমবার চিঠি দিয়েছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট তেমনই এক চিঠি দেখাচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স

 

উচ্চ হারের শুল্ক তিন মাস স্থগিতের পর বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

সোমবার ৭ জুলাই নতুন শুল্ক হার ঘোষণা করে তিনি বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশকে চিঠি দিয়েছেন।

এতদিন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ, এখন নতুন করে আরও ৩৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ায় এটি দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে।

তাতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক খাত, কারণ যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার।

রয়টার্স লিখেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুতে যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেন, তার নতুন পর্ব হিসেবে নতুন শুল্ক হার ঘোষণা দেওয়া হল, যা কার্যকর হবে আগামী ১ অগাস্ট থেকে।

ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর গত ২ এপ্রিল শতাধিক দেশের ওপর চড়া হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশের ওপর বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা আসে।

এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে সম্পূরক শুল্ক পুনর্বিবেচনা করতে ডনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত তিন মাস স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হয় সেখানে।

বাংলাদেশের মত অনেক দেশই শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেন দরবার শুরু করে। কোনো কোনো দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক হার শুন্যের ঘরে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয়।

পুরো বিশ্বকে অস্থির করে তোলার এক সপ্তাহের মাথায় বাড়তি শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। শুল্ক বাড়িয়ে দেন কেবল চীনের ওপর।

এই তিন মাস সময় ট্রাম্প মূলত দিয়েছিলেন আলোচনার জন্য। বাংলাদেশের তরফ থেকেও সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ৬২৬টি পণ্যে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয় বাজেটে। এর মধ্যে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়।

 

ছবি: রয়টার্স

 

কিন্তু তাতে ট্রাম্পের মন গলেনি। যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৬ বিলিয়ন ডলারের মত। সে কথা তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা চিঠিতে।

সেখানে বলা হয়, “বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে বহু বছরের আলোচনায় আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে বাংলাদেশের শুল্ক ও অশুল্ক, নীতি এবং বাণিজ্যিক বাধার কারণে যে দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা থেকে আমাদের অবশ্যই সরে আসতে হবে।

“দুঃখজনকভাবে, আমাদের সম্পর্ক সমকক্ষ হওয়া থেকে অনেক দূরে। ২০২৫ সালের ১ অগাস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো বাংলাদেশের যে কোনো পণ্যের ওপর আমরা মাত্র ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব।”

চিঠিতে ট্রাম্প বলেছেন, এই শুল্ক সব খাতভিত্তিক শুল্কের অতিরিক্ত হিসেবে প্রযোজ্য হবে। উচ্চ শুল্ক এড়াতে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে পণ্য পাঠানো হলে তার ওপরও সেই উচ্চ শুল্ক আরোপ হবে।

“দয়া করে এটা অনুধাবন করুন, আপনার দেশের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য বৈষম্য দূর করতে জন্য যা প্রয়োজন, তার থেকে ওই ৩৫ শতাংশ সংখ্যাটি অনেক কম,” লিখেছেন ট্রাম্প।

বাংলাদেশের সঙ্গে আর যেসব দেশ শুল্কের খড়্গে পড়েছে, তার মধ্যে রয়েছে- লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, মালয়েশিয়া, তিউনিসিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়েছে মিয়ানমার ও লাওস।

এনডিটিভি লিখেছে, নতুন শুল্ক হার ঘোষণা করলেও ডনাল্ড ট্রাম্প আলোচনার দুয়ার খোলা রাখার কথা বলেছেন। তাতে ১ অগাস্টের আগে অনেক দেশের ক্ষেত্রে তিনি নমনীয় হতে পারেন।

ট্রাম্প বলেছেন, ১ অগাস্টের সময়সীমা একেবারে চূড়ান্ত নয়।

যেসব দেশ আরও ছাড় দিতে রাজি, তাদের প্রতি সদয় হবেন জানিয়ে তিনি বলেছেন, “পরিস্থিতি বুঝে কিছুটা সমন্বয় করা যেতে পারে… আমরা অবিচার করব না।”

তবে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, বাণিজ্যিক অংশীদাররা কোনো প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করলে জবাবে সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টাকে লেখা চিঠিতে তিনি বলেছেন, “আপনি যদি কোনোভাবে শুল্ক বৃদ্ধি করেন, তাহলে আপনি যতটা বাড়াবেন, তা আমাদের আরোপিত ৩৫ শতাংশের ওপর যোগ হবে।”

ওই চিঠি ট্রাম্পের ট্রুথ সোশালে প্রকাশ পেয়েছে।

কোন দেশে কত শুল্ক

  • লাওস – ৪০%
  • মিয়ানমার – ৪০%
  • থাইল্যান্ড – ৩৬%
  • কম্বোডিয়া – ৩৬%
  • বাংলাদেশ – ৩৫%
  • সার্বিয়া – ৩৫%
  • ইন্দোনেশিয়া – ৩২%
  • দক্ষিণ আফ্রিকা – ৩০%
  • বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা – ৩০%
  • মালয়েশিয়া – ২৫%
  • তিউনিসিয়া – ২৫%
  • জাপান – ২৫%
  • দক্ষিণ কোরিয়া – ২৫%
  • কাজাখস্তান – ২৫%

বিবিসি লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত কেবল যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে পেরেছে। ভারতও চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে।

ট্রাম্প বলেন, “আমরা যুক্তরাজ্যের সাথে চুক্তি করেছি, চীনের সাথে চুক্তি করেছি, এবং ভারতের সাথে চুক্তি প্রায় চুক্তি হওয়ার পথে…

“অন্যান্য যেসব দেশের সাথে আমরা আলোচনা করেছি, সেসব ক্ষেত্রে চুক্তি সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না। তাই আমরা তাদের শুধু একটি চিঠি পাঠিয়েছি।”

বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে ২০২৪ সালে বাংলাদেশ প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, যার মধ্যে তৈরি পোশাকই ৭৩৪ কোটি ডলারের।

ভিয়েতনামের পর ভারতও যদি ট্রাম্পের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলতে পারে, সেক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের দাম বেশি বাড়বে। আর তাতে ভিয়েতনাম ও ভারতের মতো প্রতিযোগী দেশ বেশি সুবিধা পাবে।

সূত্র :  বিবিসি / রয়টার্স /ট্রুথ সোশাল

 

 

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

বাণিজ্য যুদ্ধের নতুন পর্বে ১৪টি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের খড়্গে পড়েছে।

বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫% সম্পূরক শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের, কার্যকর ১ অগাস্ট

আপডেট সময় ১১:৪৯:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

 

উচ্চ হারের শুল্ক তিন মাস স্থগিতের পর বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

সোমবার ৭ জুলাই নতুন শুল্ক হার ঘোষণা করে তিনি বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশকে চিঠি দিয়েছেন।

এতদিন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ, এখন নতুন করে আরও ৩৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ায় এটি দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে।

তাতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক খাত, কারণ যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার।

রয়টার্স লিখেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুতে যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেন, তার নতুন পর্ব হিসেবে নতুন শুল্ক হার ঘোষণা দেওয়া হল, যা কার্যকর হবে আগামী ১ অগাস্ট থেকে।

ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর গত ২ এপ্রিল শতাধিক দেশের ওপর চড়া হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশের ওপর বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা আসে।

এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে সম্পূরক শুল্ক পুনর্বিবেচনা করতে ডনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত তিন মাস স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হয় সেখানে।

বাংলাদেশের মত অনেক দেশই শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেন দরবার শুরু করে। কোনো কোনো দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক হার শুন্যের ঘরে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয়।

পুরো বিশ্বকে অস্থির করে তোলার এক সপ্তাহের মাথায় বাড়তি শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। শুল্ক বাড়িয়ে দেন কেবল চীনের ওপর।

এই তিন মাস সময় ট্রাম্প মূলত দিয়েছিলেন আলোচনার জন্য। বাংলাদেশের তরফ থেকেও সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ৬২৬টি পণ্যে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয় বাজেটে। এর মধ্যে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়।

 

ছবি: রয়টার্স

 

কিন্তু তাতে ট্রাম্পের মন গলেনি। যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৬ বিলিয়ন ডলারের মত। সে কথা তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা চিঠিতে।

সেখানে বলা হয়, “বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে বহু বছরের আলোচনায় আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে বাংলাদেশের শুল্ক ও অশুল্ক, নীতি এবং বাণিজ্যিক বাধার কারণে যে দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা থেকে আমাদের অবশ্যই সরে আসতে হবে।

“দুঃখজনকভাবে, আমাদের সম্পর্ক সমকক্ষ হওয়া থেকে অনেক দূরে। ২০২৫ সালের ১ অগাস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো বাংলাদেশের যে কোনো পণ্যের ওপর আমরা মাত্র ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব।”

চিঠিতে ট্রাম্প বলেছেন, এই শুল্ক সব খাতভিত্তিক শুল্কের অতিরিক্ত হিসেবে প্রযোজ্য হবে। উচ্চ শুল্ক এড়াতে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে পণ্য পাঠানো হলে তার ওপরও সেই উচ্চ শুল্ক আরোপ হবে।

“দয়া করে এটা অনুধাবন করুন, আপনার দেশের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য বৈষম্য দূর করতে জন্য যা প্রয়োজন, তার থেকে ওই ৩৫ শতাংশ সংখ্যাটি অনেক কম,” লিখেছেন ট্রাম্প।

বাংলাদেশের সঙ্গে আর যেসব দেশ শুল্কের খড়্গে পড়েছে, তার মধ্যে রয়েছে- লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, মালয়েশিয়া, তিউনিসিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়েছে মিয়ানমার ও লাওস।

এনডিটিভি লিখেছে, নতুন শুল্ক হার ঘোষণা করলেও ডনাল্ড ট্রাম্প আলোচনার দুয়ার খোলা রাখার কথা বলেছেন। তাতে ১ অগাস্টের আগে অনেক দেশের ক্ষেত্রে তিনি নমনীয় হতে পারেন।

ট্রাম্প বলেছেন, ১ অগাস্টের সময়সীমা একেবারে চূড়ান্ত নয়।

যেসব দেশ আরও ছাড় দিতে রাজি, তাদের প্রতি সদয় হবেন জানিয়ে তিনি বলেছেন, “পরিস্থিতি বুঝে কিছুটা সমন্বয় করা যেতে পারে… আমরা অবিচার করব না।”

তবে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, বাণিজ্যিক অংশীদাররা কোনো প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করলে জবাবে সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টাকে লেখা চিঠিতে তিনি বলেছেন, “আপনি যদি কোনোভাবে শুল্ক বৃদ্ধি করেন, তাহলে আপনি যতটা বাড়াবেন, তা আমাদের আরোপিত ৩৫ শতাংশের ওপর যোগ হবে।”

ওই চিঠি ট্রাম্পের ট্রুথ সোশালে প্রকাশ পেয়েছে।

কোন দেশে কত শুল্ক

  • লাওস – ৪০%
  • মিয়ানমার – ৪০%
  • থাইল্যান্ড – ৩৬%
  • কম্বোডিয়া – ৩৬%
  • বাংলাদেশ – ৩৫%
  • সার্বিয়া – ৩৫%
  • ইন্দোনেশিয়া – ৩২%
  • দক্ষিণ আফ্রিকা – ৩০%
  • বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা – ৩০%
  • মালয়েশিয়া – ২৫%
  • তিউনিসিয়া – ২৫%
  • জাপান – ২৫%
  • দক্ষিণ কোরিয়া – ২৫%
  • কাজাখস্তান – ২৫%

বিবিসি লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত কেবল যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে পেরেছে। ভারতও চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে।

ট্রাম্প বলেন, “আমরা যুক্তরাজ্যের সাথে চুক্তি করেছি, চীনের সাথে চুক্তি করেছি, এবং ভারতের সাথে চুক্তি প্রায় চুক্তি হওয়ার পথে…

“অন্যান্য যেসব দেশের সাথে আমরা আলোচনা করেছি, সেসব ক্ষেত্রে চুক্তি সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না। তাই আমরা তাদের শুধু একটি চিঠি পাঠিয়েছি।”

বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে ২০২৪ সালে বাংলাদেশ প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, যার মধ্যে তৈরি পোশাকই ৭৩৪ কোটি ডলারের।

ভিয়েতনামের পর ভারতও যদি ট্রাম্পের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলতে পারে, সেক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের দাম বেশি বাড়বে। আর তাতে ভিয়েতনাম ও ভারতের মতো প্রতিযোগী দেশ বেশি সুবিধা পাবে।

সূত্র :  বিবিসি / রয়টার্স /ট্রুথ সোশাল

 

 

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম