“ঐক্য ছাড়া আমরা যে বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছি, শহীদরা যে বাংলাদেশ চেয়েছিল, তা সম্ভব নয়।”
বিভাজনের রাজনীতি দিয়ে শহীদের মর্যাদা রক্ষা সম্ভব নয়: মেয়র শাহাদাত

- আপডেট সময় ০২:১৯:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫
- / ৩৬ বার পড়া হয়েছে
জুলাই শহীদদের আত্মত্যাগের আদর্শই গণতন্ত্রের পথে ফিরে যাওয়ার লড়াইয়ে পথ দেখাবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেছেন, “জুলাই আন্দোলনের শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। তাদের আত্মত্যাগের আদর্শই আমাদের পথ দেখাবে গণতন্ত্রের পথে ফিরে যাওয়ার লড়াইয়ে।
“আমরা অনেকবার অভ্যুত্থান দিবস পালন করেছি, আর নয়। এবার আমাদের স্বপ্ন- একটি দুর্নীতিমুক্ত, মৌলিক অধিকার ও গণতন্ত্র সম্পন্ন বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতেই হবে।”
মঙ্গলবার সকালে নগরীর দামপাড়ায় গরীবুল্লাহ শাহ মাজারে জুলাই শহীদ মোহাম্মদ আলমের কবর জিয়ারত শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেয়র শাহাদাত বলেন, “আজকের দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, গণতন্ত্রের জন্য জীবন দেওয়া শহীদদের ঋণ শোধে আমরা কতটা ব্যর্থ। সেই ব্যর্থতা কাটাতে হলে বিভাজন ভুলে জাতীয় ঐক্যের পতাকাতলে সবাইকে সমবেত হতে হবে।
“৫ আগস্ট আমাদের জন্য আনন্দেরও, বেদনারও। আনন্দ এই জন্য যে, আজকের প্রজন্ম শহীদদের রক্তের ঋণ মনে রেখেছে। কিন্তু বেদনার এই যে, শহীদদের পরিবার আজও কান্নায় ভাসে। তাদের সন্তান, ভাই, আত্মীয় হারানোর শোক আজও মুছে যায়নি। এই শোক আমাদের আনন্দকে ম্লান করে দেয়।”
তিনি বলেন, “আমরা শহীদদের স্মৃতি বুকে ধারণ করে বলতে চাই- বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত, মৌলিক অধিকারসমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যই আমাদের একমাত্র শক্তি। বিভাজন আর অনৈক্যের রাজনীতি দিয়ে শহীদদের আত্মত্যাগের মর্যাদা রাখা যাবে না।
“গত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো নির্যাতনের শিকার হয়েছে, আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছে। আজকের দিনে আমরা যদি তাদের আত্মত্যাগের মূল্য দিতে চাই, তাহলে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যের পথে আসতে হবে। কারণ ঐক্য ছাড়া আমরা যে বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছি, শহীদরা যে বাংলাদেশ চেয়েছিল, তা সম্ভব নয়।”
মেয়র শাহাদাত বলেন, “আমরা নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে ছিলাম, একাত্তরে আমাদের পূর্বসূরিরা মুক্তিযুদ্ধে লড়েছে। ২০২৪ সালে আমাদের সন্তানরা শহীদ হয়েছে। বারবার কেন আমাদের গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করতে হবে?
“আমরা চাই, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি সুষম, সাম্যের জাতি গড়তে, যেখানে সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।”
গণতন্ত্র ধ্বংস করে কেউ টিকতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তাই আমাদের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে ভোটের মাধ্যমে জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনতেই হবে। আমার অধিকার আমার ভোট। ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
“আমি যেন কেন্দ্রে গিয়ে আমার ভোট দিতে পারি। এই অধিকার রক্ষা করতেই আমাদের লড়াই। ঐক্যের ভিত্তিতেই শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলব।”
কবর জিয়ারত শেষে শহীদ মোহাম্মদ আলমের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মেয়র, দেন সহায়তার প্রতিশ্রুতি।
পরে শাহাদাত হোসেন নগরীর টাইগারপাসে অস্থায়ী নগর ভবনে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে আয়োজিত দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভায় অংশ নেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা কিসিঞ্জার চাকমা।
নিঝুম আহমেদ – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম