ইউটিউব টিভি ও ফক্সের মধ্যে চুক্তি নবায়নের তারিখ শেষ হবে বুধবার। দুই কোম্পানির মধ্যে আলোচনা চললেও এখনো কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি তারা।
বুধবারই ইউটিউব টিভি থেকে সরতে পারে ফক্সের বিভিন্ন চ্যানেল

- আপডেট সময় ০১:০০:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
- / ২৮ বার পড়া হয়েছে
ফক্স কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে তাদের টিভি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম থেকে ফক্স-এর বিভিন্ন চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে ইউটিবের মূল কোম্পানি গুগল।
সোমবার ইউটিউব বলেছে, আমেরিকান বহুজাতিক গণমাধ্যম ফক্স কর্পোরেশনের সঙ্গে নতুন চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে নিজেদের ইউটিউব টিভি থেকে ফক্স ব্রডকাস্ট নেটওয়ার্ক, ফক্স নিউজ ও ফক্স স্পোর্টসসহ বিভিন্ন চ্যানেল সরিয়ে ফেলবে তারা।
এক ব্লগ পোস্টে ইউটিউব বলেছে, ইউটিউব টিভি ও ফক্সের মধ্যকার চুক্তি নবায়নের তারিখ শেষ হবে বুধবার। দুই কোম্পানির মধ্যে আলোচনা চললেও এখনো কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি তারা। ফক্সের সঙ্গে সম্ভাব্য বিবাদ সম্পর্কে ইউটিউব টিভি গ্রাহকদের ইমেলও করেছে কোম্পানিটি।
ব্লগ পোস্টে ইউটিউব আরও লিখেছে, “ফক্স অনেক অর্থ চাইছে, যা একই ধরনের কনটেন্ট সরবরাহকারী অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে অনেক বেশি। আমাদের প্রধান লক্ষ্য এমন চুক্তিতে পৌঁছানো, যা তাদের কনটেন্টের মূল্য ঠিকভাবে তুলে ধরে এবং উভয় পক্ষের জন্য ন্যায্য হয়, একই সঙ্গে আমাদের গ্রাহকদের যেন অতিরিক্ত অর্থ গুনতে না হয়।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্র সময় বিকেল ৫টার মধ্যে ফক্সের সঙ্গে নতুন চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে ইউটিউব টিভিতে থাকা ফক্সের বিভিন্ন চ্যানেল বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে গুগল।
আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি প্রতিবেদনে লিখেছে, ফক্সের মতো সম্প্রচারকারী বিভিন্ন কোম্পানিকে তাদের চ্যানেল দেখানোর জন্য অর্থ দেয় ইউটিউব। ফলে এ চুক্তি ভেঙে গেলে এর প্রভাব পড়তে পারে বিজ্ঞাপনদাতাদের ওপর এবং সেইসব লাখ লাখ দর্শকের ওপরও, যারা কেবল টিভি ছেড়ে ইউটিউব টিভিতে ফক্সের বিভিন্ন চ্যানেল দেখছেন।
এক বিবৃতিতে ফক্স বলেছে, “গুগলের ইউটিউব টিভির সঙ্গে একটি ন্যায্য চুক্তিতে পৌঁছাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও আমরা হতাশ যে, গুগল তাদের অতিরিক্ত প্রভাব ব্যবহার করে এমন সব শর্ত দিচ্ছে, যা বাজারের বাস্তবতার সঙ্গে মিলছে না।”
ফক্স আর ইউটিউব টিভির বিরোধটিকে সাম্প্রতিক সময়ের নানা চুক্তি-সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের আরেকটি উদাহরণ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কনটেন্ট তৈরি করা কোম্পানি আর স্ট্রিমিং বা টিভি সেবা দাতাদের মধ্যে এমন টানাপোড়েন এখন আরও বেশি চোখে পড়ছে। কারণ, সিএনবিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ক্রমেই দর্শকরা ক্রমেই কেবল টিভি থেকে সরে গিয়ে অনলাইন স্ট্রিমিংয়ের দিকে ঝুঁকছেন।
ফেব্রুয়ারিতে ‘প্যারামাউন্ট গ্লোবাল’ নিজেদের ইউটিউব টিভির গ্রাহকদের বলেছে, সিবিএস, বিইটি, কমেডি সেন্ট্রাল, এমটিভি ও নিকেলোডিয়নসহ ২০টিরও বেশি চ্যানেল বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যদি না তারা ইউটিউব টিভির সঙ্গে নতুন চুক্তিতে পৌঁছাতে পারে। তবে এর কিছুদিন পরেই প্যারামাউন্ট গ্লোবাল ও ইউটিউব টিভি তাদের বহু বছরের বণ্টন চুক্তি ঘোষণা করে। ফলে এসব চ্যানেল চালু রাখা সম্ভব হয়।
ইউটিউব টিভির বেসিক প্ল্যানের দাম মাসে ৮২ দশমিক ৯৯ ডলার এবং এতে থাকে একশটিরও বেশি লাইভ চ্যানেল ও অগণিত ক্লাউড ডিভিআর সুবিধা।
ইউটিউব বলেছে, তাদের ব্যবহারকারীদের প্রতি প্রতিশ্রুতির গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হল ফক্সের মতো কনটেন্ট সরবরাহকারীদের সঙ্গে অংশীদারিত্ব, “যা আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের চ্যানেল সম্প্রচারের সুযোগ করে দেয়।”
গুগল বলেছে, ফক্স যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ থাকে তাহলে ইউটিউব তার গ্রাহকদের ১০ ডলার করে ক্রেডিট হিসাবে ফেরত দেবে। পাশাপাশি ব্যবহারকারীরা ফক্সের কনটেন্ট দেখতে ‘ফক্স ওয়ান’ নামের ফক্সের নিজস্ব স্ট্রিমিং সার্ভিসে সাবস্ক্রাইব করতে পারবেন।
প্রযুক্তি ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম