সংধোধিত প্রবিধিমালায় একই ব্যক্তির দুটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি হওয়ার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে।
বেসরকারি স্কুল-কলেজ: গভর্নিং বডির সভাপতি হতে স্নাতক বাধ্যতামূলক

- আপডেট সময় ০৫:২৯:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৮ বার পড়া হয়েছে
বেসরকারি স্কুল-কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি পদে মনোনয়ন পেতে প্রার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বেসরকারি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হতে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম চার বছর মেয়াদি স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। আর বেসরকারি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হতে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বা সমমান ডিগ্রি থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এছাড়া সভাপতি মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিধি-বিধানে কিছুটা পরিবর্তন এনে নয়টি শিক্ষা বোর্ডের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যমান প্রবিধানমালা সংশোধন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার উপসচিব সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, “বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদের যোগ্যতা ও মনোনয়নের বিধিবিধান পরিবর্তন করে শিক্ষা বোর্ডগুলোর গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির প্রবিধানমালা সংশোধন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধানমালায় একই ধরনের সংশোধন আনা হয়েছে।”
রোববার বিজি প্রেস থেকে এ প্রবিধানমালাগুলোর সংশোধন জারি করা হয়েছে তুলে ধরে উপসচিব বলেন, “আমরা (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ) সংশোধনের প্রজ্ঞাপনগুলোকে চিঠির মাধ্যমে একনলেজ করব।”
গভর্নিং বডির সভাপতি পদে যত পরিবর্তন
২০২৪ সালের এপ্রিলে জারি করা আগের প্রবিধানমালা ও সংশোধনের প্রজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গভর্নিং বডির সভাপতি পদের প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে এইচএসসি ও সমমান উত্তীর্ণ প্রার্থীরা বেসরকারি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি পদে নির্বাচিত হতে পারতেন। তবে সংশোধনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি গভর্নিং বডির সভাপতি পদে মনোনীত হতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা চার বছর মেয়াদি স্নাতক বা সমমান ডিগ্রি থাকতে হবে।
আগের প্রবিধানমালায় গভর্নিং বডির সভাপতি, শিক্ষক প্রতিনিধি ও অভিভাবক প্রতিনিধির বেলায় পরপর দুইবারের বেশি একই ব্যক্তির নির্বাচিত হওয়ার বিধান না থাকলেও সংশোধনে শুধু সভাপতি পদে একই ব্যক্তিকে পরপর দুই বারের বেশি নির্বাচিত না হওয়ার বিধান করা হয়েছে।
আগের বিধিমালায় একই ব্যক্তিকে দুইটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হলেও সংশোধিত প্রবিধানমালায় সে সুযোগ কমিয়ে একই ব্যক্তির জন্য একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গভর্নিং বডির সভাপতি নির্বাচনের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে।
আগের প্রবিধানমালায় একই ব্যক্তিকে একইসঙ্গে চারটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে থাকার সুযোগ দেওয়া হলেও প্রবিধানমালার সংশোধনে একই ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ তিনটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে পার্বত্য জেলার জন্য এ বিধান প্রযোজ্য হবে না।
আগের প্রবিধানমালায় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি প্রথম শ্রেণির কর্মচারী, শিক্ষা অনুরাগী ব্যক্তি বা সমাজসেবকদের মধ্যে থেকে তিনজনের নাম সভাপতি পদে মনোনয়নের জন্য শিক্ষা বোর্ডে পাঠানোর বিধান রাখা হলেও সংশোধিত প্রবিধানমালায় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আলোচনা করে নবম গ্রেডের নিচের নয় এমন সরকারি কর্মকর্তা, ৫ম গ্রেডের নিচে নয় এমন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারি কলেজের অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক, সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, এমবিবিএস বা প্রকৌশল বা কৃষিসহ যেকোনো কারিগরি বিষয়ে চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রিসহ নবম গ্রেডের নিচে না এমন কর্মকর্তা বা পঞ্চম গ্রেডের নিচে না এমন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নাম সভাপতি পদে মনোনয়নের জন্য শিক্ষা বোর্ডে পাঠানোর বিধান সংযোজন করা হয়েছে।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে যত পরিবর্তন
বেসরকারি স্কুলের ম্যানেজি কমিটির সভাপতি পদের প্রার্থীদেরও শিক্ষাগত যোগ্যতায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে এইচএসসি ও সমমান উত্তীর্ণ প্রার্থীরা বেসরকারি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচিত হতে পারতেন। তবে সংশোধনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে মনোনীত হতে তার স্নাতক বা সমমান ডিগ্রি থাকতে হবে।
আগের প্রবিধানমালায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, শিক্ষক প্রতিনিধি ও অভিভাবক প্রতিনিধির বেলায় পরপর দুইবারের বেশি একই ব্যক্তির নির্বাচিত হওয়ার বিধান না থাকলেও সংশোধনে শুধু সভাপতি পদে একই ব্যক্তিকে পরপর দুই বারের বেশি নির্বাচিত না হওয়ার বিধান করা হয়েছে।
আগের বিধিমালার মতো সংশোধনে একই ব্যক্তিকে দুইটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে আগের বিধিমালায় একই ব্যক্তিকে মোট চারটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে থাকার সুযোগ দেওয়া হলেও সংশোধনে তা কমিটি তিনটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
প্রবিধানমালা সংশোধনে বেসরকারি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে মনোনয়নের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানকে বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আলোচনা করে নবম গ্রেডের নিচে নয় এমন সরকারি কর্মকর্তা, পঞ্চম গ্রেডের নিচে নয় এমন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক বা তদূর্ধ্ব গ্রেডভুক্ত অধ্যাপক, সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, এমবিবিএস বা প্রকৌশল বা কৃষিসহ যেকোনো কারিগরি বিষয়ে চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রিসহ নবম গ্রেডের নিচে না এমন কর্মকর্তা বা পঞ্চম গ্রেডের নিচে না এমন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নাম সভাপতি পদে মনোনয়নের জন্য শিক্ষা বোর্ডে পাঠানোর বিধান সংযোজন করা হয়েছে।
সাবরিনা জাহান- বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম