কোনো প্রমাণ না রাখতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা মুছে ফেলার এই অ্যাপ তারা ব্যবহার করতেন।
ভারতে আল-কায়েদার ৪ সদস্য গ্রেপ্তার, ফোনে ‘অটো-ডিলিট অ্যাপ’

- আপডেট সময় ১১:২৮:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
- / ৩৩ বার পড়া হয়েছে
জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ভারতে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে গুজরাটের অ্যান্টি-টেররিস্ট স্কোয়াড (এটিএস)।
এনডিটিভি লিখেছে, তারা জাল মুদ্রা তৈরির চক্র চালাচ্ছিলেন এবং আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনটির ভাবধারা ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। তাদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্য রাজ্য থেকে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মোহাম্মদ ফায়েক, মোহাম্মদ ফরদিন, সেফুল্লাহ কুরেশি ও জিশান আলী।
তারা সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ও সন্দেহজনক অ্যাপ ব্যবহার করে আল-কায়েদার মতাদর্শ প্রচার করতেন বলে ভারতীয় কর্মকর্তাদের ভাষ্য।
সূত্রের বরাতে এনডিটিভি লিখেছে, কোনো প্রমাণ না রাখতে তারা এমন অ্যাপ ব্যবহার করতেন, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা মুছে ফেলত। বর্তমানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গুজরাট এটিএসের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেপ্তাররা দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গি সংগঠনটির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারা সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে আল-কায়েদার সংস্পর্শে আসেন। গুজরাটে ‘সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড’ নিয়ে আলোচনার সময় তারা এটিএসের নজরে পড়েন।
এটিএস জানিয়েছে, তারা গ্রেপ্তারদের চ্যাট রেকর্ড ও সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বিশ্লেষণ করছে।
গুজরাট এটিএসের ডিআইজি সুনীল জোশী বলেন, “এই চারজন সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হয়। আমরা জানতে পেরেছি, দিল্লির বাসিন্দা ফায়েক পাকিস্তানের একজন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখত এবং ভারতে জিহাদি কার্যকলাপ ছড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করত।”
আহমেদাবাদে ফতেহওয়াড়ি এলাকায় শেখের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি তলোয়ার পাওয়া গেছে। এছাড়া আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার (একিউআইএস) প্রচারপত্র মিলেছে, যেখানে গত মে মাসে পাকিস্তানে চালানো ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা সুনীল জোশী বলেন, “এই চার আসামির মূল লক্ষ্য ছিল তরুণদের একিউআইএসের মতাদর্শের দিকে আকৃষ্ট করা এবং তাদের মাধ্যমে সহিংস পথে ভারতের গণতন্ত্রকে উৎখাত করে শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করা।
“তারা কোনো তহবিল পেয়েছিল কিনা এবং তাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা কী ছিল, আমরা তদন্ত করে দেখছি।”
ভারতীয় পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, তাদের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে একিউআইএসের প্রচারপত্র মিলেছে, যেখানে শরিয়াহ প্রতিষ্ঠার ডাক এবং এমন সব উসকানিমূলক বক্তব্য ছিল, যা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারত।
তারা একটি ভিডিও পোস্ট করেছিল, যাতে আসিম উমরকে দেখা যায়, যিনি ভারতীয় একিউআইএসে যোগ দিয়ে ২০১৯ সালে আফগানিস্তানে নিহত হন।
ডিআইজি জোশী বলেন, “তাদের কর্মকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের শামিল, যা সন্ত্রাসবাদকে উসকে দিতে, সশস্ত্র বিদ্রোহের প্রচার করতে এবং ভারতের সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ধ্বংস করতে চায়।”
এনডিটিভি লিখেছে, ওসামা বিন লাদেনের গুরু শেখ আব্দুল্লাহ আজম প্রতিষ্ঠিত ‘মাখতাব আল-খিদমাত’ থেকে আল-কায়েদা গড়ে উঠেছিল। আজম প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটি আফগানিস্তানে জঙ্গিদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করত। আল-কায়েদা ও সমমনা সংগঠনগুলো আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে জড়িত।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত আল-কায়েদার প্রধান ঘাঁটি ছিল আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের পেশোয়ারে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের শেষ পর্যন্ত তালেবানের আশ্রয়ে আফগানিস্তান থেকে সংগঠনটি পরিচালনা করতেন লাদেন ও তার সহযোগীরা।
সূত্র : এনডিটিভি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম