ক্রমবর্ধমান চাহিদার বড় অংশ মেটানো হচ্ছে আদানির বিদ্যুৎ থেকে।
ভারত থেকে আরও বিদ্যুৎ কিনছে বাংলাদেশ

- আপডেট সময় ০১:৪১:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২০ বার পড়া হয়েছে

ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ। সেইসঙ্গে দেশের তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে।
ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ। সেইসঙ্গে দেশের তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে।
গ্যাস সংকট ও কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের কারণে এ পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে বলে খাত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকদের বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স।
এ বার্তা সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ভারতের বিদ্যুৎ আসছে প্রধানত আদানি পাওয়ারের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। এ বছরের জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি ৭০ শতাংশ বেড়েছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদার বেশিরভাগ মেটানো হচ্ছে আদানির বিদ্যুৎ থেকে।
দেশে ২০২০ সাল পর্যন্ত এক দশকে বিদ্যুতের চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ মিটিয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস। কিন্তু সেই গ্যাসের অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ ও খরচ বাঁচাতে বিদ্যুৎ আমদানি বৃদ্ধির পাশাপাশি কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সামিট পাওয়ারের পরিচালক আদিবা আজিজ খান রয়টার্সকে বলেন, এটি খরচ সাশ্রয়ের একটা বিষয়। গ্যাস দরকার সার শিল্পের জন্য, যেখানে জ্বালানি তেলসহ অন্য উৎস থেকে সস্তা বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।
গ্যাস ও জ্বালানি তেল ব্যবহার করে সামিট পাওয়ার এক ডজন বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনা করছে।
এপেক সম্মেলনের সাইডলাইনে আদিবা আজিজ বলেছিলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। ভবিষ্যতে গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ‘নাও দেখা যেতে পারে’।
বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স লিখেছে, চাপজনিত কারিগরি ত্রুটির কারণে অনেক গ্যাস বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোদমে চলছে না। আর রক্ষণাবেক্ষণ বা মেরামতজনিত বন্ধ বা বিরতির কারণে কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতেও উৎপাদন কমে গেছে।
নাম প্রকাশ না করে রয়টার্সকে ওই কর্মকর্তা বলেন, সরকারের হাতে খুব বেশি বিকল্প ছিল না। ‘ব্ল্যাকআউট’ বা বিদ্যুতবিভ্রাট ঠেকাতে সরকার আমদানির পথ বেছে নিয়েছে এবং আদানির কাছে পর্যাপ্ত বিদ্যুত ছিল।
এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে বিপিডিবি কর্তৃপক্ষ কোনো জবাব দেয়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে আমদানি করা বিদ্যুতের পরিমাণ মোট চাহিদার ৯ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে। জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ১১ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে।
‘ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিক্স অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস’ এর বাংলাদেশভিত্তিক বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, মার্চ মাস থেকে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। সে কারণে মূলত সরকারকে আমদানি ও তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বাড়াতে হয়েছে।
অপরদিকে গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪৬ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে ৪৩ দশমিক ৯ শতাংশ হয়েছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনও ৩০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে কমে ২৬ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে।
অ্যানালাইটিকস ফার্ম কেপলারের তথ্য বলছে, জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে বাংলাদেশে এলএনজি আমদানি ২৪ শতাংশ বেড়েছে। তবুও সরকারি তথ্য অনুযায়ী গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে ১ দশমিক ২ শতাংশ।
মইদুল হাসান – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম