সাহসিকতার স্বীকৃতি হিসেবে এরই মধ্যে দিদারুলকে ‘প্রথম গ্রেডের ডিটেকটিভ’ হিসেবে মরণোত্তর পদোন্নতি দিয়েছে নিউ ইয়র্ক পুলিশ।
ভার্জিনিয়া অ্যাভিনিউয়ের নাম ‘ডিটেকটিভ দিদার অ্যাভিনিউ’ করার দাবি

- আপডেট সময় ১১:৪৮:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫
- / ৩১ বার পড়া হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় নিহত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামের ‘সাহসিকতার’ স্বীকৃতি হিসেবে ভার্জিনিয়া অ্যাভিনিউয়ের নাম ‘ডিটেকটিভ দিদার অ্যাভিনিউ’ করার দাবি উঠেছে।
শুক্রবার জ্যামাইকার হিলসাইড অ্যাভিনিউ সংলগ্ন মেজর মার্ক পার্কে দিদারের স্মরণে আয়োজিত কর্মসূচিতে এ দাবি তোলা হয়। সমাবেশ আয়োজন করে ‘জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি’।
সেখানে নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী জোহরান মামদানিকে এ দাবির কথা শোনান জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার।
তিনি বলেন, জোহরান মামদানি যদি নভেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হোন, তাহলে যেন সড়কটি দিদারুল ইসলামের নামে করা হয়।
সমাবেশে দিদারের কর্মনিষ্ঠার প্রশংসা করে মামদানি বলেন, “ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে যে উদাহরণ তৈরি করে গেলেন ডিটেকটিভ দিদারুল ইসলাম, তাকে ধারণ করতে হবে আমাদের সকলকে, তাহলেই তার প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব হবে। সেটা শুধু আজকের এই সমাবেশে নয়, সামনের প্রতিটি দিন ও ক্ষণে।”
তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়েই বহুজাতিক এ সমাজে তথা সারা আমেরিকায় নিজেদের পেশাদারিত্বের সততা-নিষ্ঠার প্রকাশ ঘটাতে হবে; কমিউনিটি হিসেবে আমরাও যে আমেরিকার উন্নয়ন অভিযাত্রায় নিরন্তর সরব রয়েছি, তার জানান দিতে হবে।

নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির নির্বাচিত নারী সদস্য জেনিফার রাজকুমার বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনে দিদার ছিলেন আমাদের কমিউনিটির মধ্যে সবার শ্রেষ্ঠ এবং উজ্জ্বলতম।
“প্রতিদিনই তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন এ সিটির নিরাপত্তার জন্য। নগরবাসীসহ দেশের নিরাপত্তা সুসংহত রাখার জন্য ডিটেকটিভ দিদারুল ইসলামের অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে হবে।”
দিদারের আত্মার শান্তি কামনা করে নিউইয়র্ক স্টেট সেনেটর জন ল্যু বলেন, তিনি ছিলেন উদীয়মান বাংলাদেশি কমিউনিটির অন্যতম তারকা।
দিদারের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, তিনি ছিলেন আমাদের কমিউনিটির গৌরবের প্রতীক। এই সিটির নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অন্যদের জন্য তিনি অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টে বাংলাদেশি আমেরিকানদের সংগঠন ‘বাপা’র সভাপতি এরশাদুর রহমান এবং সাবেক সভাপতি ক্যাপ্টেন করম চৌধুরীও দিদাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
সমাবেশে সেনেটের বিরোধীদলীয় নেতা চাক শুমারের প্রতিনিধি ছাড়াও দিদাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য দেন কাউন্সিলউইম্যান নাটালিয়া উইলিয়ামস।
অনুষ্ঠানের সমাপনীতে ছিল মোমবাতি প্রজ্বালন এবং দিদাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ। অনুষ্ঠানের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ছিলেন ‘ভালো’ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা।
দিদারুলের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়। প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে তিনি নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগে কাজ করে আসছিলেন। তিনি সেখানে মা-বাবা, দুই ছেলে ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন।
সোমবার এক অস্ত্রধারী ম্যানহটনের একটি ভবনে ঢুকে দিদারুলসহ চারজনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। এরপর আত্মহত্যা করে হামলাকারী।
সাহসিকতার স্বীকৃতি হিসেবে এরই মধ্যে দিদারুলকে ‘প্রথম গ্রেডের ডিটেকটিভ’ হিসেবে মরণোত্তর পদোন্নতি দিয়েছে নিউ ইয়র্ক পুলিশ।
নিউইয়র্ক প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম