অনেক বিজ্ঞানীর অনুমান, আজকের মতো মঙ্গল সবসময় এমন বসবাসের অযোগ্য ছিল না। অনেক আগে হয়ত সেখানে প্রাণ টিকে থাকার মতো পরিবেশ ছিল।
মঙ্গলে প্রাচীন প্রাণের ‘সম্ভাবনা’ দেখেছে নাসার পার্সিভ্যারেন্স রোভার

- আপডেট সময় ০২:০৭:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৪ বার পড়া হয়েছে
মঙ্গলে প্রাচীন বা বহু কোটি বছর আগে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে– এমন সম্ভাব্য চিহ্ন খুঁজে পেয়েছে গ্রহটিতে পাঠানো নাসার পার্সিভ্যারেন্স রোভার, যা মঙ্গলে প্রাণের খোঁজে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হতে পারে বলে দাবি গবেষকদের।
মঙ্গলে শত কোটি বছর আগের পলিমাটি থেকে তৈরি এমন এক পাথরের নমুনা সংগ্রহ করেছে রোভারটি। এ নমুনায় এমন কিছু ‘বায়োমার্কার’ বা জৈব রাসায়নিক চিহ্ন মিলেছে, যা থেকে ইঙ্গিত মেলে, লাল গ্রহটিতে হয়ত এক সময় জীবাণু ছিল।
এসব পাথরের মধ্যে এমন কিছু খনিজের সন্ধান মিলেছে, যা সাধারণত কাদা ও জৈব পদার্থের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।
এরপরও এর মানে এই নয় যে, মঙ্গলে নিশ্চিতভাবে একসময় প্রাণ ছিল। কারণ, প্রাণ ছাড়াও অন্যান্য প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হতে পারে এসব খনিজ।
তবে এখন পর্যন্ত মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণগুলোর মধ্যে এটি একটি। কারণ আমাদের এ প্রতিবেশী গ্রহটিতে একসময় প্রাণ ছিল কি না, সেই প্রশ্নে অনেক বড় একটি ইঙ্গিত এ গবেষণা।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার’-এ।
এ গবেষণার নেতৃত্বে থাকা ও ‘স্টনি ব্রুক ইউনিভার্সিটি’র গ্রহবিজ্ঞানী জোয়েল হুরোভিট্জ বলেছেন, “পৃথিবীতে যখন কাদা ও জৈব পদার্থ একসঙ্গে মিলে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কিছু নতুন খনিজ যেমন– ভিভিয়েনাইট ও গ্রেইজাইট তৈরি করে তখন তা অনেক সময়ই জীবাণুদের কারণে ঘটে।
“এসব জীবাণু ওই পরিবেশে জৈব পদার্থ খেয়ে বেঁচে থাকে এবং এদের বিপাক প্রক্রিয়ার ফল বা উপজাত হিসেবে এসব নতুন খনিজ তৈরি হয়।”
হুরোভিট্জ সতর্ক করে বলেছেন, এটি কেবলই মঙ্গলে খুঁজে পাওয়া সম্ভাব্য প্রাণের চিহ্ন। এর মাধ্যমে গ্রহটিতে প্রাচীন প্রাণের সরাসরি প্রমাণ মেলে না। তবে অনেক বিজ্ঞানীর অনুমান, আজকের মতো মঙ্গল সবসময় এমন বসবাসের অযোগ্য ছিল না। অনেক আগে হয়ত সেখানে প্রাণ থাকার মতো পরিবেশ ছিল।
সম্ভবত সুদূর অতীতে এ গ্রহটিতে অনেক পানি ছিল। গবেষকরা বলছেন, পার্সিভ্যারেন্স যেখান থেকে এ নমুনা সংগ্রহ করেছে সেই জায়গাটি একসময় ছিল এক নদী উপত্যকা, যার পানির প্রবাহ কোনো হ্রদের দিকে বয়ে যেত। তবে এসব ঘটেছিল প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি বছর আগে।
গত বছর এসব নমুনা সংগ্রহ করেছে রোভারটি। তবে গবেষকদের তা বিশ্লেষণ করতে কিছুটা সময় লেগেছে।
পার্সিভ্যারেন্স রোভার ২০২১ সাল থেকে মঙ্গলের মাটিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পাথর ও মাটি সংগ্রহ করে নিজের অনবোর্ড যন্ত্রপাতি দিয়ে তা বিশ্লেষণ করে চলেছে ছয় চাকার এ রোভারটি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গবেষণার কেবল শুরু এটি, সামনে আরও অনেক বিশ্লেষণ ও গবেষণা প্রয়োজন।
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম