তিনি বলেছেন, "রোগীদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা আন্তরিক ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।"
মাইলস্টোন: আহতদের সুচিকিৎসা, পরিবারকে কাউন্সেলিংয়ের নির্দেশ ইউনূসের

- আপডেট সময় ০৯:৩৪:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
- / ২৮ বার পড়া হয়েছে
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেছেন, “রোগীদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা আন্তরিক ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
আহত ও নিহতদের পরিবারের ট্রমা কাটিয়ে উঠতে মানসিক কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করারও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
তার দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছে অধ্যাপক ইউনূস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিনের কাছ থেকে পরিস্থিতি শোনেন এবং আহতদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান।
পরিচালক তাকে বলেন, আন্তর্জাতিক প্রোটোকল অনুসারে রোগীদের ‘মাল্টিডিসিপ্লিনারি কনসালটেশন বোর্ডের’ সুপারিশ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ‘সর্বোত্তম সেবা’ নিশ্চিত করতে দেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।
গত সোমবার দুপুরে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটি ভবনের মুখে বিধ্বস্ত হয়। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত যে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের বেশির ভাগই শিশু।
শনিবার দুজনকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর সব হাসপাতাল মিলে চিকিৎসাধীনের সংখ্যা ৪৬ জন, তাদের প্রায় সবাই আগুনে দগ্ধ হয়েছে।
এর মধ্যে বার্ন ইনস্টিটিউটে চার জন ‘ক্রিটিক্যাল’, নয় জন ‘সিভিয়ার’ এবং ২৩ জন ‘ইন্টারমিডিয়েট’ ক্যাটাগরির রোগী চিকিৎসাধীন। রোগীদের অবস্থার পরিবর্তন অনুযায়ী এই শ্রেণিবিন্যাস হালনাগাদ করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা চিকিৎসা সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি বা ওষুধের কোনো ঘাটতি আছে কি না তা জানতে চাইলে পরিচালক তাকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব কিছু সরবরাহ করা হচ্ছে। কিছু বিশেষ যন্ত্রপাতি বিদেশি চিকিৎসকরা সিঙ্গাপুর থেকে সঙ্গে এনেছেন।
হতাহতদের বিস্তারিত জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. সায়েদুর রহমান বলেন, শুরুতে আহতদের কাছাকাছি বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের বার্ন ইনস্টিটিউট ও কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ঘটনার পরপরই মন্ত্রণালয় থেকে বার্ন ইনস্টিটিউটকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছিল এবং জরুরি বিভাগে দ্রুত প্রায় ৩০ জন রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হয়।
তিনি জানান, শুরুতে ভিন্ন ভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলার কারণে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। কিছু দেহাবশেষ ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে শনাক্ত করতে হয়েছে, এতে কিছুটা সময় লেগেছে।
সায়েদুর রহমান বলেন, রোগীদের স্থানান্তরের সময় অ্যাম্বুলেন্সের ঘাটতি ‘তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছে’, যা দেশের জরুরি স্বাস্থ্যসেবার ‘সীমাবদ্ধতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে’।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অবিলম্বে একটি সুনির্দিষ্ট করণীয় প্রস্তাব দিতে বলেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
তিনি আহত ও নিহতদের পরিবারের ট্রমা কাটিয়ে উঠতে মানসিক কাউন্সেলিংয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন।
এ কার্যক্রমে সকল আহত ব্যক্তি, তাদের পরিবার ও মাইলস্টোন স্কুলের সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন সরকারপ্রধান।
এছাড়া, আহতদের স্বজনদের হাসপাতাল অবস্থানের সময় ‘যত্নবান’ হওয়ার জন্য পরিচালককে নির্দেশনা দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত সকল চিকিৎসক, নার্সসহ সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান । সেইসঙ্গে, যারা বিদেশ থেকে এসে এই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদেরও ধন্যবাদ জানান।
হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম।
বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম