বৃহস্পতিবার ২৬ জুন সিটি হলের সামনে এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় এরিক অ্যাডামস জানান, তিনি ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করলেও নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
মামদানির জয় ঠেকাতে লড়বেন অ্যাডামস-কুওমো

- আপডেট সময় ০৯:৫৩:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
- / ৩৯ বার পড়া হয়েছে
নিউ ইয়র্ক সিটির আসন্ন মেয়র নির্বাচন এবার ভিন্নমাত্রা পাচ্ছে। ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে জয়ী হয়ে জোহরান মামদানি যখন মূল নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, ঠিক তখনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস এবং সম্ভাব্যভাবে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত নিউ ইয়র্ক সিটির প্রগতিশীল রাজনীতিতে এক নতুন সংঘাত তৈরি করতে পারে।
বৃহস্পতিবার ২৬ জুন সিটি হলের সামনে এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় এরিক অ্যাডামস জানান, তিনি ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করলেও নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তার দাবি, “নিউ ইয়র্কের মানুষ সুরক্ষা, স্থিতিশীলতা এবং অভিজ্ঞ নেতৃত্ব চায়— সেটাই আমি দিতে পারি।”
অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে হেরে গেলেও সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো এক সাক্ষাৎকারে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনিও নির্বাচনে স্বতন্ত্র হয়ে লড়ার চিন্তা করছেন। সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে কুওমো বলেন, “আমি প্রাইমারিতে হার মেনেছি, তবে বহু ডোনার এবং সমর্থক আমাকে প্রার্থী হতে অনুরোধ করছেন।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এরিক অ্যাডামসের স্বতন্ত্র প্রার্থিতা হয়তো মামদানির জন্য সরাসরি বড় হুমকি নয়, কারণ তার জনপ্রিয়তা ও প্রশাসনিক গ্রহণযোগ্যতা অনেকটাই কমেছে। তবে কুওমোর প্রার্থীতা মামদানির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে, কারণ তিনি ডেমোক্র্যাট ভোটারদের এক বড় অংশ বিভক্ত করে ফেলতে পারেন।
বিশ্লেষক জেমস হ্যান্ডলার বলছেন, “মামদানি মূলত যুব সমাজ, প্রগতিশীল ভোটার ও প্রবাসী কমিউনিটির জোরালো সমর্থন নিয়ে এগোচ্ছেন। কিন্তু কুওমো স্বতন্ত্র হলে মূলধারার ডেমোক্র্যাট ভোটারদের একটি অংশ তার দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে, ফলে মামদানির বিজয় অনিশ্চিত হয়ে যাবে।”
জোহরান মামদানি, একজন প্রগতিশীল সোশ্যালিস্ট এবং নিউ ইয়র্কের জনপ্রিয় অ্যাসেম্বলি সদস্য, তার প্রচারে সামাজিক ন্যায়বিচার, ফ্রি ট্রান্সপোর্ট, ভাড়াবাড়ির সংকট নিরসন এবং পুলিশ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো সামনে এনেছেন। তার ক্যাম্পেইনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “২৪ জুন প্রাইমারিতে যেভাবে জনগণ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, ৪ নভেম্বরও সেই জোয়ার বজায় থাকবে।”
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, মামদানির বিরুদ্ধে সমন্বিত অপপ্রচারও তত বাড়বে। এরই মধ্যে কিছু কর্পোরেট গ্রুপ ও প্রো-পুলিশ লবি তাকে “অবাস্তববাদী” প্রার্থী হিসেবে চিত্রিত করতে শুরু করেছে।
যদিও রিপাবলিকান পার্টির নিজস্ব প্রার্থীও নির্বাচনে আছেন, তবে তাদের সমর্থন তুলনামূলক দুর্বল। এখন প্রশ্ন উঠেছে, রিপাবলিকান ভোটারদের ভোট কোথায় যাবে? অনেকেই ধারণা করছেন, এই ভোটের বড় অংশ কুওমো বা অ্যাডামসের দিকে যেতে পারে, কারণ তারা মামদানির তুলনায় তুলনামূলক ‘মধ্যপন্থী’ হিসেবে বিবেচিত।
নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচন এখন আর শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়— এটা হয়ে উঠেছে প্রগতিশীল বনাম পুরনো ব্যবস্থার মুখোমুখি সংঘর্ষ। জোহরান মামদানি যদি তার গণভিত্তি ধরে রাখতে পারেন এবং বিভক্ত ভোটের ফাঁদ এড়িয়ে যেতে পারেন, তবে এই নির্বাচনের ফলাফল হতে পারে ঐতিহাসিক।
সূত্র : সিবিএস নিউজ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম