মার্কিন শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স নাটালি বেকার বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কতটা শক্তিশালী, এই এমওইউ তা আবারও প্রমাণ করল। এর সুফল দুই দেশই পাবে।”
মার্কিন কোম্পানির সঙ্গে ৫০ কোটি ডলারের খনিজ চুক্তি পাকিস্তানের

- আপডেট সময় ১১:০৮:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৬ বার পড়া হয়েছে
বাড়তি শুল্কের চাপ এড়াতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে করা চুক্তির ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ইউএস স্ট্র্যাটেজিক মেটালসের (ইউএসএসএম) সঙ্গে ৫০ কোটি ডলারের একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের পত্রিকা ডন মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে লিখেছে, মিজৌরিভিত্তিক ইউএসএসএম মূলত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উৎপাদন ও রিসাইক্লংয়ের কাজ করে থাকে। মার্কিন জ্বালানি বিভাগ এসব খনিজকে উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি ও জ্বালানি উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য বলে চিহ্নিত করেছে।
কোম্পানির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ইউএসএসএম পুরনো লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি থেকে গুরুত্বপূর্ণ ধাতু সংগ্রহ, পাশাপাশি কোবাল্ট, নিকেল ও তামার খনন কাজে দক্ষ।
পাকিস্তানে মার্কিন দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি চিফ অব মিশন জ্যাক হারকেনরাইডার ইউএসএসএম এর প্রতিনিধিদলকে নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ফ্রন্টিয়ার ওয়ার্কস অর্গানাইজেশনের সঙ্গে ওই এমওইউ সই করেন।
মার্কিন শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স নাটালি বেকার বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কতটা শক্তিশালী, এই এমওইউ তা আবারও প্রমাণ করল। এর সুফল দুই দেশই পাবে।”
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই ধরনের চুক্তিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে, কারণ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।
“আমরা আশা করি, আরও অনেক মার্কিন কোম্পানি ভবিষ্যতে পাকিস্তানের খনিজ শিল্পে অংশীদারত্ব গড়ে তুলবে।”
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইউএসএসএম প্রতিনিধি দল খনি শিল্পের প্রসার, খনিজ সম্পদের মূল্য সংযোজনের সম্ভাবনা এবং সহায়ক অবকাঠামো উন্নয়নের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে এসেছে।
“প্রতিনিধিদল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, সেনাপ্রধান, জ্বালানিমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছে। তাদের জানানো হয়েছে, তামা, স্বর্ণ ও ‘রেয়ার আর্থ’ উপাদানের বিপুল মজুদ রয়েছে পাকিস্তানের।
বিবৃতিতে দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা বলা হয়েছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, বিশেষ করে ‘রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস’ এর উন্নয়ন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের বিষয়ে; অন্যটি লজিস্টিকস সেবার বিষয়ে।
পাকিস্তানের ন্যাশনাল লজিস্টিকস করপোরেশন এবং বিশ্বখ্যাত ইঞ্জিনিয়ারিং ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠান মোটা-এঞ্জিল গ্রুপের মধ্যে দ্বিতীয় সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষর হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, মোটা-এঞ্জিল পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্ব গড়তে চায়, যাতে তাদের বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যায় এবং স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থান, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে লাভজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
ডন লিখেছে, এ চুক্তির আওতায় পাকিস্তান থেকে শিগগিরই অ্যান্টিমনি, তামা, স্বর্ণ, টাংস্টেন ও‘রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস’ রপ্তানি শুরু হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চুক্তির প্রথম ধাপে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ খাতে প্রায় ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে ইউএসএসএম।
গত কয়েক মাসে ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বেশ সফলতা দেখিয়েছে পাকিস্তান সরকার।
গত জুলাইয়ে বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তানি পণ্যের ওপর মার্কিন সম্পূরক শুল্কের পরিমাণ ২৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৯ শতাংশে নামাতে সক্ষম হয় ইসলামাবাদ।
সে সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে এমন এক চুক্তিতে পৌঁছেছে, যা ইসলামাবাদকে তাদের বিশাল তেলসম্পদ উন্নয়নে মার্কিন সহযোগিতা পাওয়ার সুযোগ করে দেবে।
মিজানুর রহমান খান – বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম