০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
“আমরা কোনো অবস্থাতেই চিকিৎসা সেবায় ‘কোয়ালিটির’ ব্যাপারে আপস করব না,”

মেডিকেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘মানসম্মত না হলে’ ভর্তি বন্ধ: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ১১:৫১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ২৬ বার পড়া হয়েছে

 

দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো গুণগত মান ও অবস্থান ধরে রাখতে না পারলে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধের কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।

সরকার গুণগত মানের ব্যাপারে আপস করবে না মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, “তাই আমরা সরকারি-বেসরকারি এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে একটি ‘ম্যাট্রিক্স’ করছি। যেসব প্রতিষ্ঠান ‘ম্যাট্রিক্সের’ এর নিচে পড়ে যাবে, সেসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করা হবে। শিক্ষার্থীদের অন্য প্রতিষ্ঠানে মার্জ করা হবে।

“ওইসব প্রতিষ্ঠান তারপরেও কোয়ালিটি অর্জন করতে না পারে, তাহলে সেসব প্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হবে। কেননা আমরা কোনো অবস্থাতেই চিকিৎসা সেবায় ‘কোয়ালিটির’ ব্যাপারে আপস করব না।”

চট্টগ্রাম মা ও শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের পরিচালনা পর্ষদ এবং বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।

মানসম্মত চিকিৎসক তৈরির জন্য মানসম্মত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

“আমাদের চাওয়া সাধারণ মানুষ যেন মানসম্মত চিকিৎসা পায়। ‘কোয়ালিটি’ ডাক্তার তৈরির পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানে ‘মানবিক ডাক্তার’ তৈরি করতে হবে,” বলেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের সরকারি পর্যায়ে ৩৭টি ও বেসরকারি পর্যায়ে ৬৭টি মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান মানসম্মত নয়। তাদের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, ল্যাব ও মানসম্মত শিক্ষক নেই। তাই এসব প্রতিষ্ঠান থেকে দক্ষ ডাক্তার বের হতে পারছে না।”

 

‘সাড়ে ৩ হাজার ডাক্তার নিয়োগ’

স্বাধীনতার পর ঢাকার বাইরে বড় কোনো বিশেষায়িত হাসপাতাল গড়ে উঠেনি বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “চক্ষু, নিউরো ও আর্থোপেডিক সবকিছুই ঢাকা কেন্দ্রিক। অথচ বড় শহর হিসেবে চট্টগ্রামে এসব জাতীয় প্রতিষ্ঠান হওয়ার কথা। কী কারণে হয়নি এসব সকলে জানে।

“চট্টগ্রাম মেডিকেল, জেনারেল হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও আধুনিক ল্যাবের অভাব রয়েছে। সুযোগ সুবিধা অপর্যাপ্ত। শুধু সরকারি পর্যায়ে ডাক্তারের সংকট রয়েছে ১০ হাজারের মত। ১২ হাজারের বেশি নার্সের সংকট রয়েছে।”

সরকারি হাসপাতালে সেবার পাশাপাশি কিছু ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হলেও অনেক ওষুধ ও ল্যাব সুবিধা রোগীদের বিনামূল্যে দিতে না পারার কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “এটা লজ্জার ব্যাপার। আশার কথা হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার ডাক্তার নিয়োগের ব্যবস্থা হচ্ছে। পাশাপাশি সাড়ে তিন হাজার নার্সও নিয়োগ দেওয়া হবে। ফলে ডাক্তার নার্স সংকট অনেকটা কেটে যাবে।”

 

‘নার্স ও কেয়ারগিভার নেবে জাপান’

উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, “কিছুদিন পূর্বে জাপানের একটি টিম আমার কাছে এসেছিল। তারা আমাদের থেকে নার্স ও কেয়ারগিভার নিতে চায়। এজন্য তারা আমাদের হাসপাতালে সেসব বিষয়ে টেকনিক্যাল প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।

“সবকিছু জাপান করবে, আমরা শুধু তাদের সাপোর্ট দিব। এক বছর মেয়াদে তারা নার্স ও কেয়ারগিভারদের লেভেল থ্রি পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে জাপানে নিয়ে যাবে। এখনও চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দেবে। পুরুষ ও মহিলা কেয়ারগিভার আধা-আধি নেবে।”

তিনি বলেন, “নার্স নিয়োগে বড় বাধা হচ্ছে ভাষা। এজন্য নার্সদের ইংরেজি ভাষা ভালোভাবে শেখানো হবে। পাশাপাশি জাপানি ভাষাও শেখানো হবে।”

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি সৈয়দ মোর্শেদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক সেখ ফজলে রাব্বি, সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম, হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সহসভাপতি কামরুন নাহার দস্তগীর, আবদুল মান্নান রানা, যুগ্ম সম্পাদক জাহেদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

 

 

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

“আমরা কোনো অবস্থাতেই চিকিৎসা সেবায় ‘কোয়ালিটির’ ব্যাপারে আপস করব না,”

মেডিকেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘মানসম্মত না হলে’ ভর্তি বন্ধ: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

আপডেট সময় ১১:৫১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো গুণগত মান ও অবস্থান ধরে রাখতে না পারলে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধের কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।

সরকার গুণগত মানের ব্যাপারে আপস করবে না মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, “তাই আমরা সরকারি-বেসরকারি এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে একটি ‘ম্যাট্রিক্স’ করছি। যেসব প্রতিষ্ঠান ‘ম্যাট্রিক্সের’ এর নিচে পড়ে যাবে, সেসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করা হবে। শিক্ষার্থীদের অন্য প্রতিষ্ঠানে মার্জ করা হবে।

“ওইসব প্রতিষ্ঠান তারপরেও কোয়ালিটি অর্জন করতে না পারে, তাহলে সেসব প্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হবে। কেননা আমরা কোনো অবস্থাতেই চিকিৎসা সেবায় ‘কোয়ালিটির’ ব্যাপারে আপস করব না।”

চট্টগ্রাম মা ও শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের পরিচালনা পর্ষদ এবং বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।

মানসম্মত চিকিৎসক তৈরির জন্য মানসম্মত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

“আমাদের চাওয়া সাধারণ মানুষ যেন মানসম্মত চিকিৎসা পায়। ‘কোয়ালিটি’ ডাক্তার তৈরির পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানে ‘মানবিক ডাক্তার’ তৈরি করতে হবে,” বলেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের সরকারি পর্যায়ে ৩৭টি ও বেসরকারি পর্যায়ে ৬৭টি মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান মানসম্মত নয়। তাদের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, ল্যাব ও মানসম্মত শিক্ষক নেই। তাই এসব প্রতিষ্ঠান থেকে দক্ষ ডাক্তার বের হতে পারছে না।”

 

‘সাড়ে ৩ হাজার ডাক্তার নিয়োগ’

স্বাধীনতার পর ঢাকার বাইরে বড় কোনো বিশেষায়িত হাসপাতাল গড়ে উঠেনি বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “চক্ষু, নিউরো ও আর্থোপেডিক সবকিছুই ঢাকা কেন্দ্রিক। অথচ বড় শহর হিসেবে চট্টগ্রামে এসব জাতীয় প্রতিষ্ঠান হওয়ার কথা। কী কারণে হয়নি এসব সকলে জানে।

“চট্টগ্রাম মেডিকেল, জেনারেল হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও আধুনিক ল্যাবের অভাব রয়েছে। সুযোগ সুবিধা অপর্যাপ্ত। শুধু সরকারি পর্যায়ে ডাক্তারের সংকট রয়েছে ১০ হাজারের মত। ১২ হাজারের বেশি নার্সের সংকট রয়েছে।”

সরকারি হাসপাতালে সেবার পাশাপাশি কিছু ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হলেও অনেক ওষুধ ও ল্যাব সুবিধা রোগীদের বিনামূল্যে দিতে না পারার কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “এটা লজ্জার ব্যাপার। আশার কথা হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার ডাক্তার নিয়োগের ব্যবস্থা হচ্ছে। পাশাপাশি সাড়ে তিন হাজার নার্সও নিয়োগ দেওয়া হবে। ফলে ডাক্তার নার্স সংকট অনেকটা কেটে যাবে।”

 

‘নার্স ও কেয়ারগিভার নেবে জাপান’

উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, “কিছুদিন পূর্বে জাপানের একটি টিম আমার কাছে এসেছিল। তারা আমাদের থেকে নার্স ও কেয়ারগিভার নিতে চায়। এজন্য তারা আমাদের হাসপাতালে সেসব বিষয়ে টেকনিক্যাল প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।

“সবকিছু জাপান করবে, আমরা শুধু তাদের সাপোর্ট দিব। এক বছর মেয়াদে তারা নার্স ও কেয়ারগিভারদের লেভেল থ্রি পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে জাপানে নিয়ে যাবে। এখনও চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দেবে। পুরুষ ও মহিলা কেয়ারগিভার আধা-আধি নেবে।”

তিনি বলেন, “নার্স নিয়োগে বড় বাধা হচ্ছে ভাষা। এজন্য নার্সদের ইংরেজি ভাষা ভালোভাবে শেখানো হবে। পাশাপাশি জাপানি ভাষাও শেখানো হবে।”

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি সৈয়দ মোর্শেদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক সেখ ফজলে রাব্বি, সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম, হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সহসভাপতি কামরুন নাহার দস্তগীর, আবদুল মান্নান রানা, যুগ্ম সম্পাদক জাহেদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

 

 

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম