সোমবার রানি এলিজাবেথের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। এদিন গুরুতর অসুস্থ শিশুদের জন্য বাৎসরিক এক দাতব্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হ্যারি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।
যুক্তরাজ্যে ফিরলেন প্রিন্স হ্যারি, বাবা চার্লসের মুখোমুখি কি হবেন ছেলে?

- আপডেট সময় ১২:৪৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৩১ বার পড়া হয়েছে
যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে কি দেখা করবেন রাজপরিবারের ছোট ছেলে হ্যারি? এ নিয়ে গুঞ্জনের মাঝেই প্রিন্স হ্যারি যুক্তরাজ্যে ফিরেছেন।
রাজপরিবার ছেড়ে যাওয়া হ্যারি আগেই আবার পরিবারের সঙ্গে এক হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে প্রায় ২০ মাসের দ্বিধাদ্বন্দ্বের পর এই প্রথম হ্যারি এ সপ্তাহে যুক্তরাজ্যে ফিরলেন।
সোমবার হ্যারির দাদি রানি এলিজাবেথের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। এদিন গুরুতর অসুস্থ শিশুদের জন্য এক বাৎসরিক দাতব্য অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন হ্যারি।
হ্যারি দীর্ঘদিন ধরেই এই দাতব্য কর্মসূচির সমর্থক। মূলত এই কর্মসূচির জন্যই যুক্তরাজ্যে গেছেন তিনি।
২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের দায়িত্ব ছেড়ে স্ত্রী মেগানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়েছিলেন প্রিন্স হ্যারি। ক্যালিফর্নিয়ায় থাকতে শুরু করেন তারা।
হ্যারি যুক্তরাষ্ট্রের মডেল ও অভিনেত্রী মেগান মার্কলকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই অশান্তি লেগে ছিল রাজপরিবারে।
রাজপরিবারের অংশ হলেও, শ্বেতাঙ্গ না হওয়ায় মেগানকে পরিবারের সদস্য হিসাবে গণ্য করা হয়নি বলে অভিযোগ ছিল হ্যারির। এ পরিস্থিতিতেই ব্রিটিশ রাজপরিবার থেকে তাদের বেরিয়ে যাওয়া।
এরপর রাজপরিবার ছেড়ে যাওয়ার কারণে হ্যারির নিরাপত্তায় কিছু কাঁটছাঁট করা নিয়েও বিতর্ক দানা বাঁধে এবং বিষয়টি মামলায় গড়ায়।
তবে কয়েকমাস আগে বিবিসি-র সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন হ্যারি। বলেছিলেন, তিনি আর কোনও আইনি লড়াই চান না।
রাজপরিবারে ফিরতে চান। ক্যান্সার আক্রান্ত রাজা তৃতীয় চার্লস এর স্বাস্থ্য নিয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করে হ্যারি বলেছিলেন, বাবা কতদিন বাঁচবেন তাও তিনি জানেন না।
বর্তমানে চার্লসের চিকিৎসা চলছে। বেশ কিছুদিন আগে চার্লস ব্যক্তিগত এক বার্তায় তার ক্যান্সারের অভিজ্ঞতা জানিয়েছিলেন। এরপরই বাবাকে নিয়ে ওই কথা বলেছিলেন প্রিন্স হ্যারি।
বাবাকে নিয়ে হ্যারির মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরেই তাদের সম্ভাব্য সাক্ষাৎ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।
এখন হ্যারি যুক্তরাজ্যে যাওয়ার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো মনে করছে, তার এই ভ্রমণ ৭৬ বছর বয়সী চার্লসের সঙ্গে হ্যারির সাক্ষাতের পথ প্রশস্ত করতে পারে। রাজপরিবারের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব ঘোচাতেও সহায়ক হতে পারে হ্যারির এই দেশে ফেরা।
‘পিপ্ল’ সাময়িকীতে ব্রিটিশ রাজপরিবারের খবর নিয়ে কাজ করা সংবাদদাতা সাইমন পেরি বলেন,“হ্যারি তার বাবার সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলে কথাবার্তা ক্রমশ বাড়ছে।”
যদিও বাবা ও ছেলে মুখোমুখি সাক্ষাৎ করবেন কিনা, তা নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। তবে পেরির কথায়, “চার্লস এবং হ্যারির মধ্যে ভৌগলিক দূরত্ব যখন কম থাকবে, যখন তারা এক দেশে থাকবেন, তখন তাদের মধ্যে কথা হবে। তারা একে অপরের কাছাকাছিও আসতে পারেন।”
তবে বাবা ও ছেলের সাক্ষাতের সম্ভাবনার জল্পনা নিয়ে মুখ খোলেননি প্রিন্স হ্যারির মুখপাত্র। অন্যদিকে, ব্রিটিশ রাজপরিবারও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। বাকিংহাম প্যালেস বলেছে, তারা রাজপরিবারের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কখনও বাইরে আলোচনা করে না।
রাজা তৃতীয় চার্লস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পর পরই গত বছর ফেব্রুয়ারিতে বাবার সঙ্গে দেখা করেছিলেন হ্যারি। তারপর থেকে বাবা-ছেলের আর দেখা হয়নি।
রাজপরিবার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এবং নিজের আত্মজীবনীগ্রন্থ ‘স্পেয়ার’-এ রাজপরিবারের সমালোচনা করে এসেছেন হ্যারি।
কখনও বাবা রাজা তৃতীয় চার্লস, কখনও ভাই প্রিন্স উইলিয়ামকে নিয়ে কড়া মন্তব্যও করেছেন তিনি। তবে গত মে মাসে বিবিসি-তে হ্যারির কথোপকথনের পর থেকেই বাবার সঙ্গে তার দেখা করার সম্ভাবনা নিয়ে গুঞ্জন বাড়তে থাকে।
পরে গত জুলাই মাসে চার্লসের যোগাযোগ দপ্তরের প্রধান এবং হ্যারির মিডিয়া প্রতিনিধিদের একটি গোপন বৈঠকের ছবি প্রকাশ্যে আসে।
অনেকেই মনে করছিলেন, হ্যারির রাজপরিবারে ফেরার পথে তা প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে। যদিও এ বিষয়ে এখনও প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেনি কোনো পক্ষই।
মিজানুর রহমান খান – বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম