দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর।
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত: তদন্ত প্রতিবেদনে মিলেছে সত্যতা

- আপডেট সময় ০১:৩১:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৩ বার পড়া হয়েছে
প্রায় দেড় বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে নিজের বাসায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশি তরুণ উইন রোজারিও (১৯)। এ ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর।
পাশাপাশি পুলিশের কর্মকাণ্ড তদারকি সংস্থা ‘সিভিলিয়ান কমপ্লেইন রিভিউ বোর্ড’ (সিসিআরবি) অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা স্যালভেতর এ্যালোঙ্গি ও ম্যাথিউ সিয়ানফ্রোকোর বিরুদ্ধে অসদাচরণের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
বুধবার প্রকাশিত সিসিআরবির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, “মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষের সঙ্গে আচরণের যে নীতি অনুসরণ করা উচিত, তা এ দুই কর্মকর্তা মানেননি। বরং তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এবং নিষ্ঠুর আচরণ করেছেন।”
গত বছর ২৭ মার্চ নিউ ইয়র্কের ওজোনপার্কে নিজ বাসায় নিহত হন উইন রোজারিও। পরিবার জানায়, মানসিকভাবে অসুস্থ উইন অস্বাভাবিক আচরণ করলে জরুরি সেবার জন্য ৯১১-এ ফোন করা হয়। পরে দুই পুলিশ কর্মকর্তা বাসায় প্রবেশ করলে উইন কাপড় কাটার কাঁচি হাতে নিয়ে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
উইনের মা নটেন ইভা কোস্টা অনুরোধ করেন গুলি না চালাতে। ছোট ভাই উৎস রোজারিওও মিনতি করেন। তবুও পুলিশ গুলি চালায় এবং উপর্যুপরি গুলিতে উইন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তারপরও তার বুকে আরও চারটি গুলি করা হয়।
সিসিআরবি জানায়, পুলিশের বডি ক্যামেরার ফুটেজে এই ঘটনাগুলো স্পষ্ট ধরা পড়েছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, “অন্তত পাঁচটি বুলেট উইনের শরীরে বিদ্ধ হয়। এজন্য দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হতে পারে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশের হাতে।”
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উইনের মা নটেন ইভা কোস্টা বলেন, “অন্তত এখন আমরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাচ্ছি যে উইনের বাঁচার অধিকার ছিল, তার জীবনেরও মূল্য ছিল। অথচ পুলিশ অফিসার দুজন ভয়ঙ্কর দুর্বৃত্তের মতোই আচরণ করেছেন।”
প্রায় তিন মাস আগে উইনের পরিবার ফেডারেল কোর্টে মামলা দায়ের করে। এতে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করা হয়।
পরিবারের পক্ষে অ্যাটর্নি লুনা দ্রুবি বলেন, “সিসিআরবির প্রতিবেদন পুলিশি আচরণকে ন্যায়নিষ্ঠ করার পথে প্রথম পদক্ষেপ। মানসিক বিকারগ্রস্তদের সহায়তায় সশস্ত্র পুলিশ না পাঠিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষিত টিম পাঠানোর বিধি জরুরি।”
উইনের মা ইভা কোস্টা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “আমরা বিস্ময়ে দেখছি সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস এবং পুলিশ কমিশনারের নির্লিপ্ততা। এমনকি স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশা জেমসও এখনো পর্যন্ত ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের উদ্যোগ নেননি।”
ইভা কোস্টা জানান, ঘাতক দুই কর্মকর্তাকে অবিলম্বে বরখাস্ত ও আদালতে সোপর্দ না করা পর্যন্ত তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন। “আর কোনো মায়ের বুক খালি হোক, সেটা চাই না”, বলেন তিনি।
নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম