১০:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
২০২২ সালে ইউক্রেইনে রাশিয়ার সর্বাত্মক সামরিক অভিযান শুরুর পর এখন মস্কোর অগ্রগতি ঠেকাতে কিইভকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

যুদ্ধক্ষেত্রে বিপর্যস্ত ইউক্রেইন সরছে মাইন নিষিদ্ধকরণ চুক্তি থেকে

মিজানুর রহমান খান - বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৬:০৭:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
  • / ২৮ বার পড়া হয়েছে

 

স্থলমাইনে বাম পায়ের বেশিরভাগ অংশ হারানো ২৬ বছর বয়সী ওলেকসি ছয় মাস ধরে জটিল এক পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। দেহে এমন গুরুতর আঘাত সত্ত্বেও ইউক্রেইনের এই সেনা মনে করেন, অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার যে আন্তর্জাতিক চুক্তি আছে, তা থেকে বেরিয়ে আসার অধিকার কিইভের রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদের নতুন চালান পেতে জটিলতা ও যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন সেনা রিক্রুট করতে না পেরে কিইভ শেষমেষ গত ২৯ জুন ‘অটোয়া কনভেনশন’ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেয়।

এখন নিজেদের ভূখণ্ডে স্থলমাইন পেতে রাশিয়ার অগ্রগতি আগের তুলনায় শ্লথ করা যাবে বলে আশা একাধিক সামরিক বিশ্লেষক ও ইউক্রেইনের এক ইউনিট কমান্ডারের। ২০২২ সালে ইউক্রেইনে রাশিয়ার সর্বাত্মক সামরিক অভিযান শুরুর পর এখন মস্কোর অগ্রগতি ঠেকাতে কিইভকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

“রাশিয়া কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তির ধার ধারেনা, তাহলে আমরা কেন মানবো? আমাদের এটা করতে হবে। কারণ, যদি আমরা মাইন পাততে পারি, তাহলে ভূখণ্ড হাতছাড়া না হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে,” কিইভে আহত সেনাদের একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসা নেওয়া ওলেকসি রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন।

ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনীর নির্দেশনা অনুযায়ী কেবল নামের প্রথম অংশই প্রকাশ করেছেন তিনি, পুরো নাম বলেননি।

রাশিয়া ‘অটোয়া চুক্তিতে’ স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহার, উৎপাদন, মজুদ এবং স্থানান্তর করতে পারে না।

মস্কো যুদ্ধক্ষেত্রে বিস্তৃত আকারে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহার করে চলেছে বলে দাবি একাধিক সামরিক বিশ্লেষক, মানবাধিকার কর্মী ও ইউক্রেইনীয় সেনাদের।

এ প্রসঙ্গে রয়টার্স মন্তব্য চাইলেও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সাড়া দেয়নি। ইউক্রেইনে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহারের কথা কখনোই নিশ্চিত করেনি মস্কো। তবে তাদের কর্মকর্তারা বারবারই ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে এ ধরনের স্থলমাইন ব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন।

গত নভেম্বরেই যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেইনকে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিল বলে রয়টার্স আগেই জানিয়েছিল।

সেসময় মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ইউক্রেইন যে তাদের ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের মাইন ব্যবহার করবে তা প্রত্যাশিত, তবে এসব মাইন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ব্যবহার হবে না বলে কিইভ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

২০১৪ সালে নেওয়া ক্রাইমিয়াসহ ইউক্রেইনর এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড এখন রাশিয়ার দখলে।

এ ধরনের মাইন এরই মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, হলে তার কার্যকারিতা কেমন এবং অটোয়া কনভেনশন থেকে বের হওয়ার ঘোষণায় যে সমালোচনা হচ্ছে, তা নিয়ে মন্তব্য চাইলেও ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাইন অপসারণ ইউনিটের হিসাব অনুযায়ী, ইউক্রেইনের প্রায় এক-চতুর্থাংশ এলাকা এখন মাইন ও অবিস্ফোরিত গোলার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

যুদ্ধক্ষেত্র সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর পাশাপাশি রাশিয়ার ভেতরকার কুর্স্ক অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকাও ছোট ছোট বিস্ফোরক পদার্থে পরিপূর্ণ, যেগুলো স্পর্শ, কম্পন বা তারের সাহায্যে পাতা ফাঁদে বিস্ফোরিত হয়।

ইউক্রেইন যুদ্ধক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ অ্যান্টি-ভেহিকল স্থলমাইন ব্যবহার করেছে। এই ধরনের মাইন ব্যবহারে অটোয়া কনভেনশনে বাধা নেই।

তিন সামরিক বিশ্লেষকের মতে, রাশিয়া এখন যুদ্ধক্ষেত্র ছোট ছোট আক্রমণকারী দল পাঠানোর যে কৌশল নিয়েছে, কখনো কখনো আক্রমণকারীরা মোটরবাইকও ব্যবহার করে, তাতে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহার বেশ কাজে দিতে পারে। এই ছোট দলগুলোকে সামলাতে অন্য কিছু খুব একটা কাজে দিচ্ছে না।

 

রাশিয়ার কুর্স্কে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইনে বাম পায়ের সিংহভাগ অংশ হারানো ২৬ বছর বয়সী ইউক্রেইনীয় ওলেকসি। ছবি: রয়টার্স

 

“যখন যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের পর্যাপ্ত পদাতিক সেনা নেই, এ ধরনের মাইনের সাহায্যে বাধা তৈরি করা গেলে তা আমাদের প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করবে, তখন আমাদের কেবল ড্রোন বা কামানের গোলার ওপর নির্ভর করতে হবে না,” বলেছেন ইউক্রেইনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষক মাইকোলা বিয়েলিসকোভ।

ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর পোকরোভস্কের কাছে নিয়োজিত ৫৯তম ব্রিগেডের বোম্ব স্কোয়াড কোম্পানির এক কমান্ডার বলেছেন, একটি বড় ঘূর্ণায়মান ড্রোন একবারে ৭০টি পর্যন্ত অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন স্থাপন করতে পারে।

“এই ড্রোনগুলো দূরদূরান্তে মাইন পেঁতে দিতে পারে। তাতে আমাদের অবস্থানে পৌঁছানোর আগেই শত্রুদের মারাত্মক ক্ষতি হবে,” বলেছেন ওই কমান্ডার, যুদ্ধক্ষেত্রে যিনি ভোরন নাম ব্যবহার করছেন।

ইউক্রেইন এরই মধ্যে যুদ্ধক্ষেত্রে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহার করেছে কিনা সে সম্বন্ধে কিছু বলেননি তিনি।

ইউক্রেইন যখন রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলের খানিকটা দখলে নিয়েছিল, তখন সেখানে এক টুকরো বনাঞ্চলের প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত থাকা অবস্থায় মাইনের কবলে পড়েছিলেন ওলেকসি। মাইনটি কাদের পোঁতা সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।

“আমি পড়ে যাই এবং দেখি পা-টা এখনো আছে, কিন্তু ভীষণভাবে মুচড়েছে। যন্ত্রণা এতটাই তীব্র ছিল যে আমি চিৎকার করে সাহায্য চাইতে থাকি,” বলেছেন তিনি।

পরে নিজের শরীরকে কোনোমতে টেনে নিয়ে যান সঙ্গীদের কাছে, তার ওই পদক্ষেপে হয়তো সঙ্গীদের জীবনও বেঁচে যায়। তার পা পরে কেটে ফেলতে হয়। তারপরও তার মত, রাশিয়ার অগ্রগতি থামাতে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহার করা দরকার। তাতে যদিও ঝুঁকি আছে, তবে ভূখণ্ড রক্ষায় এটি কার্যকর হতে পারে।

“আমরা পরে মাইন অপসারণ করতে পারবো, এটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া, হয়তো অনেক অনেক বছর লাগবে। কিন্তু, ভূখণ্ড তো হাতছাড়া হচ্ছে না,” বলেছেন তিনি।

সূত্র : রয়টার্স 

 

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

২০২২ সালে ইউক্রেইনে রাশিয়ার সর্বাত্মক সামরিক অভিযান শুরুর পর এখন মস্কোর অগ্রগতি ঠেকাতে কিইভকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

যুদ্ধক্ষেত্রে বিপর্যস্ত ইউক্রেইন সরছে মাইন নিষিদ্ধকরণ চুক্তি থেকে

আপডেট সময় ০৬:০৭:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

 

স্থলমাইনে বাম পায়ের বেশিরভাগ অংশ হারানো ২৬ বছর বয়সী ওলেকসি ছয় মাস ধরে জটিল এক পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। দেহে এমন গুরুতর আঘাত সত্ত্বেও ইউক্রেইনের এই সেনা মনে করেন, অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার যে আন্তর্জাতিক চুক্তি আছে, তা থেকে বেরিয়ে আসার অধিকার কিইভের রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদের নতুন চালান পেতে জটিলতা ও যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন সেনা রিক্রুট করতে না পেরে কিইভ শেষমেষ গত ২৯ জুন ‘অটোয়া কনভেনশন’ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেয়।

এখন নিজেদের ভূখণ্ডে স্থলমাইন পেতে রাশিয়ার অগ্রগতি আগের তুলনায় শ্লথ করা যাবে বলে আশা একাধিক সামরিক বিশ্লেষক ও ইউক্রেইনের এক ইউনিট কমান্ডারের। ২০২২ সালে ইউক্রেইনে রাশিয়ার সর্বাত্মক সামরিক অভিযান শুরুর পর এখন মস্কোর অগ্রগতি ঠেকাতে কিইভকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

“রাশিয়া কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তির ধার ধারেনা, তাহলে আমরা কেন মানবো? আমাদের এটা করতে হবে। কারণ, যদি আমরা মাইন পাততে পারি, তাহলে ভূখণ্ড হাতছাড়া না হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে,” কিইভে আহত সেনাদের একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসা নেওয়া ওলেকসি রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন।

ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনীর নির্দেশনা অনুযায়ী কেবল নামের প্রথম অংশই প্রকাশ করেছেন তিনি, পুরো নাম বলেননি।

রাশিয়া ‘অটোয়া চুক্তিতে’ স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহার, উৎপাদন, মজুদ এবং স্থানান্তর করতে পারে না।

মস্কো যুদ্ধক্ষেত্রে বিস্তৃত আকারে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহার করে চলেছে বলে দাবি একাধিক সামরিক বিশ্লেষক, মানবাধিকার কর্মী ও ইউক্রেইনীয় সেনাদের।

এ প্রসঙ্গে রয়টার্স মন্তব্য চাইলেও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সাড়া দেয়নি। ইউক্রেইনে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহারের কথা কখনোই নিশ্চিত করেনি মস্কো। তবে তাদের কর্মকর্তারা বারবারই ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে এ ধরনের স্থলমাইন ব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন।

গত নভেম্বরেই যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেইনকে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিল বলে রয়টার্স আগেই জানিয়েছিল।

সেসময় মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ইউক্রেইন যে তাদের ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের মাইন ব্যবহার করবে তা প্রত্যাশিত, তবে এসব মাইন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ব্যবহার হবে না বলে কিইভ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

২০১৪ সালে নেওয়া ক্রাইমিয়াসহ ইউক্রেইনর এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড এখন রাশিয়ার দখলে।

এ ধরনের মাইন এরই মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, হলে তার কার্যকারিতা কেমন এবং অটোয়া কনভেনশন থেকে বের হওয়ার ঘোষণায় যে সমালোচনা হচ্ছে, তা নিয়ে মন্তব্য চাইলেও ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাইন অপসারণ ইউনিটের হিসাব অনুযায়ী, ইউক্রেইনের প্রায় এক-চতুর্থাংশ এলাকা এখন মাইন ও অবিস্ফোরিত গোলার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

যুদ্ধক্ষেত্র সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর পাশাপাশি রাশিয়ার ভেতরকার কুর্স্ক অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকাও ছোট ছোট বিস্ফোরক পদার্থে পরিপূর্ণ, যেগুলো স্পর্শ, কম্পন বা তারের সাহায্যে পাতা ফাঁদে বিস্ফোরিত হয়।

ইউক্রেইন যুদ্ধক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ অ্যান্টি-ভেহিকল স্থলমাইন ব্যবহার করেছে। এই ধরনের মাইন ব্যবহারে অটোয়া কনভেনশনে বাধা নেই।

তিন সামরিক বিশ্লেষকের মতে, রাশিয়া এখন যুদ্ধক্ষেত্র ছোট ছোট আক্রমণকারী দল পাঠানোর যে কৌশল নিয়েছে, কখনো কখনো আক্রমণকারীরা মোটরবাইকও ব্যবহার করে, তাতে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহার বেশ কাজে দিতে পারে। এই ছোট দলগুলোকে সামলাতে অন্য কিছু খুব একটা কাজে দিচ্ছে না।

 

রাশিয়ার কুর্স্কে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইনে বাম পায়ের সিংহভাগ অংশ হারানো ২৬ বছর বয়সী ইউক্রেইনীয় ওলেকসি। ছবি: রয়টার্স

 

“যখন যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের পর্যাপ্ত পদাতিক সেনা নেই, এ ধরনের মাইনের সাহায্যে বাধা তৈরি করা গেলে তা আমাদের প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করবে, তখন আমাদের কেবল ড্রোন বা কামানের গোলার ওপর নির্ভর করতে হবে না,” বলেছেন ইউক্রেইনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষক মাইকোলা বিয়েলিসকোভ।

ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর পোকরোভস্কের কাছে নিয়োজিত ৫৯তম ব্রিগেডের বোম্ব স্কোয়াড কোম্পানির এক কমান্ডার বলেছেন, একটি বড় ঘূর্ণায়মান ড্রোন একবারে ৭০টি পর্যন্ত অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন স্থাপন করতে পারে।

“এই ড্রোনগুলো দূরদূরান্তে মাইন পেঁতে দিতে পারে। তাতে আমাদের অবস্থানে পৌঁছানোর আগেই শত্রুদের মারাত্মক ক্ষতি হবে,” বলেছেন ওই কমান্ডার, যুদ্ধক্ষেত্রে যিনি ভোরন নাম ব্যবহার করছেন।

ইউক্রেইন এরই মধ্যে যুদ্ধক্ষেত্রে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহার করেছে কিনা সে সম্বন্ধে কিছু বলেননি তিনি।

ইউক্রেইন যখন রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলের খানিকটা দখলে নিয়েছিল, তখন সেখানে এক টুকরো বনাঞ্চলের প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত থাকা অবস্থায় মাইনের কবলে পড়েছিলেন ওলেকসি। মাইনটি কাদের পোঁতা সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।

“আমি পড়ে যাই এবং দেখি পা-টা এখনো আছে, কিন্তু ভীষণভাবে মুচড়েছে। যন্ত্রণা এতটাই তীব্র ছিল যে আমি চিৎকার করে সাহায্য চাইতে থাকি,” বলেছেন তিনি।

পরে নিজের শরীরকে কোনোমতে টেনে নিয়ে যান সঙ্গীদের কাছে, তার ওই পদক্ষেপে হয়তো সঙ্গীদের জীবনও বেঁচে যায়। তার পা পরে কেটে ফেলতে হয়। তারপরও তার মত, রাশিয়ার অগ্রগতি থামাতে অ্যান্টি-পারসোনেল মাইন ব্যবহার করা দরকার। তাতে যদিও ঝুঁকি আছে, তবে ভূখণ্ড রক্ষায় এটি কার্যকর হতে পারে।

“আমরা পরে মাইন অপসারণ করতে পারবো, এটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া, হয়তো অনেক অনেক বছর লাগবে। কিন্তু, ভূখণ্ড তো হাতছাড়া হচ্ছে না,” বলেছেন তিনি।

সূত্র : রয়টার্স 

 

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম